ঢাকা, সোমবার, ২ জুন ২০২৫, ১৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
আদালতের রায়ে মেয়র, তবু চেয়ারে বসতে পারলেন না ইশরাক

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) নির্বাচনে আদালতের রায়ে বিজয়ী ঘোষিত হলেও শপথ না নেওয়ায় বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে পারেননি। আজ ১ জুন ২০২৫ করপোরেশনের মেয়াদ শেষ হওয়ায় আদালতের রায় পেয়েও তিনি মেয়র হতে পারলেন না। যদি তিনি শপথ নিতেন, তবে আজই হতো তার মেয়র পদের শেষ কর্মদিবস।
মেয়রের মেয়াদ ও আইনি জটিলতা
২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ডিএসসিসি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপস মেয়র নির্বাচিত হন। ২ ফেব্রুয়ারি ফলাফল গেজেট আকারে প্রকাশ হয় এবং ২ জুন করপোরেশনের প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়, যা থেকে আইন অনুযায়ী মেয়াদের গণনা শুরু হয়।
ফলাফলের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে একই বছরের ৩ মার্চ বিএনপি প্রার্থী ইশরাক হোসেন নির্বাচন ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন। দীর্ঘ শুনানির পর চলতি বছরের ২৭ মার্চ ট্রাইব্যুনাল তাপসের বিজয় বাতিল করে ইশরাককে বৈধ মেয়র ঘোষণা করেন এবং নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) নতুন গেজেট প্রকাশের নির্দেশ দেন। এর প্রেক্ষিতে ইসি ২৭ এপ্রিল আগের গেজেট সংশোধন করে তাপসের নামের স্থলে ইশরাক হোসেনের নাম প্রতিস্থাপন করে। কিন্তু তারপরও শপথ গ্রহণ হয়নি।
ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সিটি করপোরেশন আইন অনুযায়ী নির্বাচিত বোর্ডের মেয়াদ প্রথম সভা থেকে পরবর্তী পাঁচ বছর। সেই অনুযায়ী, বর্তমান বোর্ডের মেয়াদ আজ ১ জুন ২০২৫, শেষ হচ্ছে। তারা আরও বলেন, যেহেতু ইশরাকের নামে নতুন কোনো গেজেট হয়নি, আগের গেজেটে কেবল নাম প্রতিস্থাপন করা হয়েছে, তাই তার জন্যও একই মেয়াদ প্রযোজ্য। অর্থাৎ যদি তিনি শপথ নিতেন, তাহলে আজই তার মেয়র পদের কার্যকাল শেষ হতো।
আদালতের রুল ও ইসির অবস্থান
ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণার গেজেট ও রায়কে চ্যালেঞ্জ করে রফিকুল ইসলাম ও মামুনুর রশিদ নামের দুই ব্যক্তি আইনি নোটিশ ও রিট করেন। তারা দাবি করেন, এই রায় যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে তড়িঘড়ি করে দেওয়া হয়েছে এবং গেজেটও অবৈধ। এ বিষয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের হলে ২৭ মার্চের রায় ও ২৭ এপ্রিলের গেজেট কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি চাওয়া হয়। পরে বিষয়টি আপিল বিভাগে উঠলে সর্বোচ্চ আদালত গেজেট স্থগিত না করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের উপর ছেড়ে দেন।
এ বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা এখনো আদালতের রায়ের কপি হাতে পাইনি। কপি পাওয়ার পর আইন পর্যালোচনা করে যথাযথ সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, আদালতের রায়ে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে মেয়র পদে বিজয়ী ঘোষণা করা হলেও তাকে শপথ গ্রহণ ও দায়িত্ব পালনে বিরত রাখার বিষয়টি অন্তর্বর্তী সরকারের একটি রাজনৈতিক কৌশল। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতা গ্রহণের পর এ সরকার নিজেদের একটি নিরপেক্ষ ও সংস্কারবাদী ভাবমূর্তি প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছে। এমন পরিস্থিতিতে পূর্ববর্তী সরকারের সময়কার একটি বিতর্কিত নির্বাচনের ফলাফল আদালতের মাধ্যমে পাল্টে গেলেও সেটিকে তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর না করে আইনি জটিলতা ও রাজনৈতিক সংবেদনশীলতার প্রসঙ্গ টেনে সময়ক্ষেপণ করা হয়েছে বলেও তারা অভিযোগ তুলছেন।
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- বাতিল হচ্ছে ২০ আর্থিক প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স, তালিকায় শেয়ারবাজারের ১৪টি
- ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর ১.৪ বিলিয়ন ডলারের শেয়ার বিক্রির ঘোষণা
- শেয়ারবাজারের ৬৬ কোম্পানির প্রতি বিএসইসি’র কঠোর বার্তা
- গভীর রাতে ঢাবি শিবির সভাপতির ফেসবুক পোস্টে তোলপাড়
- বনানীতে ঢাবির সাবেক ছাত্রীর ম’রদেহ উদ্ধার
- শেয়ারবাজারের ১৮ ব্যাংককে ডিভিডেন্ড না দেওয়ার নির্দেশ
- ঢাবির পীরগাছা উপজেলা সংগঠনের নেতৃত্বে রবিউল ও সৈকত
- ড. ইউনূসকে ‘আক্রমণ’!
- শেয়ারবাজার ধসের দায় চাপছে বিএসইসি নেতৃত্বের ওপর
- জেড ক্যাটাগরি ও ন্যুনতম শেয়ারধারণে ব্যর্থ কোম্পানিতে বসছে স্বতন্ত্র পরিচালক
- ঈদের ছুটি নিয়ে নতুন প্রস্তাবনা
- ফাঁস হলো হাসনাত-সার্জিসকে হ-ত্যার ভ'য়ঙ্কর পরিকল্পনা
- মন্দার বাজারে আলো ছড়িয়েছে ২০ শেয়ার
- ঘুরে দাঁড়ানোর পথে দেশের শেয়ারবাজার: দৃশ্যমান হচ্ছে ইতিবাচক পদক্ষেপ
- ভারতে রেড অ্যালার্ট জারি!