ঢাকা, বুধবার, ২৮ মে ২০২৫, ১৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

বিমানবন্দর ইস্যুতে নতুন ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা, বাংলাদেশকে ভারতের  হুঁশিয়ারি

ডুয়া নিউজ- জাতীয়
২০২৫ মে ২৭ ১৯:৪২:২০
বিমানবন্দর ইস্যুতে নতুন ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা, বাংলাদেশকে ভারতের  হুঁশিয়ারি

প্রয়োজনের নিরিখে বহুদিন বন্ধ থাকা লালমনিরহাট বিমানবন্দরটি নতুন করে চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। বিষয়টি দেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বলে জানানো হয়েছে সেনাসদর থেকে। তবে বিমানবন্দরটি পুনরায় সচল হওয়ার খবর ভারতীয় প্রশাসনে উদ্বেগ তৈরি করেছে। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় ভারত তাদের ত্রিপুরা রাজ্যের কৈলাশহরের বহু পুরোনো বিমানঘাঁটি পুনরায় চালুর পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে।

মঙ্গলবার (২৭ মে) এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। গণমাধ্যমটির বিশেষ প্রতিনিধি রত্নদ্বীপ চৌধুরী দাবি করেছেন, বাংলাদেশ চীনের সহযোগিতায় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন লালমনিরহাট বিমানবন্দরটি পুনরায় চালুর পরিকল্পনা করছে।

তবে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এই দাবিকে নাকচ করা হয়েছে। সোমবার সেনাসদরে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে সেনাবাহিনীর মিলিটারি অপারেশন্স অধিদপ্তরের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজিম-উদ-দৌলা জানান, দীর্ঘদিন পরিত্যক্ত থাকা লালমনিরহাট বিমানবন্দরটি প্রয়োজনের ভিত্তিতে সচল করা হচ্ছে। তিনি বলেন, চীনা কোনো সংস্থা এই প্রকল্পে যুক্ত কিনা, সে বিষয়ে তাদের কাছে কোনো তথ্য নেই।

তবুও এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রংপুর বিভাগের এই বিমানবন্দরটি চালু হলে তা ভারতের জন্য কৌশলগত দিক থেকে উদ্বেগের কারণ হতে পারে। কারণ লালমনিরহাট ভারতের অতি গুরুত্বপূর্ণ 'চিকেন নেক' এলাকার খুব কাছাকাছি অবস্থিত। ওই অঞ্চল দিয়েই ভারতের মূল ভূখণ্ড থেকে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ‘সেভেন সিস্টার্স’ রাজ্যগুলোতে যাতায়াত এবং পণ্য পরিবহন হয়।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ভারতের ধারণা, যদি চীনের সহযোগিতায় বিমানবন্দরটি চালু হয়, তবে সেখানে চীনের সামরিক উপস্থিতির আশঙ্কা রয়েছে—যেমন যুদ্ধবিমান, রাডার এবং নজরদারি সরঞ্জাম। এই পরিস্থিতিতে পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় ভারত ত্রিপুরার কৈলাশহর বিমানঘাঁটিকে পুনরায় চালুর সিদ্ধান্ত নিতে পারে। যদিও শুরুতে এটি বেসামরিক কার্যক্রমের জন্য ব্যবহার করা হবে, তবে ভবিষ্যতের সম্ভাব্য সংঘাতে এ ঘাঁটিকে সামরিক কাজে ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত রাখা হবে।

এনডিটিভি আরও দাবি করে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার ভারতের ঘনিষ্ঠ মিত্র ছিল এবং চীনের প্রভাব প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল। তবে ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে তার সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে যে প্রশাসন গঠিত হয়েছে, সেটি ভারতের কাছে কম বন্ধুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত। সেই সঙ্গে ড. ইউনূস চীন ও পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে আগ্রহী বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভারতের সীমান্ত থেকে মাত্র কয়েক কিলোমিটার দূরত্বে লালমনিরহাট বিমানবন্দর পুনরায় চালুর উদ্যোগকে কেন্দ্র করে ভারতীয় প্রশাসনে সতর্কতা সৃষ্টি হয়েছে। এ প্রেক্ষাপটে গত ২৬ মে একটি ভারতীয় প্রতিনিধি দল কৈলাশহর বিমানঘাঁটি পরিদর্শন করে। দলটি বিমানঘাঁটির বর্তমান অবস্থা পর্যালোচনা করে জানিয়েছে, রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে পরবর্তী পদক্ষেপ নির্ধারণ করা হবে।

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত

বিআরইবি চেয়ারম্যানের পদত্যাগ দাবিতে আল্টিমেটাম

বিআরইবি চেয়ারম্যানের পদত্যাগ দাবিতে আল্টিমেটাম

বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (বিআরইবি) চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল এস এম জিয়া-উল-আজিমের অপসারণের দাবিতে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছেন আন্দোলনরত পল্লী বিদ্যুৎ... বিস্তারিত