ঢাকা, বুধবার, ২৮ মে ২০২৫, ১৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

অভিযোগে তোলপাড়, জবাব দিলেন জুলকারনাইন সায়ের

ডুয়া নিউজ- জাতীয়
২০২৫ মে ২৭ ১৩:৪৩:৪৩
অভিযোগে তোলপাড়, জবাব দিলেন জুলকারনাইন সায়ের

সম্প্রতি আলোচনার কেন্দ্রে উঠে এসেছেন আল জাজিরার অনুসন্ধানী সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের। মনোয়ার পাটোয়ারি নামের এক নেটিজেন ফেসবুকে তার বিরুদ্ধে একাধিক চাঞ্চল্যকর অভিযোগ তুলে ধরলে বিষয়টি সামাজিক মাধ্যমে তোলপাড় সৃষ্টি করে। ওই পোস্টে সায়েরের অতীত এবং বর্তমান কার্যকলাপ নিয়ে নানা প্রশ্ন তোলা হয় যা দেশে এবং আন্তর্জাতিক সাংবাদিক মহলেও প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে।

মনোয়ার পাটোয়ারির দাবি, জুলকারনাইন সায়ের যিনি বিভিন্ন সময় নিজেকে সায়ের সামি, তানভীর সাদাত কিংবা জুলকারনাইন সায়ের খান নামেও পরিচয় দেন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিশেষ করে ২০২৩ সালে ইউরো নিউজ হাঙ্গেরিতে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলেছেন।

তিনি আরও অভিযোগ করেন, সায়েরের চারটি বাংলাদেশি পাসপোর্ট রয়েছে এবং তার একটি হাঙ্গেরিয়ান পরিচয়পত্রও আছে। পাশাপাশি বুদাপেস্টে 'কারি হাউস' নামে একটি ভারতীয় রেস্তোরাঁ পরিচালনার আড়ালে সায়ের নাকি অবৈধ কার্যকলাপে জড়িত ছিলেন যা হাঙ্গেরির বিভিন্ন রিপোর্টে উঠে এসেছে।

মনোয়ারের দাবি অনুযায়ী, সায়ের আন্তর্জাতিক অস্ত্র ও মাদক পাচারের সঙ্গে জড়িত থাকতে পারেন। তিনি উল্লেখ করেন, ২০২২ সালের মে মাসে যুক্তরাজ্যে ‘সামস ইনকর্পোরেটেড লিমিটেড’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান গঠন করা হয় যার কার্যক্রম সন্দেহজনক বলে মনে করা হচ্ছে।

আরও একটি গুরুতর অভিযোগ হল ২০১৬ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর বুদাপেস্টে ঘটে যাওয়া একটি বিস্ফোরণের পরিকল্পনা নাকি সায়েরের রেস্তোরাঁতেই চূড়ান্ত হয়েছিল যেখানে দুই পুলিশ কর্মকর্তা গুরুতর আহত হন।

মনোয়ার আরও দাবি করেন সায়েরের ভাই হাঙ্গেরিতে ‘তাজভীর বিয়ার’ নামে একটি বিয়ার কোম্পানি চালান এবং স্থানীয় ভারতীয় দূতাবাসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রাখেন।

এইসব গুরুতর অভিযোগের জবাবে জুলকার নাইন সায়ের সরাসরি প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, “এইসব বিষয় নিয়ে মিথ্যা অপপ্রচার খুবই বিরক্তিকর। আমি যদি হামাসের সাথে কোনো আর্থিক যোগাযোগ রাখতাম, তাহলে অনেকেই জানত। বুদাপেস্টে আমার ব্যবসা ও ভারতীয় রেস্তোরাঁ ছিল, যার কারণে ভারতীয়দের সঙ্গেও ভালো সম্পর্ক ছিল। আমার শ্বশুর সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ার এবং তিনি ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক হতে পারেননি, কিন্তু আমি তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছি—এমন অভিযোগ ভিত্তিহীন।”

সায়ের আরও জানান, মনোয়ার পাটোয়ারি ও তার অনুসারীরা তার বিরুদ্ধে নানা মিথ্যা প্রচারণা চালাচ্ছেন। তিনি বলেন, “আমার শৈশবের ঘটনাবলী এবং আমার পরিবারের বিরুদ্ধে করা সব অভিযোগ ভিত্তিহীন ও মিথ্যা। আমি কখনো কোনো এজেন্সির হয়ে কাজ করিনি।”

মনোয়ার পাটোয়ারি নিজেও পাল্টা কঠোর আক্রমণ করেন এবং সায়েরের বিভিন্ন কার্যকলাপ ও যোগসাজশের দিক থেকে সন্দেহ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “আমরা দেশের স্বার্থে সত্য উদঘাটন করবো এবং কারো ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক স্বার্থের জন্য কখনো মাথা নত করব না।”

এই বিতর্ক নিয়ে সামাজিক ও রাজনৈতিক মহলে আলোচনা প্রবল হচ্ছে। সংবাদমাধ্যম এবং অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলোতে এই দুই পক্ষের বক্তব্য প্রকাশ পাচ্ছে এবং জনগণ বিভিন্ন রকম মতামত প্রদান করছেন।

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত