ঢাকা, শুক্রবার, ৩০ মে ২০২৫, ১৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

এক মাসেও দুই যুবকের মরদেহ ফেরত দেয়নি বিএসএফ

ডুয়া নিউজ- জাতীয়
২০২৫ মে ২৬ ২৩:০৩:৩৪
এক মাসেও দুই যুবকের মরদেহ ফেরত দেয়নি বিএসএফ

ঝিনাইদহের মহেশপুর সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে নিহত দুই যুবকের মরদেহ এক মাস পেরিয়ে গেলেও ফেরত আনতে কোনো অগ্রগতি হয়নি। নিহতদের পরিবার জানায়, বিজিবির কার্যকর পদক্ষেপের অভাবে এখনো মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়নি। এতে পরিবারগুলোতে চলছে তীব্র শোক ও ক্ষোভ।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২৭ এপ্রিল রাতে গোপালপুর গ্রামের হানিফ আলীর ছেলে ও ঢাকায় গাড়ি চালানো ওবাইদুর রহমান কয়েক বন্ধুর সঙ্গে অবৈধভাবে ভারতের দিকে প্রবেশ করেন। ভারতের মধুপুর বিএসএফ ক্যাম্পের সদস্যরা ধাওয়া দিলে অন্যরা পালিয়ে গেলেও ধরা পড়েন ওবাইদুর। পরে গুলির শব্দ শুনতে পান স্থানীয়রা। কিছুক্ষণ পর সীমান্তের ভারতীয় অংশে তার মরদেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়, যা বিএসএফ সদস্যরা নিয়ে যায়। তবে এক মাস পার হলেও মরদেহটি এখনো ফেরত দেয়নি ভারতীয় কর্তৃপক্ষ।

ওবাইদুরের মা নাসিমা খাতুন বলেন, ছেলের মরদেহ ফিরে পেলে তাকে দাফন করে অন্তত শান্তি পেতাম। বিজিবির কাছে অনেকবার গিয়েছি, কিন্তু কোনো লাভ হয়নি।

অন্যদিকে, বাঘাডাঙ্গা গ্রামের ওয়াসিম গত ৬ এপ্রিল ভারতে প্রবেশ করেন কয়েকজনের সঙ্গে। হাবাসপুর বিএসএফ ক্যাম্পের সদস্যদের ধাওয়া খেলে বাকিরা পালিয়ে গেলেও ধরা পড়েন ওয়াসিম। পাঁচ দিন পর, ১১ এপ্রিল সন্ধ্যায় ইছামতি নদীর ভারতীয় অংশে একটি মরদেহ ভাসতে দেখা যায়। স্থানীয়রা নিশ্চিত হন, সেটি ওয়াসিমেরই মরদেহ। পরে বিএসএফ সেটি নিয়ে যায়।

ওয়াসিমের ভাই মেহেদী হাসান জানান, ছবিতে ভাইয়ের মরদেহ চিহ্নিত করে বিজিবিকে জানাই। তারা লিখিত অভিযোগও নেয়। কিন্তু পরে জানায়, তাদের পক্ষে মরদেহ আনা সম্ভব নয়।

ওয়াসিমের মা ফিরোজা খাতুন বলেন, বিজিবি বলছে, পাসপোর্ট-ভিসা করে নিজেরাই ভারতে গিয়ে মরদেহ আনতে হবে। আমরা গরিব মানুষ, এটা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়।

এ ব্যাপারে ৫৮ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল রফিকুল আলম বলেন, বিএসএফ জানিয়েছে ওয়াসিমের মরদেহটি ভারতের পুলিশের কাছে আছে। তারা তার মরদেহটির ময়নাতদন্ত করেছে। ভারতীয় পুলিশের ভাষ্যমতে- মরদেহ নিতে হলে বৈধভাবে ভারতীয় পুলিশের কাছে যেতে হবে। সেখানে গিয়ে উপযুক্ত প্রমাণ ও শনাক্ত শেষে কলকাতাস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে এনওসি নিতে হবে। পরে তাদেরকে ফরেনার রিজিওনাল রেজিস্ট্রেশন অফিসে গিয়ে যাবতীয় কার্যাদি সম্পন্ন করতে হবে। এই বিষয়গুলো ওই দুই পরিবারকে জানানো হয়েছে এবং স্থানীয় প্রশাসনকেও জানানো হয়েছে যাতে তারা মরদেহ ফেরত আনতে সর্বাত্মকভাবে সহযোগিতা করে।

বিজিবির মাধ্যমে মরদেহ ফেরত আনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিএসএফের সঙ্গে অনেকবার পতাকা বৈঠকসহ নানা চেষ্টা করেছি। কিন্তু লাভ হয়নি। বিএসএফ জানিয়েছে,বিষয়টা পুরোপুরি ভারতীয় পুলিশ হ্যান্ডেল করছে। তাদের কিছু করার নেই। সেক্ষেত্রে তারা বলেছে, পরিবারের পক্ষ থেকে বৈধ উপায়ে ভারতে এসে সকল কার্যাদি সম্পন্ন করে মরদেহ ফেরত নিতে হবে।

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত