ঢাকা, সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫, ২ আষাঢ় ১৪৩২
দুই মাসে ৪৮৩ পয়েন্ট হারাল শেয়ারবাজার, লেনদেন নেমেছে ইতিহাসের সর্বনিম্নে

গত দুই মাসে টানা দরপতন ও লেনদেনের রেকর্ড পতনের মধ্যে দিয়ে গেলেও, দেশের শেয়ারবাজারে এখন নতুন করে স্থিতিশীলতার আশা দেখছেন বাজার বিশ্লেষকরা। রাজনৈতিক অস্থিরতা ও আস্থাহীনতার মধ্যে যখন বাজার চরম সংকটে, ঠিক তখনই অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান উপদেষ্টার পাঁচ দফা নির্দেশনা বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে বাজার উন্নয়নে গঠনমূলক পদক্ষেপ নিচ্ছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) তথ্য অনুযায়ী, গত দুই মাসে ডিএসইএক্স সূচক প্রায় ৪৮৩ পয়েন্ট কমেছে, যা বাজারের দুরবস্থার ইঙ্গিত দেয়। ৪ আগস্ট লেনদেন নেমেছিল মাত্র ২০৭ কোটি টাকায়, যা চলতি বছরের সর্বনিম্ন। পরদিন ৫ আগস্ট, ছাত্র আন্দোলনের চাপে ফ্যাসিবাদী সরকারর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও ভারতে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় বাজারে বাড়তি অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়।
পরিস্থিতি মোকাবিলায় ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই শেয়ারবাজারে স্থিতিশীলতা ফেরাতে পদক্ষেপ নিতে শুরু করে। বিশেষ করে সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টা ঘোষিত পাঁচ নির্দেশনাকে কেন্দ্র করে বিএসইসি ও অর্থ মন্ত্রণালয় একযোগে কাজ শুরু করেছে।
এই নির্দেশনাগুলোর মধ্যে রয়েছে—বিদেশি ও রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানের শেয়ার বাজারে ছাড়া, তালিকাভুক্ত ও অ-তালিকাভুক্ত কোম্পানির মধ্যে কর ব্যবধান বৃদ্ধি, বিদেশি বিশেষজ্ঞদের সহায়তায় সংস্কার কার্যক্রম শুরু, বাজারে অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ এবং বড় কোম্পানিগুলোকে ব্যাংকের পরিবর্তে বাজার থেকে অর্থ সংগ্রহে উৎসাহিত করা।
এই পাঁচটি নির্দেশনার বাস্তবায়ন বাজারে আস্থার পুনর্গঠনে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, বর্তমানে যেসব উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, সেগুলোর যথাযথ বাস্তবায়ন হলে বাজারে আস্থা ফিরবে। ডিএসই ও সিএসই কর্তৃপক্ষ সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে এবং নীতিগত সহায়তা চাচ্ছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও বাংলাদেশ ব্যাংকও ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট নির্দেশনা বাস্তবায়নে প্রস্তুতি নিচ্ছে।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাজারে শৃঙ্খলা ফেরাতে যা যা করা দরকার, সরকার এখন সেই পথে হাঁটছে। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে বিনিয়োগকারীরা আশ্বস্ত হবেন এবং বাজার আবার গতি পাবে।
এদিকে, টানা পতনে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীরা এখন সরকারের হস্তক্ষেপে আশার আলো দেখছেন। অনেকে বলছেন, এবার যদি নির্দেশনাগুলো বাস্তবায়নে দৃঢ়তা দেখা যায়, তাহলে বাজার ঘুরে দাঁড়াতে বেশি সময় লাগবে না।
রাজনৈতিক পরিবর্তন ও বাজারে ধাক্কার পর অন্তর্বর্তী সরকার কর্তৃক গৃহীত এই পরিকল্পনাগুলো শুধু বাজারে স্থিতিশীলতা আনবে না, বরং দীর্ঘমেয়াদে একটি স্বচ্ছ ও গতিশীল শেয়ারবাজার গড়ার ভিত্তি তৈরি করবে—এমনটাই প্রত্যাশা সব মহলের।
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- শেয়ারবাজারে বিস্ময়: এক লাখ টাকার শেয়ার ৮০ কোটি!
- ডিভিডেন্ডের উপর উচ্চ কর: শেয়ারবাজারের স্থিতিশীলতা নিয়ে উদ্বেগ
- বদলে গেছে ধারণা, বিস্মিত ইসরায়েল
- শেয়ারবাজারের শর্ত পূরণে ৬০ কোম্পানিকে বিএসইসির আল্টিমেটাম
- মুনাফা থেকে লোকসানে তথ্য প্রযুক্তির দুই কোম্পানি
- মূলধন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত শেয়ারবাজারের ১৩ ব্যাংকের
- শেয়ারবাজারের ১০ ব্যাংকে আমানত বেড়েছে ৩২ হাজার কোটি টাকা
- নীলক্ষেত হোস্টেল থেকে ঢাবির সাবেক শিক্ষার্থীর ম’রদেহ উদ্ধার
- ইরানকে হা-ম-লা বন্ধে প্রস্তাব
- ঢাবিতে হটাৎ ছাত্রলীগের বিক্ষোভ, ককটেল বি-স্ফো-র-ণ
- কারাগারে ফাঁসিতে ঝুললেন সেই অস্ত্রধারী আ’লীগ নেতা
- দুই বড় খবরের মধ্যে আজ খুলছে দেশের শেয়ারবাজার
- ডিভিডেন্ড বেড়েছে শেয়ারবাজারের সাত ব্যাংকের
- মূলধনের বেশি রিজার্ভ জ্বালানি খাতের ১৪ কোম্পানির
- মুনাফা বেড়েছে ১৮ জেনারেল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির