ঢাকা, রবিবার, ২৫ মে ২০২৫, ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
সচিবালয়ে সরকারি কর্মচারীদের বিক্ষোভ
.jpg)
ডুয়া ডেস্ক: সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ বাতিলের দাবিতে টানা দ্বিতীয় দিনের মতো সচিবালয়ে বিক্ষোভ করেছেন বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। রোববার (২৫ মে) সকাল থেকেই সচিবালয়ের ৬ নম্বর ভবনের সামনে জড়ো হতে থাকেন তারা। বেলা ১০টার পর মিছিল শুরু করে সচিবালয়ের বিভিন্ন ভবনের সামনে ঘুরে প্রতিবাদ জানানো হয়।
বিক্ষোভে অংশ নেয়া কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জানান, সংশোধিত অধ্যাদেশ প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। প্রয়োজনে সচিবালয় অচল করে দেওয়ার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তারা।
বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীরা ‘সচিবালয়ের কর্মচারী, এক হও লড়াই কর’, ‘অবৈধ কালো আইন মানি না, মানব না’, ‘আমাদের দাবি মানতে হবে’—এমন নানা স্লোগানে মুখর করে তোলেন সচিবালয় চত্বর। অনেকে এখনও নিজ নিজ দপ্তরে না গিয়ে সচিবালয়ের ভেতরে জটলা করে আলোচনায় মগ্ন রয়েছেন।
বিক্ষোভের নেতৃত্ব দেন বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের একাংশের সভাপতি মো. নূরুল ইসলাম এবং মহাসচিব মো. মুজাহিদুল ইসলাম।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে ২০১৮ সালের সরকারি চাকরি আইন সংশোধনের প্রস্তাব অনুমোদিত হয়। ‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’-এর খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয় আইন মন্ত্রণালয়ের ভেটিং সাপেক্ষে।
প্রস্তাবিত সংশোধনী অনুযায়ী, কোনো কর্মকর্তা শৃঙ্খলা ভঙ্গ, কর্তব্যে অনুপস্থিতি বা উসকানির মতো অভিযোগের সম্মুখীন হলে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ ছাড়াই চাকরিচ্যুত করা যাবে। এমন অভিযোগ গঠনের ২৫ কার্যদিবসের মধ্যেই নিষ্পত্তির বাধ্যবাধকতাও যোগ করা হয়েছে।
সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে নানা অসন্তোষ বিরাজ করছিল। সরকারি সূত্রগুলো জানায়, ২০২৪ সালের আগস্টে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে জনপ্রশাসনের একাংশের আচরণ নিয়ে অসন্তোষ দেখা দেয়। অভিযোগ রয়েছে, দলবদ্ধভাবে সচিবদের অবরুদ্ধ করে বদলি, পদোন্নতি আদায়সহ নানা অসঙ্গতির জন্ম দিয়েছেন কিছু কর্মকর্তা।
এছাড়া, প্রশাসন ও অন্যান্য ক্যাডারের মধ্যে দ্বন্দ্ব, কর্মবিরতি এবং সামাজিক মাধ্যমে অশালীন মন্তব্য—এসব পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে সরকার মনে করছে, সরকারি চাকরিজীবীদের শৃঙ্খলায় আনতে আইনি সংস্কার প্রয়োজন। ফলে নতুন অধ্যাদেশে আন্দোলন, ধর্মঘট, সভা-সমাবেশের মতো দলবদ্ধ কর্মসূচিকে শৃঙ্খলাভঙ্গ হিসেবে চিহ্নিত করে নিষিদ্ধ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
১৯৭৯ সালের অধ্যাদেশ
জিয়াউর রহমান সরকারের আমলে প্রণীত ‘সরকারি কর্মচারী অধ্যাদেশ, ১৯৭৯’-এ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য চার ধরনের অপরাধ ও তিন ধরনের শাস্তির বিধান রাখা হয়েছিল। অপরাধগুলো ছিল—শৃঙ্খলা ভঙ্গ, অযৌক্তিক অনুপস্থিতি, অন্যদের কাজে বাধা দেওয়া এবং প্ররোচিত করা। শাস্তির মধ্যে ছিল—বরখাস্ত, চাকরি থেকে অব্যাহতি এবং পদাবনতি বা বেতন কর্তন।
পরে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিল হওয়ায় ১৯৭৯ সালের এই অধ্যাদেশও অকার্যকর হয়ে যায়। পরবর্তীতে ২০১৮ সালে প্রণীত ‘সরকারি চাকরি আইন’-এর মাধ্যমে এটি আনুষ্ঠানিকভাবে বাতিল করা হয়।
তবে সম্প্রতি জনপ্রশাসনে শৃঙ্খলা ফেরাতে ১৯৭৯ সালের ওই পুরনো অধ্যাদেশ পুনর্বহালের সুপারিশ করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ। গত মার্চে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে পাঠানো এক চিঠিতে তারা জানিয়েছে, বর্তমান সময়ে কর্মচারীদের মধ্যে মনস্তাত্ত্বিক অস্থিরতা ও আইন মানতে অনীহার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে, যা সরকারকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলছে এবং প্রশাসনিক কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটাচ্ছে।
তবে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ ১৯৭৯ সালের অধ্যাদেশ পুনর্বহালের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে। তাদের মতে, বর্তমান বাস্তবতায় আগের অধ্যাদেশ ফেরত না এনে ২০১৮ সালের আইনের সংশোধনের মাধ্যমেই জবাবদিহি ও শৃঙ্খলা নিশ্চিত করা উচিত।
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- বিও হিসাবে ৫ লাখ টাকা নগদ জমা ও উত্তোলনের কথা ভাবছে বিএসইসি
- সরকারি কোম্পানি শেয়ারবাজারে আনার উদ্যোগ, তালিকায় ২১ প্রতিষ্ঠান
- ডিএসইর ব্রোকারেজ হাউজের নিবন্ধন বাতিল করল বিএসইসি
- বিএসইসি চেয়ারম্যানের পদত্যাগ নিয়ে মুখ খুললেন অর্থ উপদেষ্টা
- ‘এলাম পরামর্শ নিতে, পেলাম পদত্যাগের বার্তা’- বিএসইসি চেয়ারম্যানের ক্ষোভ
- মিউচ্যুয়াল ফান্ড ও পাবলিক রুলস ইস্যুতে টাস্কফোর্সের চূড়ান্ত সুপারিশ
- দশ হাজার কোটি ঋণের বোঝায় আইসিবি, প্রস্তাব বিশেষ তহবিলের
- দুর্বল ৬ শেয়ারে বিনিয়োগকারীদের হতাশা আরও বেড়েছে
- ‘সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি’ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান
- শেয়ারবাজারের ৯ ব্যাংক এমডিবিহীন, নেতৃত্ব সংকট তীব্র
- ঢাকা অচলের ঘোষণা
- তিন কোম্পানির বোনাস ডিভিডেন্ডে বিএসইসির সম্মতি
- লোকসান থেকে মুনাফায় বস্ত্র খাতের চার কোম্পানি
- নানামুখী চেষ্টার পরও ভেঙে পড়ছে দেশের শেয়ারবাজার
- শেয়ারবাজারে ৬১৭টি বিও হিসাব স্থগিত