ঢাকা, শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫, ৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

৩০ হাজার রোহিঙ্গাকে হেপাটাইটিস সি চিকিৎসা দেবে এমএসএফ

২০২৫ মে ২৩ ২৩:০২:২৫
৩০ হাজার রোহিঙ্গাকে হেপাটাইটিস সি চিকিৎসা দেবে এমএসএফ

ডুয়া ডেস্ক: কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে হেপাটাইটিস সি ভাইরাসের ব্যাপক সংক্রমণ মোকাবিলায় ব্যাপক আকারে পরীক্ষা ও চিকিৎসা কর্মসূচি শুরু করেছে আন্তর্জাতিক মানবিক সংস্থা মেডিসিন্স স্যান্স ফ্রন্টিয়ার্স (এমএসএফ)। সংস্থাটির লক্ষ্য ২০২৬ সালের মধ্যে প্রায় ৩০ হাজার আক্রান্ত শরণার্থীকে চিকিৎসা সেবা প্রদান করা।

এমএসএফের সাম্প্রতিক গবেষণায় উদ্বেগজনক তথ্যে উঠে এসেছে - রোহিঙ্গা ক্যাম্পে প্রতি পাঁচজন প্রাপ্তবয়স্কের মধ্যে একজন হেপাটাইটিস সি ভাইরাসে আক্রান্ত, যা সমগ্র ক্যাম্পে প্রায় ৮৬ হাজার সংক্রমিত ব্যক্তির অস্তিত্ব নির্দেশ করে। এই ভাইরাসটি প্রাথমিকভাবে উপসর্গবিহীন থাকলেও দীর্ঘমেয়াদে লিভার সিরোসিস ও ক্যানসারের মতো মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।

এমএসএফের ডেপুটি মেডিকেল কো-অর্ডিনেটর ডা. ওয়াসিম ফাইরুজ জানান, রোহিঙ্গাদের জন্য হেপাটাইটিস সি চিকিৎসা প্রাপ্তি এখন পর্যন্ত একটি বিলাসিতা ছিল। ক্যাম্পের বাইরে চিকিৎসা ব্যয়বহুল হওয়ায় এবং শরণার্থীদের আইনগত চলাচলের অনুমতি না থাকায় এই সমস্যা আরও জটিল হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে এমএসএফ বালুখালী, জামতলী ও পাহাড়ের উদ্দি ক্যাম্পে তিনটি বিশেষায়িত হেপাটাইটিস সি চিকিৎসা ইউনিট চালু করেছে।

চিকিৎসা কার্যক্রমের বিস্তারিত ব্যাখ্যা করে ডা. ফাইরুজ বলেন, প্রথমে কমিউনিটি স্বাস্থ্যকর্মীরা উপসর্গবিহীন রোগীদের শনাক্ত করবেন। এরপর দ্রুত রক্তপরীক্ষার মাধ্যমে প্রাথমিক নির্ণয় শেষে বিশেষায়িত কেন্দ্রে নিশ্চিতকরণ পরীক্ষা ও চিকিৎসা প্রদান করা হবে। পাশাপাশি ক্যাম্পজুড়ে ব্যাপক সচেতনতা কর্মসূচি চালানো হচ্ছে, যেখানে হেপাটাইটিস সি প্রতিরোধের উপায়, চিকিৎসার গুরুত্ব ও ওষুধ সেবনের নিয়মাবলী সম্পর্কে তথ্য দেওয়া হচ্ছে।

তবে ডা. ফাইরুজ সতর্ক করে বলেন যে, এই উদ্যোগ সত্ত্বেও পুরো ক্যাম্প থেকে হেপাটাইটিস সি নির্মূল করা সম্ভব হবে না। চিকিৎসাকর্মী, সরঞ্জাম ও অর্থের ঘাটতি বড় বাধা হিসেবে রয়ে গেছে। তিনি অন্যান্য স্বাস্থ্য সংস্থা ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি সমন্বিত ও দীর্ঘমেয়াদী কৌশল প্রণয়নের আহ্বান জানান।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, দীর্ঘদিন ধরে অনিরাপদ ইনজেকশন পদ্ধতি এবং অস্বাস্থ্যকর চিকিৎসা পরিবেশ রোহিঙ্গা ক্যাম্পে হেপাটাইটিস সি ছড়ানোর প্রধান কারণ। এমএসএফ এই সমস্যার গভীরে যাওয়ার জন্য আরও গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করবে, যা ভবিষ্যতের পরিকল্পনাকে আরও কার্যকরভাবে বাস্তবায়নে সহায়তা করবে।

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে