ঢাকা, রবিবার, ২৫ মে ২০২৫, ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
সরকারি কোম্পানি শেয়ারবাজারে আনার উদ্যোগ, তালিকায় ২১ প্রতিষ্ঠান

ডুয়া নিউজ: শেয়ারবাজারে নতুন প্রাণ ফিরিয়ে আনতে বড় উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। সরকারি মালিকানাধীন একাধিক লাভজনক ও কৌশলগত কোম্পানির শেয়ার সরাসরি তালিকাভুক্তির মাধ্যমে বাজারে ছাড়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। প্রাথমিকভাবে এসব প্রতিষ্ঠানের ৫ শতাংশ করে শেয়ার বাজারে ছাড়ার পরিকল্পনা রয়েছে। এই প্রক্রিয়া বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি)-কে।
বৃহস্পতিবার (২২ মে) অর্থ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (অর্থ) ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন অর্থসচিব মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদার, বিএসইসি চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব নাজমা মোবারেক এবং আইসিবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিরঞ্জন চন্দ্র দেবনাথ।
তালিকাভুক্তির প্রস্তাবে যেসব প্রতিষ্ঠান রয়েছে
১. নর্থওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি
২. বাখরাবাদ গ্যাস ট্রান্সমিশন ও ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি
৩. গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানি
৪. জালালাবাদ গ্যাস সিস্টেম
৫. সিলেট গ্যাসফিল্ড
৬. বাংলাদেশ গ্যাসফিল্ড
৭. রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানি লিমিটেড
৮. পশ্চিমাঞ্চল গ্যাস কোম্পানি
৯. লিকুফায়েড পেট্রোলিয়াম গ্যাস
১০. বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি (বিটিসিএল)
১১. টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেড
১২. টেলিফোন শিল্প সংস্থা (টিএসএস)
১৩. বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস
১৪. সোনারগাঁও হোটেল
১৫. ছাতক সিমেন্ট ফ্যাক্টরি
১৬. কর্ণফুলী পেপার মিলস
১৭. চিটাগং ডকইয়ার্ড
১৮. বাংলাদেশ ইনস্যুলেটর অ্যান্ড স্যানিটারিওয়্যার ফ্যাক্টরি
১৯. প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ
২০. আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন কোম্পানি
২১. ইলেকট্রিসিটি জেনারেশন কোম্পানি অব বাংলাদেশ
এর আগে ১১ মে অনুষ্ঠিত বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস শেয়ারবাজারের পুনর্জাগরণের লক্ষ্যে পাঁচটি মূল নির্দেশনা দেন, যার বাস্তবায়নের অগ্রগতি পর্যালোচনা করতেই ২৩ মে'র বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। নির্দেশনাগুলো হলো:
১. সরকারি মালিকানাধীন বহুজাতিক কোম্পানিকে বাজারে আনা।
২. তালিকাভুক্ত ও অ-তালিকাভুক্ত কোম্পানির করহারে ব্যবধান বাড়ানো (৫% থেকে ১০%)।
৩. বিদেশি বিশেষজ্ঞ এনে শেয়ারবাজার সংস্কারে গতি আনা।
৪. অনিয়মে জড়িত শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা।
৫. দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের উৎস হিসেবে ব্যাংকের পরিবর্তে শেয়ারবাজার ব্যবহার।
প্রধান উপদেষ্টা এসব নির্দেশনার বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগের জন্য সর্বোচ্চ ছয় মাসের সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন।
প্রণোদনার পথে এগোচ্ছে সরকার
বৈঠকসূত্রে জানা গেছে, যেসব বড় ও সম্ভাবনাময় কোম্পানি শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হতে আগ্রহ দেখাচ্ছে না, তাদের প্রতি সরকার জোর প্রয়োগ না করে প্রণোদনার মাধ্যমে উৎসাহিত করার কৌশল গ্রহণ করবে।
এদিকে বিএসইসি জানিয়েছে, আগামী বাজেটে তালিকাভুক্ত ও অ-তালিকাভুক্ত কোম্পানির কর ব্যবধান ৫ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করার প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। প্রস্তাবটি কার্যকর হলে বড় কোম্পানিগুলোর বাজারমুখী হওয়ার সম্ভাবনা আরও বাড়বে।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরকারি কোম্পানির অংশগ্রহণ বাড়লে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীদের আস্থা যেমন বাড়বে, তেমনি দীর্ঘমেয়াদে বাজার হয়ে উঠবে আরও গভীর, শক্তিশালী ও টেকসই। আগামীর অর্থনৈতিক কাঠামোয় বাজারভিত্তিক অর্থায়নের যে চাহিদা তৈরি হচ্ছে, এই উদ্যোগ হতে পারে তার বাস্তব ভিত্তি।
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- বিও হিসাবে ৫ লাখ টাকা নগদ জমা ও উত্তোলনের কথা ভাবছে বিএসইসি
- সরকারি কোম্পানি শেয়ারবাজারে আনার উদ্যোগ, তালিকায় ২১ প্রতিষ্ঠান
- ডিএসইর ব্রোকারেজ হাউজের নিবন্ধন বাতিল করল বিএসইসি
- বিএসইসি চেয়ারম্যানের পদত্যাগ নিয়ে মুখ খুললেন অর্থ উপদেষ্টা
- ‘এলাম পরামর্শ নিতে, পেলাম পদত্যাগের বার্তা’- বিএসইসি চেয়ারম্যানের ক্ষোভ
- মিউচ্যুয়াল ফান্ড ও পাবলিক রুলস ইস্যুতে টাস্কফোর্সের চূড়ান্ত সুপারিশ
- দশ হাজার কোটি ঋণের বোঝায় আইসিবি, প্রস্তাব বিশেষ তহবিলের
- দুর্বল ৬ শেয়ারে বিনিয়োগকারীদের হতাশা আরও বেড়েছে
- ‘সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি’ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান
- শেয়ারবাজারের ৯ ব্যাংক এমডিবিহীন, নেতৃত্ব সংকট তীব্র
- ঢাকা অচলের ঘোষণা
- তিন কোম্পানির বোনাস ডিভিডেন্ডে বিএসইসির সম্মতি
- লোকসান থেকে মুনাফায় বস্ত্র খাতের চার কোম্পানি
- নানামুখী চেষ্টার পরও ভেঙে পড়ছে দেশের শেয়ারবাজার
- শেয়ারবাজারে ৬১৭টি বিও হিসাব স্থগিত