ঢাকা, বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২ আশ্বিন ১৪৩২
পাঁচ কোম্পানির পরিচালকদের ব্যাপক শেয়ার বিক্রি

ডুয়া নিউজ: শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত পাঁচ ব্যাংকের উদ্যোক্তা পরিচালকরা দেদারছে তাদের শেয়ার বিক্রি করে দিয়েছেন। যার কারণে কোম্পানিগুলোতে উদ্যোক্তা পরিচালকদের সম্মিলিত শেয়ার ৩০ শতাংশের নিচে নেমে গেছে। যা শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) ন্যূনতম শেয়ার ধারণ নীতিমালার পরিপন্থী।
বিএসইসির নির্দেশনা অনুযায়ী, শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত প্রতিটি কোম্পানির উদ্যোক্তা পরিচালকদের সম্মিলিত শেয়ার ন্যূনতম ৩০ শতাংশ ধারণ বাধ্যতামূলক। তবে পর্যালোচনায় দেখা গেছে, পাঁচটি ব্যাংক এখন বিএসইসির নির্দেশনাটি পরিপালনে পুরোপুরি ব্যর্থ।
বিশ্লেষকরা বলছেন, উদ্যোক্তা-পরিচালকদের কম শেয়ার থাকা মানে প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় তাদের আগ্রহ কমে যাওয়া, যা বিনিয়োগকারীদের আস্থার ঘাটতির অন্যতম কারণ হতে পারে। ফলে এসব প্রতিষ্ঠানের শেয়ার মূল্যও তুলনামূলকভাবে অস্থির থাকে।
বিএসইসি একাধিকবার এসব কোম্পানিকে নির্দেশনা দিয়েছে প্রয়োজনীয় শেয়ার ধারণ নিশ্চিত করার জন্য। তবে উদ্যোক্তাদের আগ্রহের অভাব এবং বাজার পরিস্থিতি বিবেচনায় এই নির্দেশনা বাস্তবায়নে ধীরগতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে এর অবনতিও দেখা যাচ্ছে।
তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, এক সময়ে কোন ব্যাংকেই উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের সম্মিলিত শেয়ার ৩০ শতাংশের নিচে ছিল না। কিন্তু এস আলম এবং শিকদার গ্রুপের কবলে থাকা কয়েকটি ব্যাংকের শেয়ার তারা দেদারছে বিক্রি করে দিয়েছেন। যার ফলে কোম্পানিগুলোতে এখন উদ্যোক্তা পরিচালকদের শেয়ারের বেহাল দশা দেখা দিয়েছে।
কোম্পানিগুলোর মধ্যে উদ্যোক্তা পরিচালকদের সবচেয়ে কম শেয়ার রয়েছে ইসলামী ব্যাংকে। কোম্পানিটিতে বর্তমানে উদ্যোক্তা পরিচালকদের শেয়ার রয়েছে মাত্র ০.১৮ শতাংশ। ২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর কোম্পানিটিতে উদ্যোক্তা পরিচালকদের শেয়ার ছিল ৩৫.৮৯ শতাংশ।
এরপর উদ্যোক্তা পরিচালকদের সম্মিলিত শেয়ার কম দেখা যায় ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকে। কোম্পানিটিতে বর্তমানে উদ্যোক্তা পরিচালকদের শেয়ার নেমে এসেছে ৫.৯০ শতাংশে। ২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর কোম্পানিটিতে উদ্যোক্তা পরিচালকদের শেয়ার ছিল ৩০.১৪ শতাংশ।
সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকে ২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর উদ্যোক্তা পরিচালকদের শেয়ার ছিল ৩৪.১০ শতাংশ। বর্তমানে ব্যাংকটিতে উদ্যোক্তা পরিচালকদের শেয়ার নেমে এসেছে ১১.৬২ শতাংশে।
আল-আরাফা ইসলামী ব্যাংকে ২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর উদ্যোক্তা পরিচালকদের শেয়ার ছিল ৫৯.৫৬ শতাংশ। বর্তমানে ব্যাংকটিতে উদ্যোক্তা পরিচালকদের শেয়ার নেমে এসেছে ১৬.১১ শতাংশে।
শিকদার গ্রুপের মালিকানাধীন ন্যাশনাল ব্যাংকে ২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর উদ্যোক্তা পরিচালকদের শেয়ার ছিল ২০.৩৩ শতাংশ। বর্তমানে ব্যাংকটিতে উদ্যোক্তা পরিচালকদের শেয়ার নেমে এসেছে ১৫.৫৩ শতাংশে। তবে ২০২০ সালের আগে ব্যাংকটিতে উদ্যোক্তা পরিচালকদের শেয়ার ছিল ৩০ শতাংশের বেশি।
উল্লেখ্য, ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর আলোচ্য ব্যাংকগুলোর বোর্ড ভেঙ্গে নতুন বোর্ড গঠন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। নতুন বোর্ডে আগের উদ্যোক্তা পরিচালকদের বাদ দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র বলছে, আগের বোর্ডে থাকা উদ্যোক্তা পরিচালকদের শেয়ার বর্তমানে ব্যাংকগুলোর সম্মিলিত শেয়ার ধারণ থেকে বাদ পড়েছে। যে কারণে ব্যাংকগুলোর শেয়ার ধারণ কমে গেছে।
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- লাভেলোর শেয়ার কারসাজি: তিন বিও অ্যাকাউন্টের লেনদেন স্থগিত
- সরকারের সিদ্ধান্তে ডুবছে শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীদের স্বপ্ন?
- ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ড কার্যকারিতায় বিএসইসির নতুন উদ্যোগ
- একাদশে ভর্তি: চতুর্থ ধাপে আবেদনের সুযোগ
- শেয়ারবাজারে প্রতারণা ঠেকাতে মাঠে নামছে গোয়েন্দা সংস্থা
- শেয়ারবাজারে ধারাবাহিক মুনাফা চান? জেনে নিন ৫ মন্ত্র
- আরএসআই বিশ্লেষণে সর্বোচ্চ সতর্ক সংকেত পাঁচ শেয়ারে
- মালিকানায় পরিবর্তন আসছে ইয়াকিন পলিমারের
- ডিভিডেন্ড বৃদ্ধির আলোচনায় জ্বালানি খাতের ১১ কোম্পানি
- এক শেয়ারের জোরেই সবুজে ফিরল শেয়ারবাজার
- ডিভিডেন্ড দোলাচলে তথ্যপ্রযুক্তির ৮ কোম্পানির বিনিয়োগকারীরা
- শেয়ার কারসাজিতে শ্যালক–দুলাভাইর দেড় কোটি টাকা জরিমানা
- রেকর্ড ডেটে শেয়ার লেনদেন চালুর পরিকল্পনা ডিএসইর
- ধস কাটিয়ে অবশেষে শেয়ারবাজারে উত্থানের স্রোত
- উৎপাদন বাড়াতে নতুন যন্ত্রপাতিতে বিনিয়োগ করছে দুই কোম্পানি