ঢাকা, বুধবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৫, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

শেয়ারবাজারে চালু হচ্ছে ‘স্মার্ট সাবমিশন সিস্টেম’

২০২৫ নভেম্বর ২৬ ১১:৫৩:৩০

শেয়ারবাজারে চালু হচ্ছে ‘স্মার্ট সাবমিশন সিস্টেম’

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের শেয়ারবাজারকে আধুনিকীকরণ ও কার্যকারিতা বাড়ানোর লক্ষ্যে এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ হিসেবে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) আজ ‘স্মার্ট সাবমিশন সিস্টেম’ (এসএসএস) চালু করতে যাচ্ছে। এই স্বয়ংক্রিয় ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলো এখন থেকে তাদের সমস্ত নিয়ন্ত্রক ও কর্পোরেট ফাইল একটি একক প্ল্যাটফর্মে দাখিল করতে পারবে, যা ম্যানুয়াল হার্ড-কপি জমা দেওয়ার প্রক্রিয়াকে সম্পূর্ণরূপে বিলুপ্ত করবে।

এতদিন পর্যন্ত বিদ্যমান ব্যবস্থায় তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোকে নিয়ন্ত্রক সংক্রান্ত তথ্য আলাদাভাবে উভয় স্টক এক্সচেঞ্জে হার্ড-কপি আকারে জমা দিতে হতো। এছাড়াও বোর্ড সভা অনুষ্ঠানের ৩০ মিনিটের মধ্যে ইমেল বা ফ্যাক্সের মাধ্যমে ত্রৈমাসিক, বার্ষিক এবং আর্থিক বিষয়ের গুরুত্বপূর্ণ আপডেট পাঠাতে হতো। এই দীর্ঘ ও ক্লান্তিকর প্রক্রিয়া দূর করে এসএসএস-এর লক্ষ্য হলো—পরিচালনগত দক্ষতা বৃদ্ধি করা, দ্রুত ও নির্ভুল তথ্য ছড়িয়ে দেওয়া, ঝুঁকি হ্রাস করা এবং বিনিয়োগকারীদের অভিজ্ঞতা উন্নত করা।

নতুন এই ডিজিটাল ব্যবস্থার অধীনে প্রতিটি তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠান এক্সচেঞ্জগুলোর পক্ষ থেকে একটি অনন্য ইউজার আইডি এবং পাসওয়ার্ড পাবে। এই আইডি ব্যবহার করে তারা সিস্টেমে লগইন করতে পারবে এবং প্রয়োজনীয় সমস্ত নথি অনলাইনে জমা দিতে পারবে। কোনো অতিরিক্ত নথির প্রয়োজন হলে এক্সচেঞ্জগুলো এই অনলাইন সিস্টেমের মাধ্যমেই কোম্পানির কাছে তা চাইবে।

উল্লেখ্য, ডিএসই অবশ্য ফেব্রুয়ারি ২০২৪-এ এককভাবে শুধুমাত্র মূল্য সংবেদনশীল তথ্যের জন্য একটি স্মার্ট ডেটা এবং ডকুমেন্ট দাখিল সিস্টেম চালু করেছিল, তবে এখন সিএসই-ও এই অনলাইন সিস্টেমে যুক্ত হচ্ছে।

নতুন এই ব্যবস্থা সম্পর্কে ডিএসই'র একজন কর্মকর্তা জানান, স্মার্ট সাবমিশন সিস্টেম এক্সচেঞ্জ ও কোম্পানি উভয়ের জন্যই ঝামেলা কমাবে। এর ফলে কোম্পানিগুলো সঠিক ও সময়মতো তথ্য সরবরাহ করছে কিনা, তা পর্যবেক্ষণ করা এক্সচেঞ্জের জন্য সহজ হবে। বর্তমানে ম্যানুয়াল দাখিলের কারণে ত্রুটির ঝুঁকি বাড়ত।

তিনি আরও বলেন, নতুন সিস্টেম ম্যানুয়াল এন্ট্রি দূর করে ভুল কমিয়ে দেয় এবং তথ্যে দ্রুত প্রবেশাধিকার সক্ষম করে। কয়েকজন কোম্পানি সচিব এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়ে এই উদ্যোগকে সময়োপযোগী উদ্যোগ বলে মন্তব্য করেছেন। তারা জানান, পূর্ববর্তী ডিএসইর মূল্য সংবেদনশীল তথ্য দাখিলের প্ল্যাটফর্মটি ছিল জটিল ও ব্যয়বহুল, কারণ অনলাইনে দাখিল করার পরও হার্ড কপি জমা দিতে হতো।

উল্লেখ্য, গত আগস্ট মাসে ডিএসই বাংলাদেশ সিকিউরিটিস অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কাছে েএসএসএস-এর মাধ্যমে দাখিল প্রক্রিয়া স্বয়ংক্রিয় করার জন্য একটি প্রস্তাব জমা দিয়েছিল। সেই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছিল যে পিএসআই এবং কর্পোরেট প্রকাশনার ম্যানুয়াল ও ইমেল-ভিত্তিক প্রচার মানুষের ভুল, বিলম্ব এবং নথি হারানোর ঝুঁকি তৈরি করে। অন্যদিকে, ভারত, শ্রীলঙ্কা এবং পাকিস্তানের আঞ্চলিক স্টক এক্সচেঞ্জগুলো ইতিমধ্যেই সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয়, ইস্যুকারী-নেতৃত্বাধীন সিস্টেম ব্যবহার করছে। প্রাথমিকভাবে মূল্য সংবেদনশীল তথ্য (পিএসআই) এবং গুরুত্বপূর্ণ প্রকাশনাগুলির মাধ্যমে এই নতুন পদ্ধতিটির বাস্তবায়ন শুরু হবে।

এএসএম/

শেয়ারবাজারের বিশ্লেষণ ও ইনসাইড স্টোরি পেতে আমাদের পেজ ফলো করুন।

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত