ঢাকা, বুধবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৫, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

৫ ঘণ্টার লড়াই শেষে নিয়ন্ত্রণে আগুন, কড়াইলে পুড়ল দের হাজার ঘর

২০২৫ নভেম্বর ২৬ ১০:০৭:২৩


৫ ঘণ্টার লড়াই শেষে নিয়ন্ত্রণে আগুন, কড়াইলে পুড়ল দের হাজার ঘর

নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকার কড়াইল বস্তিতে মঙ্গলবার রাতে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ আগুনে মুহূর্তেই দগ্ধ হয় অসংখ্য ঘরবাড়ি। ঘিঞ্জি পরিবেশ, সরু রাস্তা ও যানজটের কারণে ফায়ার সার্ভিস দ্রুত পৌঁছাতে না পারায় আগুন ছড়িয়ে পড়ে চারদিকে। দীর্ঘ চেষ্টার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

ফায়ার সার্ভিসের তথ্য অনুযায়ী, আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করেছে মোট ১৯টি ইউনিট, আর আগুন লাগার পর নিয়ন্ত্রণে আসতে সময় লাগে পাঁচ ঘণ্টার বেশি। প্রতিষ্ঠানটির অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স বিভাগের পরিচালক লে. কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে প্রায় ১,৫০০ ঘরবাড়ি পুড়ে গেছে, যদিও সঠিক সংখ্যা তদন্তের পর জানা যাবে।

তিনি বলেন, আগুন লাগার প্রায় ৩৫ মিনিট পর প্রথম তিনটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে। শহরের তীব্র যানজটের কারণে স্টেশন থেকে ইউনিটগুলো এগোতে দেরি হয়। পরে আরও ইউনিট যুক্ত হলেও সরু রাস্তার কারণে বড় গাড়িগুলো ভেতরে ঢুকতে পারেনি, ফলে দূর থেকে পাইপ টেনে আগুন নেভাতে হয়েছে। তিনি আরও জানান, ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগেই আগুন ডেভেলপ স্টেজে চলে যাওয়ায় পরিস্থিতি কঠিন হয়ে পড়ে।

লে. কর্নেল তাজুল ইসলাম বলেন, যত্রতত্র বিদ্যুতের তার এবং প্রতিটি ঘরে গ্যাস সিলিন্ডার থাকার কারণে আগুন আরও দ্রুত ছড়ায়। আগুনের সূত্র সম্পর্কে নিশ্চিত হতে তদন্তের প্রয়োজন হবে। এখনো কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি, তবে কেউ সামান্য আহত হয়ে থাকতে পারেন। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণও তদন্তেই নির্ধারিত হবে।

প্রতিবছর কড়াইল বস্তিতে আগুন লাগার প্রসঙ্গে তিনি জানান, প্রতি বছর এখানে মহড়া পরিচালনা করা হয় এবং দুর্বল দিকগুলো চিহ্নিত করে সে অনুযায়ী প্রস্তুতি নেওয়া হয়। কয়েকদিন আগেই মহড়া করা হয়েছিল বলেই আগুন দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। পানি সরবরাহ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ফায়ার সার্ভিস, ওয়াসা এবং নিকটস্থ ড্রেন সব উৎস থেকেই পর্যাপ্ত পানি পাওয়া গেছে।

হেলিকপ্টার দিয়ে আগুন নেভানোর দাবি সম্পর্কে তিনি বলেন, হেলিকপ্টার উড়লে বাতাসে আগুন আরও ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি থাকে, তাই এমন পরিস্থিতিতে এ পদ্ধতি ব্যবহারযোগ্য নয়। বিকেল ৫টা ২২ মিনিটে আগুন লাগার খবর পাওয়ার পরই প্রথমে ১১টি ইউনিট, পরে আরও ৮টি ইউনিট যোগ দেয়।

ঘটনার পর তিনি সতর্ক করে বলেন, শীতকালকে আগুনের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ সময় হিসেবে ধরা হয়, আর সামনে দুই মাস আগুনের ঘটনা বাড়ার আশঙ্কা থাকে।

কড়াইলের এই বড় অগ্নিকাণ্ডে প্রাণহানি না ঘটলেও ঘরবাড়ি হারানো হাজারো মানুষের সামনে এখন নতুন করে জীবনের লড়াই।

ইএইচপি

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত