মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানীর ৪৯তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

নিজস্ব প্রতিবেদক: মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ৪৯তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ১৯৭৬ সালের ১৭ নভেম্বর ঢাকার তৎকালীন পিজি হাসপাতালে (বর্তমানে বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন এবং তাকে টাঙ্গাইলের সন্তোষে দাফন করা হয়।

১৮৮০ সালের ১২ ডিসেম্বর সিরাজগঞ্জের ধানগড়া গ্রামে জন্মগ্রহণকারী মওলানা ভাসানী কৈশোর থেকেই রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। তিনি দীর্ঘদিন তৎকালীন বাংলা-আসাম প্রদেশ মুসলিম লীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এবং লাইন-প্রথা উচ্ছেদ, জমিদারদের নির্যাতনবিরোধী আন্দোলনসহ আজীবন সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের অধিকার আদায়ে সংগ্রাম করেছেন। ১৯৫৭ সালে টাঙ্গাইলে তার উদ্যোগে আয়োজিত ঐতিহাসিক কাগমারী সম্মেলন স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ে এক বিশেষ প্রেরণা ও ইঙ্গিতবাহী ঘটনা ছিল।

মওলানা ভাসানীর নির্মোহ, অনাড়ম্বর ও সাদাসিধে জীবনযাপন কিংবদন্তি হয়ে আছে। অধিকারবঞ্চিত, অবহেলিত ও মেহনতি মানুষের অধিকার রক্ষায় তিনি নিরবচ্ছিন্নভাবে সংগ্রাম করে গেছেন এবং ক্ষমতার কাছে থেকেও ক্ষমতার মোহ তাকে কখনো প্রভাবিত করতে পারেনি।

মওলানা ভাসানীর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে টাঙ্গাইল পৌর শহরের সন্তোষে মওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, ভাসানী ফাউন্ডেশনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। টাঙ্গাইলের সন্তোষে সাত দিনব্যাপী ‘ভাসানী মেলা’ চলছে।

মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে রোববার এক বাণীতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান মওলানা ভাসানীকে জাতীয় ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় ও গুরুত্বপূর্ণ নাম হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, সাম্রাজ্যবাদ, উপনিবেশবাদ ও আধিপত্যবাদবিরোধী সংগ্রামের এই প্রবাদপুরুষ ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে উপমহাদেশের নিপীড়িত মানুষের পক্ষে আপসহীন ও সাহসী নেতৃত্ব দিয়েছেন। তারেক রহমান আরও বলেন যে, মওলানা ভাসানীর অগাধ দেশপ্রেম, দেশ ও জাতির স্বার্থরক্ষা এবং গণতন্ত্র ও মানবতার শত্রুদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী হওয়ার আদর্শ যুগ যুগ ধরে অনুপ্রেরণা জোগাবে।

এছাড়াও, বিএনপি কর্তৃক গঠিত ‘মওলানা ভাসানী মৃত্যুবার্ষিকী পালন জাতীয় কমিটি’র উদ্যোগে দুদিনব্যাপী কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। কর্মসূচির মধ্যে আজ টাঙ্গাইলের সন্তোষে মওলানা ভাসানীর মাজার জিয়ারত, শ্রদ্ধা নিবেদন, ফাতেহা পাঠ ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবে গণসংহতি আন্দোলনের আয়োজনে ‘মওলানা ভাসানী ও গণ-অভ্যুত্থানের রাজনীতি : বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথ’ শীর্ষক আলোচনা সভাও অনুষ্ঠিত হয়েছে।

এসপি