ঢাকা, শনিবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৫, ১০ কার্তিক ১৪৩২

নির্বাচনের আগে সংঘাতের আশঙ্কা তথ্য উপদেষ্টার

২০২৫ অক্টোবর ২৫ ১৯:৪৭:২৬

নির্বাচনের আগে সংঘাতের আশঙ্কা তথ্য উপদেষ্টার

নিজস্ব প্রতিবেদক: আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলো সংঘাতের জন্য প্রস্তুত হয়ে আছে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। তার মতে, এখনো বড় কোনো সংঘাত না ঘটার পেছনে প্রধান উপদেষ্টার ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। তবে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, পরিস্থিতি শিগগিরই উত্তপ্ত আকার ধারণ করতে পারে।

শনিবার সকালে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় বিএমএ ভবনে ‘মাজার সংস্কৃতি: সহিংসতা, সংকট ও ভবিষ্যৎ ভাবনা’ শীর্ষক জাতীয় সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সংলাপের আয়োজন করে সুফি গবেষণাভিত্তিক সংগঠন মাকাম।

মাহফুজ আলম বলেন, “সবাই সংঘাতের জন্য মুখিয়ে আছে। অল্প সময়ের মধ্যেই সেটি দৃশ্যমান হবে বলে আমি আশঙ্কা করছি। যদি এর সঙ্গে ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ যুক্ত হয়, তাহলে দেশের পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারে।”

তিনি জানান, আওয়ামী লীগ বিভিন্ন দরবার ও মাজারের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের চেষ্টা করছে এমন খবর তিনি শুনেছেন। তাদের প্রচারণায় বলা হচ্ছে, অধ্যাপক ইউনূসের সরকার এসে মাজার ও মসজিদ ভেঙে দিচ্ছে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এটা অন্তর্বর্তী সরকারের বিষয় নয়। বরং ৫০ বছর ধরে এ প্রবণতা চলছে। সরকার বদলালেই মসজিদ ও ইসলামী ফাউন্ডেশনের কমিটিগুলোও বদলে যায়।”

তথ্য উপদেষ্টা মনে করেন, রাষ্ট্রীয় ফ্যাসিবাদ শেষ হলেও সামাজিক ক্ষেত্রে তার প্রভাব এখনো রয়ে গেছে। “দেশে ইসলামের নানা ধারা আছে কওমি, সুফি, সুন্নি, শিয়া ইত্যাদি। এদের মধ্যে সংলাপের জায়গা তৈরি না হলে রাষ্ট্র আরও অনিশ্চয়তার দিকে যাবে,” বলেন তিনি।

তিনি বলেন, “গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ ও সুফি ধারার মধ্যে একটি রাজনৈতিক বোঝাপড়া গড়ে উঠেছিল। সুফিরা ভেবেছিল আওয়ামী লীগ তাদের সুরক্ষা দেবে, বিনিময়ে তারা ভোট দেবে। কিন্তু এই সম্পর্কই ধর্মীয় রাজনীতিকে সংকীর্ণ পরিসরে আটকে দিয়েছে। কওমিরাও এর বাইরে নয়, তারাও রাজনৈতিকভাবে ব্যবহৃত হয়েছে।”

মাহফুজ আলম আরও জানান, বাংলাদেশের মাজারগুলোর বিষয়ে কিছু মুসলিম রাষ্ট্রের দূতাবাসও আগ্রহী, এমনকি কেউ কেউ এসব ধ্বংস হোক তা-ও চায়। “এই রাজনৈতিক ও আদর্শিক প্রভাবগুলো আমাদের বুঝতে হবে,” তিনি বলেন।

তথ্য উপদেষ্টা আহ্বান জানান, ধর্মীয় ইস্যুগুলোকে ভয় না পেয়ে রাষ্ট্রীয় ও নীতিগত দৃষ্টিকোণ থেকে সমাধানের উদ্যোগ নিতে হবে। “না হলে এই সংকট আরও ঘনীভূত হবে,” বলেন তিনি।

তিনি জানান, “মাজারে হামলার ঘটনায় ইতোমধ্যে অনেককে গ্রেফতার করা হয়েছে। এখন এসব মাজার সংস্কারের পরিকল্পনা চলছে। হামলার শিকার মাজার কর্তৃপক্ষকে মামলা করার আহ্বান জানাই।”

তার মতে, সহিংসতা ও প্রতিশোধের এই সংস্কৃতি টিকতে থাকলে ধর্মভিত্তিক দ্বন্দ্ব থামবে না। “আজ সুফিদের ওপর হামলা হচ্ছে, কাল কওমিদের ওপর হবে। এ ধারা বন্ধ করতে হবে,” বলেন মাহফুজ আলম।

ইএইচপি

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত