ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫, ৮ কার্তিক ১৪৩২

রোহিঙ্গা সংকটের সমাধানে গঠিত হলো ‘ইউনাইটেড কাউন্সিল অব রোহাং’

২০২৫ অক্টোবর ২৩ ২৩:৪২:৩৬

রোহিঙ্গা সংকটের সমাধানে গঠিত হলো ‘ইউনাইটেড কাউন্সিল অব রোহাং’

নিজস্ব প্রতিবেদক: দীর্ঘ নয় বছর ধরে চলমান রোহিঙ্গা সংকটের সমাধানে একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়েছে। প্রত্যাবাসনের অন্যতম বড় বাধা হিসেবে চিহ্নিত অভ্যন্তরীণ ঐক্য ও প্রতিনিধিত্বশীল নেতৃত্বের অভাব পূরণে বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গারা গঠন করেছে তাদের নাগরিক সংগঠন ‘ইউনাইটেড কাউন্সিল অব রোহাং’ (ইউসিআর)।

বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) বিকেলে উখিয়ার ১৬ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের একটি কমিউনিটি সেন্টারে এক অনুষ্ঠানে ইউসিআরের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের শপথ গ্রহণ ও আত্মপ্রকাশ ঘটে। অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার আবু সালেহ মোহাম্মদ ওবায়দুল্লাহর উপস্থিতিতে ‘কংগ্রেস অব কাউন্সেলরস’-এর সভাপতি ও সদস্যরা শপথ গ্রহণ করেন।

ইউসিআর-এর সমন্বয় কমিটির আহ্বায়ক মোহাম্মদ ফুরকান মির্জা জানান, এই সংগঠনের মাধ্যমে রোহিঙ্গারা প্রমাণ করেছে যে তারা শান্তিপূর্ণ, স্বচ্ছ ও দায়িত্বশীলভাবে নিজেদের সংগঠিত করতে সক্ষম। ইউসিআর তাদের ঐক্য, জবাবদিহিতা এবং মর্যাদাপূর্ণ ভবিষ্যতের প্রতীক।

শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের অনুমতি নিয়ে কক্সবাজারের ৩৩টি ক্যাম্পে প্রতিনিধি নির্বাচন কার্যক্রম পরিচালিত হয়। ইউসিআর-এর পক্ষ থেকে জানানো হয়, এটি রোহিঙ্গাদের বৈধভাবে প্রতিনিধিত্বের প্রথম আনুষ্ঠানিক নাগরিক সংগঠন। তারা মনে করেন, এই আত্মপ্রকাশ রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের ঐক্য ও স্বচ্ছ, দায়িত্বশীল নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠার প্রথম পদক্ষেপ।

প্রথম ধাপে ৩৩টি ক্যাম্প থেকে ইমাম, শিক্ষক, নারী প্রতিনিধি, হেড মাঝি, ব্যবসায়ী, যুবক সহ ১৪টি শ্রেণি থেকে মোট ৩ হাজার ৬৯৩ জন ভোটার নির্বাচন করা হয়। এই ভোটারদের আটটি ভৌগোলিক অঞ্চলে ভাগ করে নির্বাচন প্রক্রিয়া পরিচালিত হয়। আলোচনার মাধ্যমে ঐক্য না হলে ব্যালটের মাধ্যমে ভোট গ্রহণ করা হয়। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ৫০০ সদস্যের কাউন্সেলর কংগ্রেস গঠিত হয় এবং এই কংগ্রেস থেকে ২৮ জন নির্বাহী সদস্য ও ৫ জন সভাপতি নির্বাচিত হন।

ইউসিআর জানিয়েছে, সভাপতির নেতৃত্ব প্রতি ৬ মাসে পরিবর্তিত হবে এবং ৩ বছরের মেয়াদ শেষে নতুন কংগ্রেস আহ্বান করা হবে। এই সম্পূর্ণ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা, নিরপেক্ষতা ও যোগ্যতাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এটি সম্পূর্ণ নিচু স্তর থেকে গঠিত একটি সংগঠন যা রোহিঙ্গা ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ঐক্যবদ্ধ নাগরিক সমাজ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে।

সংগঠনের নেতারা আশা প্রকাশ করেছেন যে ইউসিআর রোহিঙ্গাদের জন্য স্থায়ী নেতৃত্ব ও সমন্বিত প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করবে। এটি আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় দাতাদের সঙ্গে যোগাযোগ সহজ করবে, রোহিঙ্গা শিবিরে শান্তি ও শৃঙ্খলা বজায় রাখতে সহায়তা করবে এবং রোহিঙ্গাদের সম্মানজনক ও টেকসই ভবিষ্যতের পথে দিকনির্দেশনা দেবে।

এসপি

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত