ঢাকা, বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫, ৭ কার্তিক ১৪৩২
'মার্জিন রুলস' ও 'মিউচুয়াল ফান্ড বিধিমালা' নিয়ে রাস্তায় বিনিয়োগকারীরা
নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) কর্তৃক প্রস্তাবিত 'মিউচুয়াল ফান্ড বিধিমালা ২০২৫' এবং 'মার্জিন বিধিমালা ২০২৫'-এর বিরুদ্ধে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করে বিক্ষোভ করেছেন শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীরা।
বুধবার (২২ অক্টোবর, ২০২৫) দুপুরে রাজধানীর মতিঝিলে পুরাতন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ভবনের সামনে মিউচুয়াল ফান্ড বিনিয়োগকারী ঐক্য ফ্রন্ট ও বাংলাদেশ ক্যাপিটাল মার্কেট ইনভেস্টরস অ্যাসোসিয়েশন যৌথভাবে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করে। বিক্ষোভকারীরা দাবি জানিয়েছেন, এসব নীতিমালা চূড়ান্ত করার আগে কমিশন যেন সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে বসে আলোচনা করে।
বিক্ষোভকারীরা অভিযোগ করেন, বিএসইসি-এর বিভিন্ন অবিবেচক ও একতরফা সিদ্ধান্তের কারণে শেয়ারবাজারে চরম অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে। তাদের দাবি, সম্প্রতি প্রকাশিত খসড়া বিধিমালা দুটিতে এমন সব কঠোর বিধান অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যা বিনিয়োগকারী, মিউচুয়াল ফান্ড খাত এবং সার্বিকভাবে শেয়ারবাজারের জন্য ক্ষতিকর প্রভাব ফেলবে।
মিউচুয়াল ফান্ড বিনিয়োগকারী ঐক্য ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক জহুরুল হক জুয়েল বলেন, বিএসইসি দেশের বর্তমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বাস্তবতা উপেক্ষা করে একের পর এক কঠোর নীতি নিচ্ছে, যা বাজারে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে। তিনি অভিযোগ করেন, কোনো নীতিমালা প্রণয়নের আগে কমিশন সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা পর্যন্ত করছে না, যার ফলে বাজার থেকে ইতোমধ্যে হাজার হাজার কোটি টাকার মার্কেট ক্যাপিটাল উধাও হয়ে গেছে এবং অসংখ্য বিনিয়োগকারী দেউলিয়া হয়ে পড়েছেন।
একজন ক্ষুব্ধ বিনিয়োগকারী অভিযোগ করেন, কঠোর প্রভিশনিং নীতির কারণে মিউচুয়াল ফান্ড বিনিয়োগকারীরা টানা দুই বছর কোনো ডিভিডেন্ড পাচ্ছেন না। এরপরও কমিশন এসব ফান্ড জোরপূর্বক বন্ধ করার উদ্যোগ নিচ্ছে। তিনি বলেন, এই ফান্ডগুলো তাদের নিজস্ব বিনিয়োগ করা, যা তারা ঝুঁকি বুঝেই বিনিয়োগ করেছিলেন, তাই বিএসইসি-এর এই ফান্ডগুলো জোরপূর্বক বন্ধ করার কোনো অধিকার নেই।
মার্জিন বিধিমালার শর্তগুলো নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিনিয়োগকারীরা। আরেকজন বিনিয়োগকারী বলেন, নতুন মার্জিন রুলসে মার্জিন ঋণ কেবল ‘এ’ ক্যাটাগরির শেয়ারের মধ্যে সীমাবদ্ধ করা হয়েছে। কোনো শেয়ার ‘বি’ বা ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে নেমে গেলে দ্রুত বিক্রির বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়েছে, এমনকি দাম কমে গেলে জোরপূর্বক বিক্রির বিধানও রাখা হয়েছে। তাদের আশঙ্কা, এই বিধানগুলো বাস্তবায়িত হলে বিনিয়োগকারী ও ব্রোকারেজ হাউস উভয়েই মারাত্মক ঝুঁকিতে পড়বে।
ক্যাপিটাল মার্কেট ইনভেস্টর অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক শেখ মেহেদী ফারহান বলেন, বিনিয়োগকারী সংস্কারের নামে বিএসইসি-এর কয়েকজন কর্মকর্তা এমন উদ্ভট নীতিমালা প্রণয়ন করছেন, যা লক্ষাধিক বিনিয়োগকারীর ক্ষতি ডেকে আনবে। তিনি অভিযোগ করেন, ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের নাম ভাঙিয়ে আসলে কমিশন নিজেদের স্বার্থসিদ্ধি করছে। তিনি কমিশনকে আহ্বান জানান—আগে বাজারে আস্থা ফিরিয়ে আনুন, তারপর সংস্কারের কথা বলুন।
বাংলাদেশ ক্যাপিটাল মার্কেট ইনভেস্টরস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মানিক বলেন, বিএসইসি-এর খসড়া মার্জিন রুলসে শুভংকরের ফাঁকি রয়েছে, যার কারণে বড় বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রি করে বাজার থেকে সরে যাচ্ছেন। বিক্ষোভকারীরা বিএসইসি-এর বিতর্কিত বিধিমালা পুনর্বিবেচনার দাবি জানান এবং বিনিয়োগকারীদের মতামত নিয়ে নতুন নীতিমালা প্রণয়নের আহ্বান জানিয়েছেন।
এএসএম/
শেয়ারবাজারের বিশ্লেষণ ও ইনসাইড স্টোরি পেতে আমাদের পেজ ফলো করুন।
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- খেলোয়াড়দের নিয়ন্ত্রণে শেয়ারবাজার, অসহায় নিয়ন্ত্রক সংস্থা
- ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে কেডিএস এক্সেসরিজ
- ঘোষণা দিয়েও শেয়ারহোল্ডারদের ডিভিডেন্ড দেয়নি ১৭ কোম্পানি
- ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে স্কয়ার টেক্সটাইল
- শেয়ারবাজারে হাহাকার, ৮ দিনে ৪২ হাজার কোটি টাকা গায়েব!
- ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে মুন্নু এগ্রো
- লাফার্জহোলসিমের অন্তর্বর্তীকালিন ডিভিডেন্ড ঘোষণা
- ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে শমরিতা হাসপাতাল
- বস্ত্র খাতের ৮ কোম্পানিতে বেড়েছে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ
- মার্জিন ঋণ নিয়ে গুজব, বিনিয়োগকারীদের আতঙ্কিত না হওয়ার আহ্বান বিএসইসির
- লাফার্জ হোলসিমের উচ্চ মুনাফার 'অ্যাগ্রিগেটস' ব্যবসা
- পতন তান্ডবে শেয়ারবাজারে ছোটদের কফিনেও বড় পেরেক!
- শেয়ারবাজারে সচেতনতা বাড়াতে এবার যুক্ত হচ্ছে মাঠ প্রশাসন
- চলতি সপ্তাহে ঘোষণা আসছে ১৭ কোম্পানির ডিভিডেন্ড
- ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে বিএসআরএম লিমিটেড