ঢাকা, মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫, ৬ কার্তিক ১৪৩২

গুমের মামলায় শেখ হাসিনাসহ ২৮ জনকে আদালতে হাজিরের নির্দেশ

২০২৫ অক্টোবর ২১ ২১:২৫:২২

গুমের মামলায় শেখ হাসিনাসহ ২৮ জনকে আদালতে হাজিরের নির্দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক: আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক জারি করা গ্রেফতারি পরোয়ানার ভিত্তিতে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ২৮ জন আসামিকে বুধবার (২২ অক্টোবর) আদালতে হাজির করার কথা রয়েছে। আওয়ামী লীগ শাসনামলে সংঘটিত গুমের দুটি পৃথক মামলায় এই পরোয়ানা জারি করা হয়েছিল, যেখানে বিভিন্ন বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাও অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন।

আগামীকাল বুধবার এই মামলাগুলোর শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে, তবে আসামিদের ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। প্রসিকিউটর গাজী মোহাম্মদ মনোয়ার হোসেন তামিম সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, যাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে, তারা চাইলে স্বেচ্ছায় হাজির হতে পারেন অথবা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের গ্রেফতার করে হাজির করতে পারে। ট্রাইব্যুনাল তাদের জামিন মঞ্জুর করতে পারেন অথবা কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিতে পারেন। যদি তাদের জেল হাজতে পাঠানোর আদেশ হয়, তবে কারা কর্তৃপক্ষ কারাগার নির্ধারণ করবে।

যদি আসামিরা হাজির না হন বা তাদের হাজির করা না হয়, তাহলে দুটি জাতীয় পত্রিকায় (বাংলা ও ইংরেজি) বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে তাদের হাজিরার জন্য নতুন তারিখ নির্ধারণ করা হবে বলে প্রসিকিউটর জানান। গ্রেফতারের বিষয়ে প্রসিকিউশনের কাছে কোনো তথ্য নেই, তবে ট্রাইব্যুনালের কাছে তথ্য থাকলে তা আগামীকাল জানানো হতে পারে।

প্রসিকিউটর আরও বলেন, সাবেক বিচারপতি, সাবেক মন্ত্রী ও সেনা কর্মকর্তাসহ বহু আসামিকে ট্রাইব্যুনালে আনা হচ্ছে এবং গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পর আসামির পরিচয় দেখা হয় না।

এর আগে, প্রসিকিউশন (রাষ্ট্রপক্ষ) গুমের দুই মামলার আনুষ্ঠানিক অভিযোগ ট্রাইব্যুনালে দাখিল করে। চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম অভিযোগগুলো উপস্থাপন করলে ট্রাইব্যুনাল তা আমলে নিয়ে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।

প্রথম অভিযোগটি হলো, গত ১৫ বছরে র‌্যাবের কিছু সদস্য কর্তৃক টিএফআই সেল ও বিভিন্ন গোপন বন্দিশালায় ভিন্নমতাবলম্বী রাজনৈতিক কর্মী, সাংবাদিক ও ব্লগারকে আটক রেখে নির্যাতন করা হয়েছে। দ্বিতীয় অভিযোগটি ডিজিএফআইয়ের কিছু সদস্য কর্তৃক জেআইসি সেন্টার অপব্যবহার করে রাজনৈতিক বা অরাজনৈতিক ব্যক্তিদের আটক রাখার বিষয়ে। এই দুই মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, শেখ হাসিনার সাবেক নিরাপত্তা উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিকসহ র‍্যাব ও ডিজিএফআইয়ের বেশ কিছু কর্মকর্তাকে আসামি করা হয়েছে।

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটে এবং তিনি দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেন। তার সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ও তারিক সিদ্দিকও বর্তমানে বিদেশে অবস্থান করছেন। অভ্যুত্থানের পর গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার শেখ হাসিনার শাসনামলে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে করার সিদ্ধান্ত নেয়।

এসপি

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত