ঢাকা, সোমবার, ২০ অক্টোবর ২০২৫, ৫ কার্তিক ১৪৩২

অন্তর্বর্তী সরকার থাকবে আরও দুই বছর: ইকবাল করিম ভূঁইয়া

২০২৫ অক্টোবর ২০ ১৮:৫২:১৩

অন্তর্বর্তী সরকার থাকবে আরও দুই বছর: ইকবাল করিম ভূঁইয়া

মো: আবু তাহের নয়ন :সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল (অব.) ইকবাল করিম ভূঁইয়া বলেছেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশের ক্ষমতায় আরও এক থেকে দুই বছর থাকতে পারে। তিনি এই বক্তব্য দিয়েছেন সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং ভবিষ্যৎ নির্বাচনের সম্ভাবনা বিশ্লেষণ করে। তার মতে, এই সময়কাল রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, দেশের অর্থনীতি এবং দলীয় শক্তির পুনর্বিন্যাসের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে।

জেনারেল (অব.) ইকবাল করিম ভূঁইয়া আরও উল্লেখ করেছেন যে, এরপর নির্বাচনে বিএনপির ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে বিএনপি পুরো মেয়াদ সফলভাবে পালন করতে পারবে কি না, তা কিছুটা নির্ভর করবে ভারতের কৌশলগত অবস্থান এবং কিছুটা আওয়ামী লীগের প্রত্যাবর্তন ও শক্তি সঞ্চয়ের ওপর। তিনি সতর্ক করেছেন, যদি বিএনপি তার বিরুদ্ধে পরিচালিত পরিকল্পিত সহিংসতা-বিরোধী আন্দোলন দমন করতে ব্যর্থ হয়, তবে দেশে ১/১১-এর পুনরাবৃত্তি ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে।

তিনি নিজের ফেসবুক পেজে ‘আগামী পাঁচ বছরে আমরা কোথায় যাচ্ছি?’ শিরোনামের ধারাবাহিক লেখার শেষ অংশে সোমবার এই মন্তব্য প্রকাশ করেছেন। এই পোস্টে তিনি দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট, নির্বাচনের প্রক্রিয়া এবং অন্তর্বর্তী সরকারের সম্ভাব্য ভূমিকা বিশদভাবে তুলে ধরেছেন।

ইকবাল করিম ভূঁইয়া ফেসবুক পোস্টে আরও লিখেছেন, “অদক্ষতা, আইন-শৃঙ্খলার অবনতির কারণে বা ছাত্রচাপের মুখে সংস্কার-মিশনে হস্তক্ষেপ করলে নির্বাচন অনুষ্ঠিত না হয়ে অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় থাকতে পারে। তখন দুর্বল মন্ত্রীরা পরিবর্তিত হবে এবং ড. ইউনূসকে প্রেসিডেন্ট করে একটি ঐকমত্যভিত্তিক জাতীয় সরকার গঠিত হতে পারে।”

তিনি দেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থায় সম্ভাব্য অস্থিরতারও কথা উল্লেখ করেছেন। তার মতে, সংবিধান পরিবর্তনের ক্ষীণ গুঞ্জন উচ্চকিত হলে, আগামী পাঁচ বছর গণপরিষদের নির্বাচন, সংবিধান প্রণয়ন ও গণভোটের মধ্যে যাবে। এই সময়কাল দেশের জন্য রাজনৈতিক উত্তেজনা, প্রতিবাদ, আন্দোলন, হরতাল-অবরোধ এবং সহিংসতার মধ্য দিয়ে অতিবাহিত হতে পারে।

সাবেক সেনাপ্রধান দেশের অর্থনীতির বর্তমান অবস্থার প্রতি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি উল্লেখ করেছেন, “এই পাঁচ বছরের মধ্যে পঙ্গু অর্থনীতি দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য আরও বিপদ সৃষ্টি করবে। সামাজিক-অর্থনৈতিক সূচকে বাংলাদেশ ক্রমাগত পিছিয়ে যাবে, যা দেশের সার্বিক উন্নয়ন ও স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াবে।”

তিনি আরও বলেছেন, রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং ক্ষমতার চলমান সংঘর্ষ দেশের অভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। এর ফলে প্রশাসনিক কার্যক্রমের সুষ্ঠু পরিচালনা বাধাগ্রস্ত হবে এবং জনগণের সাধারণ জীবনযাত্রা প্রভাবিত হবে। তিনি দেশের রাজনৈতিক দলগুলোকে সতর্ক করেছেন যে, দীর্ঘমেয়াদি অস্থিরতা দেশকে পিছিয়ে নিয়ে যাবে।

শেষে জেনারেল (অব.) ইকবাল করিম ভূঁইয়া সতর্ক করে বলেছেন, এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় সকল রাজনৈতিক পক্ষকে সংলাপ, সমঝোতা এবং সংবিধানিক নিয়মকানুন মেনে কাজ করতে হবে। অন্যথায়, দেশে পুনরায় ক্ষমতার অস্থির হস্তান্তর এবং রাজনৈতিক সংকটের পুনরাবৃত্তি ঘটতে পারে, যা জাতীয় অগ্রগতি ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য মারাত্মক প্রভাব ফেলবে।

ডুয়া/নয়ন

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত