ঢাকা, সোমবার, ২০ অক্টোবর ২০২৫, ৫ কার্তিক ১৪৩২

৯ নং গেটে আমদানির স্থবিরতা, ব্যবসায়ীদের বাড়ছে শঙ্কা 

২০২৫ অক্টোবর ২০ ১৪:৩৫:১০

৯ নং গেটে আমদানির স্থবিরতা, ব্যবসায়ীদের বাড়ছে শঙ্কা 

নিজস্ব প্রতিবেদক:হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে গত শনিবার (১৮ অক্টোবর) দুপুর আড়াইটার দিকে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ায় ফায়ার সার্ভিসের ৩৭টি ইউনিট ঘটনাস্থলে এসে তৎপরভাবে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। দীর্ঘ সময়ের প্রচেষ্টায় পরের দিন রোববার ফায়ার সার্ভিস আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং নির্বাপন করে। তবে এই অগ্নিকাণ্ডের কারণে বিমানবন্দরের কার্গো সেকশনে আমদানি পণ্য খালাস প্রক্রিয়া সম্পূর্ণরূপে বন্ধ রয়েছে, যা আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীদের জন্য বড় ধরনের জটিলতা সৃষ্টি করেছে।

আগুনের পরপরই কর্তৃপক্ষ বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ করে এবং শনিবার কাস্টমস হাউস কমিশনার মো মসিউর রহমান স্বাক্ষরিত একটি চিঠিতে জানানো হয়, আমদানি পণ্য খালাসের কাজ ৯ নং গেট থেকে পরিচালিত হবে। এ নির্দেশনা অনুসারে, সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের দ্রুত কার্যক্রম শুরু করার জন্য সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়। কিন্তু মঙ্গলবার (২০ অক্টোবর) সকাল থেকে ৯ নং গেটের সামনে অপেক্ষমান আমদানিকারক, সিএন্ডএফ এজেন্ট ও কুরিয়ার প্রতিনিধিরা কোনো কার্যক্রম শুরু না হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছেন।

বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজ থেকে কয়েকটি ভিন্ন ভিন্ন গেট দিয়ে কিছু কিছু পণ্য খালাস করা হলেও ঘোষিত ৯ নং গেট থেকে পণ্য খালাসের বিষয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। অপেক্ষমান প্রতিনিধিরা জানান, ভারী পণ্য পরিবহনের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি যেমন হাইস্টার বা ফর্কলিফটের অনুপস্থিতি এবং লজিস্টিক ব্যবস্থার অভাবে কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হয়নি। ফলে, এই পরিস্থিতিতে পণ্য খালাসে বিলম্ব ঘটছে, যা আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে উদ্বেগ ও ক্ষোভ তৈরি করেছে।

কার্গো ভিলেজে আগুনের কারণে ব্যবসায়িক ক্ষতি বাড়ার আশঙ্কা প্রকট হয়েছে। আমদানিকারকরা জানান, পণ্যসমূহ দ্রুত খালাস না হলে বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে। বিশেষ করে যারা সময়োপযোগী সরবরাহ ও ব্যবসায়িক চেইন মেনে কাজ করেন তাদের জন্য এই বিলম্ব গুরুতর সমস্যা সৃষ্টি করছে। এই কারণে তারা বিমান ও কাস্টমস কর্তৃপক্ষকে দ্রুত কার্যক্রম শুরু করার আহ্বান জানিয়েছেন।

কাস্টমস হাউস কমিশনার মো মসিউর রহমানের চিঠিতে সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষকে দ্রুত পণ্য খালাস প্রক্রিয়া চালানোর নির্দেশনা দেওয়া হলেও, প্রশাসনিক জটিলতা এবং প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের অভাব এখনো বড় প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ব্যবসায়ীরা আশঙ্কা করছেন, এভাবে পণ্য খালাসে দীর্ঘ সময় লম্বা হলে আন্তর্জাতিক বাজারে তাদের ব্যবসায়িক মান হারাতে পারে।

বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কার্গো ভিলেজে আগুনের ফলে সৃষ্ট ক্ষয়ক্ষতি দ্রুত মোকাবিলা করার চেষ্টা চলছে এবং প্রয়োজনীয় অবকাঠামোগত সংস্কারসহ নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হচ্ছে। তবে এখনও পর্যন্ত কার্যক্রম স্বাভাবিক না হওয়ায় আমদানিকারক ও এজেন্টদের মধ্যে অসন্তোষ বাড়ছে।

আগামীদিনগুলোতে ৯ নং গেটে কার্যক্রম শুরু না হলে ব্যবসায়ীদের আর্থিক ক্ষতি আরও বাড়তে পারে। এজন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি তারা দ্রুত ও কার্যকর সমাধানের প্রত্যাশা করছেন।

ডুয়া/নয়ন

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত