জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠান শুরু, যোগ দিলেন প্রধান উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক: ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) বিকেল ৪টা ৩০ মিনিটে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে তিনি উপস্থিত থাকেন। স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বেশ কয়েকজন উপদেষ্টা ও উচ্চ পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গত ফেব্রুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত দুই পর্বে রাজনৈতিক দল ও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করে মোট ৮৪টি সংস্কার প্রস্তাব চূড়ান্ত করেছে। গত বছরের আগস্টে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর রাষ্ট্রের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়। প্রথম ধাপে গঠিত ৬টি সংস্কার কমিশন সংবিধান, নির্বাচনব্যবস্থা, জনপ্রশাসন, দুর্নীতি দমন, পুলিশ ও বিচার বিভাগ সংক্রান্ত প্রস্তাবগুলো নিয়ে দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করা হয়। প্রথম পর্বে ৩৩টি, দ্বিতীয় পর্বে ৩০টি দলের সঙ্গে আলোচনা শেষে ঐকমত্য ও সিদ্ধান্তে আসে।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গত ১৬ আগস্ট রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে জুলাই সনদের খসড়া পাঠায়। খসড়ায় কিছু ত্রুটি থাকায় তা সংশোধন করে নির্ভুল খসড়া পুনরায় পাঠানো হয়। এরপর রাজনৈতিক দলগুলোকে খসড়ার ওপর মতামত জানানোর সময় ২২ আগস্ট পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়। তার পর আবারও নানা বিষয় নিয়ে রাজনৈতিক দল এবং বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করে চূড়ান্ত কপি প্রস্তুত করা হয়। গত মঙ্গলবার সনদের চূড়ান্ত কপি সব রাজনৈতিক দলের কাছে তুলে দেওয়া হয়।

স্বাক্ষর অনুষ্ঠান চলাকালীন সকাল থেকেই সংসদ ভবন এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছিল। জুলাই অভ্যুত্থানে আহত ছাত্র-জনতাকে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি এবং তাদের বীর হিসেবে স্বীকৃতি প্রদানের দাবিতে সকাল থেকেই জুলাই যোদ্ধারা অনুষ্ঠানস্থলে অবস্থান নেন। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ এই দাবির বিষয় নিশ্চিত করলেও তাদের সরে যাওয়ার আহ্বান জানান। আন্দোলনকারীরা তাদের অবস্থান ধরে রাখলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তাদের সংসদ ভবন এলাকা থেকে সরিয়ে দেয় এবং ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলে।

এই স্বাক্ষর অনুষ্ঠান ঐতিহাসিক গুরুত্বের হিসেবে দেখা হচ্ছে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশন দীর্ঘ আলোচনা ও সমন্বয়ের মাধ্যমে সকল দলের মতামত পর্যালোচনা করে জুলাই সনদে অন্তর্ভুক্ত করেছে। অনুষ্ঠান চলাকালীন উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা নিরাপত্তা, অতিথি ব্যবস্থাপনা এবং সমন্বয় কার্যক্রমে নজর রাখেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উপদেষ্টা ও উচ্চ পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তা ছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি।

ইএইচপি