ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫, ১ কার্তিক ১৪৩২

চাকসু নির্বাচন: ভিপি ইব্রাহিম, জিএস সাঈদ

২০২৫ অক্টোবর ১৬ ০৬:৪৩:৪৭

চাকসু নির্বাচন: ভিপি ইব্রাহিম, জিএস সাঈদ

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশের ছাত্র রাজনীতিতে এক আলোড়ন সৃষ্টিকারী ঘটনা ঘটল চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদে (চাকসু)। দীর্ঘ ৪৪ বছরের বিরতির পর এই ছাত্র সংসদের নেতৃত্বে ফিরল ইসলামী ছাত্রশিবির। সংগঠনটির সমর্থিত প্যানেল ‘সম্প্রীতির শিক্ষার্থী জোট’-এর প্রার্থীরা ভিপি (সহসভাপতি), জিএস (সাধারণ সম্পাদক) সহ মোট ২৪টি পদে নিরঙ্কুশ জয়লাভ করেছেন।

বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) ভোর সাড়ে চারটায় সপ্তম চাকসু নির্বাচনের ফল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মনির উদ্দিন। তিনি ফলাফলের সময় বলেন, "শান্তিপূর্ণ পরিবেশে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন হয়েছে। প্রার্থী ও ভোটাররা নির্বাচনে অসাধারণ উৎসবমুখর অংশগ্রহণ করেছেন।" এই নির্বাচনকে ঘিরে পুরো বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে ছিল এক উৎসবমুখর পরিবেশ।

ঘোষিত ফল অনুযায়ী, ভিপি (সহসভাপতি) পদে ছাত্রশিবিরের মো. ইব্রাহিম হোসেন ৭ হাজার ৯৮৩ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি সংগঠনটির চট্টগ্রাম মহানগর দক্ষিণের সভাপতি এবং ইতিহাস বিভাগের এমফিলের শিক্ষার্থী। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন ছাত্রদলের সাজ্জাদ হোসেন, যিনি পেয়েছেন ৪ হাজার ৩৭৪ ভোট। অন্যদিকে, জিএস (সাধারণ সম্পাদক) পদেও বিজয়ী হয়েছেন একই প্যানেলের সাঈদ বিন হাবিব। তিনি ৮ হাজার ৩১ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। সাঈদ বিন হাবিব বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের সাহিত্য সম্পাদক এবং ইতিহাস বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদলের মো. শাফায়াত পেয়েছেন ২ হাজার ৭৩৪ ভোট।

চাকসুতে মোট ২৬টি পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এর মধ্যে মাত্র দুটি পদে জয় পেয়েছে ছাত্রদলের প্যানেল ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। ছাত্রদলের প্যানেলের প্রার্থী আইয়ুবুর রহমান এজিএস (সহসাধারণ সম্পাদক) পদে ৭ হাজার ১৪ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। এই পদে তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রশিবির প্যানেলের সাজ্জাদ হোছন পেয়েছিলেন ৫ হাজার ৪৫ ভোট। এছাড়া সহ খেলাধুলা ও ক্রীড়া সম্পাদক পদে জিতেছেন তামান্না মাহবুব নামের এক ছাত্রী। বাকি সবগুলো পদই নিশ্চিত করেছে শিবির-সমর্থিত প্যানেল।

প্রসঙ্গত, চাকসুতে ইসলামী ছাত্রশিবিরের সর্বশেষ জয় এসেছিল সেই ১৯৮১ সালে। সেই নির্বাচনে ভিপি পদে জয়ী হয়েছিলেন জসিম উদ্দিন সরকার এবং জিএস পদে নির্বাচিত হয়েছিলেন আবদুল গাফফার। তাঁরা দুজনই ছিলেন ইসলামী ছাত্রশিবিরের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার তৎকালীন নেতা। এরপর দীর্ঘ ৪৪ বছর পর আবারও শিবির–সমর্থিত প্রার্থীরা সেই নেতৃত্বের আসনে ফিরে এলেন, যা চাকসু নির্বাচনের ইতিহাসে একটি নজিরবিহীন প্রত্যাবর্তন হিসেবে চিহ্নিত হলো।

এএসএম/

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত