ঢাকা, সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫, ২৮ আশ্বিন ১৪৩২

বিকাশ-নগদ-রকেট থেকে সরাসরি ব্যাংকে টাকা: লাগবে অতিরিক্ত খরচ

সরকার ফারাবী
সরকার ফারাবী

রিপোর্টার

২০২৫ অক্টোবর ১৩ ২১:০০:৪৩

বিকাশ-নগদ-রকেট থেকে সরাসরি ব্যাংকে টাকা: লাগবে অতিরিক্ত খরচ

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশে নগদ অর্থ লেনদেনের ওপর নির্ভরতা কমাতে এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিল বাংলাদেশ ব্যাংক। আগামী ১ নভেম্বর থেকে জাতীয় পেমেন্ট সুইচ বাংলাদেশ (এনপিএসবি)-এর মাধ্যমে ব্যাংক, মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) ও পেমেন্ট সার্ভিস প্রোভাইডারদের (পিএসপি) মধ্যে সরাসরি আন্তঃলেনদেন (ইন্টারঅপারেবল ট্র্যানজেকশন) ব্যবস্থা চালু হতে যাচ্ছে। এই ঘোষণার ফলে এখন গ্রাহকরা ব্যাংক থেকে বিকাশ, নগদ, রকেট বা অন্য এমএফএস অ্যাকাউন্টে তাৎক্ষণিকভাবে টাকা পাঠাতে পারবেন।

আজ সোমবার (১৩ অক্টোবর) বাংলাদেশ ব্যাংকের পেমেন্ট সিস্টেমস ডিপার্টমেন্ট এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে, এনপিএসবি প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে ব্যাংক, এমএফএস এবং পিএসপি প্রতিষ্ঠানগুলো একক প্ল্যাটফর্মে যুক্ত থাকবে।

আন্তঃলেনদেনের ফি কাঠামো

ইন্টারঅপারেবল ব্যবস্থায় অর্থ প্রেরণের ক্ষেত্রে গ্রাহককে একটি নির্দিষ্ট হারে ফি দিতে হবে, তবে প্রাপকের কাছ থেকে কোনো চার্জ নেওয়া যাবে না। সার্কুলার অনুযায়ী, অর্থ প্রেরণের আগে গ্রাহককে এই ফি সম্পর্কে অবহিত করতে হবে এবং তা প্রেরকের হিসাব থেকে কর্তন করা হবে।

ফি-এর হার হবে সর্বোচ্চ:

ব্যাংক থেকে টাকা পাঠালে: প্রেরক ব্যাংক সর্বোচ্চ ০.১৫% চার্জ নিতে পারবে (যেমন: ১,০০০ টাকা পাঠাতে সর্বোচ্চ ১ টাকা ৫০ পয়সা)।

পেমেন্ট সার্ভিস প্রোভাইডার (পিএসপি) থেকে মোবাইলে টাকা পাঠালে: পিএসপি সর্বোচ্চ ০.২০% চার্জ নিতে পারবে (যেমন: ১,০০০ টাকা পাঠাতে সর্বোচ্চ ২ টাকা)।

এমএফএস প্রতিষ্ঠান (বিকাশ, নগদ, রকেট) থেকে ব্যাংকে টাকা পাঠালে: এমএফএস প্রতিষ্ঠান সর্বোচ্চ ০.৮৫% চার্জ নিতে পারবে (যেমন: ১,০০০ টাকা পাঠাতে সর্বোচ্চ ৮ টাকা ৫০ পয়সা)।

ক্যাশলেস ইকোনমি ও সুবিধা

বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, এই উদ্যোগের ফলে দেশের ক্যাশলেস সোসাইটি গঠনের পথ আরও সুগম হবে। নগদ অর্থ ব্যবহারের ওপর নির্ভরতা কমে যাবে এবং ব্যক্তি থেকে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান থেকে প্রতিষ্ঠানের মধ্যে লেনদেন হবে আরও দ্রুত, নিরাপদ ও স্বচ্ছ।

আরও পড়ুন-

১৩ অক্টোবর: এক নজরে শেয়ারবাজারের ১৯ খবর

সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর এক অনুষ্ঠানে জানিয়েছিলেন, অর্থনৈতিক লেনদেনের জন্য শুধু কাগজের নোট ছাপাতেই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বছরে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা খরচ হয়। এর পাশাপাশি রয়েছে নোট পরিবহনের ঝুঁকি, সময় অপচয় এবং সংক্রামক রোগের আশঙ্কা। অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, এই পদক্ষেপ ডিজিটাল আর্থিক অন্তর্ভুক্তিকে ত্বরান্বিত করবে, গ্রামীণ অর্থনীতিতে ডিজিটাল লেনদেনের সুযোগ বাড়াবে, এবং সরকারের রাজস্ব আয় বৃদ্ধি ও দুর্নীতিরোধে সহায়ক হবে।

উল্লেখ্য, বর্তমানে দেশে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদনপ্রাপ্ত মোট ১৩টি মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) প্রতিষ্ঠান এবং নয়টি পেমেন্ট সার্ভিস প্রোভাইডার (পিএসপি) প্রতিষ্ঠান কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত