ঢাকা, বুধবার, ৮ অক্টোবর ২০২৫, ২৩ আশ্বিন ১৪৩২
শেয়ারবাজার মন্দা, তবুও কেন উদ্যোক্তা পরিচালকরা শেয়ার ছাড়ছেন?

আবু তাহের নয়ন
সিনিয়র রিপোর্টার

আবু তাহের নয়ন: শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর উদ্যোক্তা পরিচালকরা বাজারের অস্থিরতার মধ্যেও শেয়ার বিক্রির ধারা অব্যাহত রেখেছেন। সর্বশেষ মঙ্গলবার (০৭ অক্টোবর) মার্চেন্টাইল ব্যাংক এবং সাউথইস্ট ব্যাংকের দুই প্রভাবশালী উদ্যোক্তা পরিচালক তাদের হাতে থাকা বিপুল সংখ্যক শেয়ার বিক্রি করার ঘোষণা দিয়েছেন। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ওয়েবসাইটে প্রকাশিত পৃথক ঘোষণায় জানানো হয়েছে, মার্চেন্টাইল ব্যাংকের মোঃ মিজানুর রহমান চৌধুরী এবং সাউথইস্ট ব্যাংকের রেহানা কাসেম আগামী ৩০ অক্টোবরের মধ্যে বাজারে তাদের অংশবিশেষ শেয়ার ছাড়বেন। এমন সময়ে স্পন্সরদের শেয়ার বিক্রি বাজারে ব্যাংক দুটির আর্থিক অবস্থা এবং ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।
মার্চেন্টাইল ব্যাংক
মার্চেন্টাইল ব্যাংকের উদ্যোক্তা পরিচালক মিজানুর রহমান আগামী ৩০ অক্টোবরের মধ্যে ১ লাখ ৮৯ হাজার শেয়ার বিক্রি করতে চান। ডিএসই-এর মাধ্যমে বর্তমান বাজার দরে এই বিক্রির আনুমানিক মূল্য হবে ১৭ লাখ টাকা। বর্তমানে তার কাছে ৬১ লাখ ৮৯ হাজার শেয়ার রয়েছে।
ব্যাংকটির আর্থিক পারফরম্যান্স বর্তমানে অনেকটাই দুর্বল। ২০২৪ অর্থবছরে ব্যাংকটির মুনাফা ছিল ৬৪ কোটি ৬৮ লাখ টাকা, যেখানে আর্নিংস পার শেয়ার (ইপিএস) ছিল মাত্র ৫৮ পয়সা। এটি পূর্ববর্তী ২০২৩ সালের ইপিএস ১ টাকা ৮৬ পয়সা (২০৫ কোটি ৮২ লাখ টাকা মুনাফা) থেকে ৬৪ শতাংশ কম। এই দুর্বলতার কারণে ব্যাংকটি ২০২৪ সালের জন্য কোনো ডিভিডেন্ড ঘোষণা করতে পারেনি। যদিও ২০২৫ সালের প্রথমার্ধে ব্যাংকটির ইপিএস ৮ শতাংশ কমে ১ টাকা ৮২ পয়সা হয়েছে, যা প্রভিশন করার পর মুনাফা কমার ইঙ্গিত দেয়।
সাউথইস্ট ব্যাংক
সাউথইস্ট ব্যাংকের ক্ষেত্রে উদ্যোক্তা পরিচালক রেহানা কাসেমের শেয়ার বিক্রির প্রবণতা ধারাবাহিকভাবে অব্যাহত রয়েছে। তিনি আগামী ৩০ অক্টোবরের মধ্যে ডিএসই-এর মাধ্যমে ১০ লাখ শেয়ার বিক্রি করার পরিকল্পনা করেছেন। এই বিক্রির মূল্য হবে আনুমানিক ৯২ লাখ টাকা। বর্তমানে তার কাছে ৪৭ লাখ ২৭ হাজার শেয়ার রয়েছে।
উল্লেখ্য, রেহানা কাসেম এর আগে ২৪ সেপ্টেম্বর ১৫ লাখ ৯৬ হাজার শেয়ার বিক্রি করেছিলেন এবং ২০২৩ সালেও ৭ লাখ শেয়ার বিক্রি করেছিলেন। উদ্যোক্তা পরিচালকের এই ধারাবাহিক অফলোড বাজারে নেতিবাচক জল্পনা বাড়াচ্ছে।
সাউথইস্ট ব্যাংকও ২০২৪ অর্থবছরে উচ্চ প্রভিশনিংয়ের কারণে তীব্র মুনাফা হ্রাসের সম্মুখীন হয়েছিল। ব্যাংকটি সমন্বিত ইপিএস ৩২ পয়সা দেখিয়েছিল (২০২৩ সালে ছিল ১ টাকা ৬০ পয়সা), যার ফলস্বরূপ তারা ২০২৪ সালের ডিভিডেন্ড দেওয়া থেকে বিরত থাকে। তবে ২০২৫ সালের প্রথমার্ধে ব্যাংকটির সমন্বিত ইপিএস ১০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ১ টাকা হয়েছে, যা সামান্য উন্নতির ইঙ্গিত দেয়।
দুই ব্যাংকের আর্থিক দুর্বলতা এবং উদ্যোক্তা পরিচালকদের শেয়ার বিক্রির ঘোষণা এই মুহূর্তে বাজারের স্থিতিশীলতা এবং বিনিয়োগকারীদের মনোবলের জন্য একটি কঠিন চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে। বিনিয়োগকারীদের এই ধরনের ঘোষণাগুলোর প্রভাব সতর্কতার সাথে বিশ্লেষণ করা উচিত।
এএসএম/
শেয়ারবাজারের বিশ্লেষণ ও ইনসাইড স্টোরি পেতে আমাদের পেজ ফলো করুন।
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- বাংলাদেশ বনাম আফগানিস্তান, সরাসরি দেখবেন যেভাবে
- ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে শেয়ারবাজারের ৮ কোম্পানি
- বাংলাদেশ বনাম ইংল্যান্ড, সরাসরি দেখবেন যেভাবে
- শেয়ারবাজারে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিএসইসি চেয়ারম্যানের যুগান্তকারী ঘোষণা
- ‘জেড’ থেকে ‘এ’ ক্যাটাগরিতে ফিরেছে তালিকাভুক্ত কোম্পানি
- আফগানিস্তান বনাম বাংলাদেশ, সরাসরি দেখবেন যেভাবে
- ডুবছে ওষুধের দুই কোম্পানি, বিনিয়োকারীদের কপালে চিন্তার ভাজ
- সাত কোম্পানির শেয়ারে কারসাজির গন্ধ!
- RSI এলার্ট: ১০ শেয়ারে বিপদ সংকেত
- উৎপাদন বন্ধ চার কোম্পানির শেয়ার নিয়ে সতর্কতা জারি
- জেডে নেমে তিন শেয়ারের ধস, বিনিয়োগকারীদের নিঃস্ব হওয়ার শঙ্কা
- শেয়ারবাজারের কোম্পানিতে কারসাজির গন্ধ! তদন্তে নেমেছে বিএসইসি
- মশিউর সিকিউরিটিজের গ্রাহকদের জন্য জরুরি নির্দেশনা
- ঢাবি শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দেবে জাপান, আবেদন করবেন যেভাবে
- ডিভিডেন্ড ঘোষণা করবে ২ কোম্পানি