ঢাকা, শুক্রবার, ৩ অক্টোবর ২০২৫, ১৮ আশ্বিন ১৪৩২

‘জাতিসংঘে গণতন্ত্র-মানবিক সংহতির অঙ্গীকার তুলে ধরেছেন ড. ইউনূস’

২০২৫ অক্টোবর ০৩ ২৩:২২:৫৯

‘জাতিসংঘে গণতন্ত্র-মানবিক সংহতির অঙ্গীকার তুলে ধরেছেন ড. ইউনূস’

নিজস্ব প্রতিবেদক: জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের অংশগ্রহণ বাংলাদেশের দায়িত্বশীল বৈশ্বিক ভূমিকাকে আরও সুদৃঢ় করেছে। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানিয়েছেন, এ সফরে গণতান্ত্রিক শাসন, মানবিক সংহতি ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতার প্রতি বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতি নতুনভাবে প্রতিফলিত হয়েছে।

শুক্রবার (৩ অক্টোবর) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে পোস্ট করা বার্তায় প্রেস সচিব জানান, অধ্যাপক ইউনূস গত সপ্তাহে নিউইয়র্কে জাতিসংঘের উচ্চপর্যায়ের অধিবেশনে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন।

সেখানে তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে উদ্দেশ করে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য প্রদান করেন, বিশ্বনেতাদের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন এবং গণতন্ত্র, মানবিক নেতৃত্ব ও অর্থনৈতিক সহযোগিতার বিষয়ে বাংলাদেশের দৃষ্টিভঙ্গি উপস্থাপন করেন।

শফিকুল আলম বলেন, ইউএনজিএতে প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশে গণতন্ত্র, স্বচ্ছতা ও অন্তর্ভুক্তিমূলক শাসনব্যবস্থার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি স্বাধীন, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের প্রস্তুতির কথাও তুলে ধরেছেন এবং বৈশ্বিক মহলকে আশ্বস্ত করেছেন যে বাংলাদেশ জনগণ ও আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সম্মিলিত গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ রক্ষায় প্রস্তুত।

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সফরে তিন রাজনৈতিক দলের ছয় প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। শফিকুল আলম বলেন, এটাই প্রথমবার যে এমন মর্যাদাপূর্ণ প্রতিনিধিদল একসঙ্গে সফরে যোগ দিয়েছে। তারা কূটনীতিক, প্রবাসী নেতৃবৃন্দ ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন, যা বিশ্বের কাছে শক্তিশালী বার্তা পৌঁছে দিয়েছে যে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক, স্বাধীন ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পথে একসাথে এগোচ্ছে।

সফরে অধ্যাপক ইউনূস ইতালি, ফিনল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস, পাকিস্তান, অস্ট্রেলিয়া, আলবেনিয়া, কসোভো ও ভুটানসহ বিভিন্ন দেশের নেতাদের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন। বৈঠকগুলোতে গণতান্ত্রিক শাসন, বাণিজ্য, জলবায়ু সহনশীলতা ও মানব উন্নয়ন বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দেওয়া হয়।

প্রধান উপদেষ্টা জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস, ইউএনএইচসিআর প্রধান ফিলিপো গ্রান্ডি, ইউনিসেফ নির্বাহী পরিচালক ক্যাথরিন রাসেল, জাতিসংঘ আন্ডার-সেক্রেটারি জেনারেল রাবাব ফাতিমা, বিশ্বব্যাংক প্রেসিডেন্ট অজয় বাঙ্গা, নেদারল্যান্ডসের রানি ম্যাক্সিমা ও আইএমএফ ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা-র সঙ্গে বৈঠক করেন। এছাড়া, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আয়োজিত নৈশভোজে অংশ নিয়ে শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।

রোহিঙ্গা সংকটে মানবিক নেতৃত্ব প্রসঙ্গে শফিকুল আলম জানান, প্রধান উপদেষ্টা নিরাপদ, স্বেচ্ছায় ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের ওপর গুরুত্ব দেন এবং বৈশ্বিক মনোযোগ ধরে রাখার আহ্বান জানান। যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য থেকে রোহিঙ্গাদের সহায়তায় ৯৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের প্রতিশ্রুতি আনা হয়।

এছাড়া বিদেশে কর্মসংস্থান ও শ্রমশক্তি রপ্তানির নতুন সুযোগ উন্মোচিত হয়েছে। কসোভো, আলবেনিয়া ও ইউরোপের অন্যান্য দেশের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় বাংলাদেশের শ্রমিকদের জন্য শ্রমবাজার সম্প্রসারণের সম্ভাবনা খুঁজে পাওয়া গেছে। প্রেস সচিব বলেন, এটি প্রবাসী আয় বাড়াতে এবং নতুন অংশীদার দেশের সঙ্গে জনগণের পারস্পরিক সম্পর্ক জোরদার করতে সহায়ক হবে।

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত