ঢাকা, রবিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৩ আশ্বিন ১৪৩২

'ইসির মেরুদণ্ড শক্ত না হলে নির্বাচন কঠিন হবে'

২০২৫ সেপ্টেম্বর ২৮ ২২:০৩:০৯

'ইসির মেরুদণ্ড শক্ত না হলে নির্বাচন কঠিন হবে'

নিজস্ব প্রতিবেদক: আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) মেরুদণ্ড শক্ত না হলে সব কিছুই কঠিন হবে বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাচনী সংলাপে অংশ নেওয়া বক্তারা। তারা বলেছেন, নির্বাচন কমিশনের যদি মেরুদণ্ড থাকে, যদি সাহস থাকে তবেই তারা স্বাধীন হতে পারবে।

রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) নির্বাচন ভবনে শিক্ষাবিদ, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও বুদ্ধিজীবীদের অংশগ্রহণে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে এই সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়।

নির্বাচন কমিশনকে সাহসী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস সাবেক প্রধান বিচারপতি ও নির্বাচন কমিশনারদের পরিণতির কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, "আপনারা সাবেক নির্বাচন কমিশনারদের পরিণতি দেখেছেন। তারা কিন্তু সেই সাহস ও মেরুদণ্ড দেখাতে পারেনি।" তিনি নির্বাচন কমিশনের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে বলেন, "যদি মেরুদণ্ড থাকে, যদি সাহস থাকে তবেই স্বাধীন হতে পারবেন।"

সংলাপ থেকে বেরিয়ে রোবায়েত ফেরদৌস সাংবাদিকদের জানান, সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করার ক্ষেত্রে সরকার বা সরকারের কোনো উপদেষ্টা যদি বাধা তৈরি করে, তাহলে নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব হবে তা মিডিয়ার সামনে প্রকাশ করা। সরকারের কোন কোন লোক এবং কোন কোন নীতিমালা সুষ্ঠু নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করছে, সেটাও স্পষ্ট করতে ইসিকে বলা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, "সবচেয়ে দরকার হচ্ছে ইসির সাহস এবং মেরুদণ্ড।"

তিনি আরও বলেন, "নির্বাচনে মিডিয়ার একটা অবাধ বিচরণ যেন থাকে। ভোটকেন্দ্র থেকে শুরু করে ভোটারদের জায়গা থেকে শুরু করে, ইলেকশন ক্যাম্পেইনে সর্বত্র যেন মিডিয়ার একটা ভিজিলেন্স যেন তৈরি করতে পারে সেটা বলেছি। এর মধ্য দিয়ে একটা ট্রান্সপারেন্সি তৈরি হবে।"

সাংবাদিক ও কলামিস্ট সোহরাব হাসান বলেন, এতদিন দেখে এসেছি যে সরকার নির্বাচন কমিশনের ওপর খবরদারি করে। তিনি বলেন, "আমরা বলেছি, নির্বাচন কমিশনকে এই শক্তি অর্জন করতে হবে, এই সাহস অর্জন করতে হবে, যাতে সরকারকে খবরদারি করতে পারে। কারণ শুধু নির্বাচন কমিশনের পক্ষে সুষ্ঠু, অবাধ ও স্বচ্ছ নির্বাচন করা সম্ভব নয়, যদি সরকার, রাজনৈতিক দল ও প্রার্থী সহযোগিতা না করে।"

সোহরাব হাসান রাজনৈতিক গণতন্ত্রায়নের পাশাপাশি অর্থনৈতিক গণতন্ত্রায়নের কথা বলেন, যাতে কালো টাকা ও পেশিশক্তির প্রভাব নির্বাচনে না থাকে। তিনি এটিকে নির্বাচন কমিশনের জন্য কঠিন পরীক্ষা উল্লেখ করে বলেন, "এই পরীক্ষায় জয়ী হলে সবাই অভিনন্দন জানাবে। আর জয়ী না হলে পূর্বসূরিদের কথা মনে রাখতে বলছি।"

নির্বাচন কমিশনকে সতর্ক করে সোহরাব হাসান বলেন, নির্বাচন হয় জনগণের ক্ষমতায়নের জন্যই। নির্বাচনে জনগণ বাছাই করবে তাদের প্রতিনিধি কে হবেন। কিন্তু সেই বাছাইয়ের যদি সুযোগ না থাকে, যেমনটা আমরা ২০২৪, ২০১৮ ও ২০১৪ সালের নির্বাচনে দেখেছি, এই নির্বাচনেও সেই বাছাইয়ের ক্ষেত্রে যদি কোনো ব্যত্যয় ঘটে, তাহলে নির্বাচন কমিশনকে শুধু কঠিন অবস্থার মধ্যে পড়তে হবে না, আগামী নির্বাচন যথেষ্ট প্রশ্নবিদ্ধ হবে।

তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, কিছু দল বাদ দিয়ে নির্বাচন করার প্রস্তুতি চলছে। একটি পক্ষকে নির্বাচন থেকে বাদ দেওয়ার কথা চলছে। প্রধান উপদেষ্টা সেরা নির্বাচনের কথা বলেন, কিন্তু কাউকে বাদ দিয়ে নির্বাচন করলে সেরা নির্বাচন কীভাবে হবে, সে বিষয়ে ইসিকে ভাবতে হবে।

ইসির উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, "আপনাদের নির্বাচন করার যেমন মানসিকতা থাকতে হবে তেমনি নির্বাচন না করার মানসিকতাও থাকতে হবে। আপনাদের বিবেচনায় যদি মনে করেন সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়, তাহলে নির্বাচন থেকে সরে আসা উচিত, আপনাদের পদত্যাগ করা উচিত।"

এসপি

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

সর্বোচ্চ পঠিত

ঢাবি উপাচার্যের সঙ্গে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপকের সাক্ষাৎ

ঢাবি উপাচার্যের সঙ্গে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপকের সাক্ষাৎ

নিজস্ব প্রতিবেদক: যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. স্যার ওয়াল্টার বোডমার রবিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ... বিস্তারিত