ঢাকা, বুধবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৫, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

শিশুস্বাস্থ্যে নতুন সতর্ক: মহামারি পর্যায়ে জন্মগত হৃদ্‌রোগ 

২০২৫ সেপ্টেম্বর ২৮ ১৯:৩০:৩৬

শিশুস্বাস্থ্যে নতুন সতর্ক: মহামারি পর্যায়ে জন্মগত হৃদ্‌রোগ 

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশে শিশুস্বাস্থ্যের জন্য জন্মগত হৃদরোগ ক্রমেই একটি গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পরিণত হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই রোগের প্রাদুর্ভাব এখন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে, যা এক ধরনের মহামারির সঙ্গে তুলনীয়। দেশে প্রতিদিন প্রায় ৮ হাজার শিশুর জন্ম হয়, এবং এর মধ্যে অন্তত ২০০ শিশু জন্মের সময়ই হৃদরোগ নিয়ে আসে। বছরে এই সংখ্যা দাঁড়ায় প্রায় ৭৪ হাজার। নবজাতক নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে ভর্তি শিশুদের প্রায় ৩০ শতাংশের মধ্যে হৃদরোগ শনাক্ত হয়।

রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) বিশ্ব হার্ট ডে উপলক্ষ্যে রাজধানীর বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে আয়োজিত “মিট দ্য প্রেস” অনুষ্ঠানে শিশু হৃদরোগ সংক্রান্ত সচেতনতা বৃদ্ধির উপর আলোচনার জন্য বিশেষজ্ঞরা বক্তৃতা দেন। অনুষ্ঠানটি কিডস হার্ট ফাউন্ডেশন, চাইল্ড হার্ট ট্রাস্ট বাংলাদেশ, বাংলাদেশ হার্ট রিসার্চ অ্যাসোসিয়েশন এবং বাংলাদেশ সোসাইটি অফ এডাল্ট অ্যান্ড কনজেনিটাল হার্ট ডিজিজ যৌথভাবে আয়োজন করে।

প্রধান অতিথি অধ্যাপক ডা. এসআর খান এবং বিশেষ অতিথি বাংলাদেশ হেলথ জার্নালিস্ট ফোরামের প্রেসিডেন্ট রাশেদ রাব্বি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। দেশের শীর্ষস্থানীয় বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরাও এতে অংশগ্রহণ করেন।

উপস্থিত বক্তারা জন্মগত হৃদরোগের গুরুতরতা তুলে ধরেন। স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত শিশু হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ও কিডস হার্ট ফাউন্ডেশনের সভাপতি অধ্যাপক ডা. নূরুন্নাহার ফাতেমা বলেন, প্রতিদিন প্রায় ২০০ শিশু হৃদরোগ নিয়ে জন্ম নিচ্ছে এবং এটি ডেঙ্গু বা কোভিডের মতো মহামারির আকার ধারণ করেছে। কিন্তু জাতীয় স্বাস্থ্য কর্মসূচিতে এখনও জন্মগত হৃদরোগ অন্তর্ভুক্ত নয়। তাই নবজাতক পর্যায়ে সঠিকভাবে শনাক্তকরণ এবং চিকিৎসার জন্য বিশেষজ্ঞ ও অবকাঠামোর সংখ্যা বাড়ানো অত্যন্ত জরুরি।

অধ্যাপক ডা. এসআর খান বলেন, হৃদরোগ প্রতিরোধ করা সহজ এবং ব্যয়-সাশ্রয়ী। উদাহরণস্বরূপ, কিছু ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে শিশুদের বাতজ্বরজনিত হৃদরোগ প্রতিরোধের জন্য মাত্র ২০ পয়সার সিরিন ট্যাবলেট যথেষ্ট, অথচ হার্ট ভালভ প্রতিস্থাপন করতে প্রায় ১,৬৫,০০০ টাকা খরচ হয়। তিনি শিশুদের স্বাস্থ্য সচেতনতা, খাদ্যাভ্যাস নিয়ন্ত্রণ, নিয়মিত ব্যায়াম, ধূমপান ত্যাগ ও মানসিক চাপ কমানোর গুরুত্বও উল্লেখ করেন।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালের অধ্যাপক ডা. আব্দুল্লাহ সাফি মজুমদার, জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ডা. আবদুল্লাহ শাহরিয়ার, ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতালের অধ্যাপক ডা. শাহিদুল ইসলাম, বিএমইউ-এর অধ্যাপক ডা. তারিকুল ইসলাম, সিএমএইচ-এর অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম ভূঁইয়া, শিশু হাসপাতালের ডা. রেজওয়ানা রিমা এবং পেডিয়াট্রিক কার্ডিওলজিস্ট ডা. আবদুস সালাম।

এমজে

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত