ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০ আশ্বিন ১৪৩২

শেখ পরিবার ও ১০ শিল্পগোষ্ঠীর ৫৭ হাজার কোটি টাকার সম্পদ জব্দ

২০২৫ সেপ্টেম্বর ২৪ ২১:৩০:৩৭

শেখ পরিবার ও ১০ শিল্পগোষ্ঠীর ৫৭ হাজার কোটি টাকার সম্পদ জব্দ

নিজস্ব প্রতিবেদক: ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবার এবং দেশের ১০টি বৃহৎ শিল্পগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ব্যাংক ঋণে অনিয়ম, কর ফাঁকি, অর্থপাচারসহ বিভিন্ন আর্থিক অনিয়মের অনুসন্ধান চালাচ্ছে সরকার গঠিত ১১টি তদন্ত দল। এই অনুসন্ধানে শেখ পরিবারসহ উল্লিখিত ১১টি শিল্প গ্রুপের পাচার করা বিপুল পরিমাণ অর্থ এবং বিদেশে পাচারের টাকায় গড়ে তোলা সম্পদের হদিস মিলেছে। ইতোমধ্যে এসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের মোট ৫৭ হাজার ২৬০ কোটি ৫৬ লাখ টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ ও শেয়ার জব্দ করা হয়েছে।

তদন্ত সংস্থাগুলোর কয়েকটি সূত্র এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। জানা গেছে, অন্তর্বর্তী সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে এই বিষয়টিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি), জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এবং দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এর সমন্বয়ে গঠিত যৌথ তদন্ত দল এই কার্যক্রম পরিচালনা করছে। আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) এই পুরো প্রক্রিয়াটির সমন্বয়ের দায়িত্ব পালন করছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিশেষ নিরাপত্তাবিশিষ্ট কক্ষে তদন্তের নথিপত্র প্রস্তুতের কাজ চলছে।

এছাড়াও, পাচার করা অর্থ উদ্ধারে আন্তর্জাতিক চারটি প্রভাবশালী সংস্থা সহায়তা করছে। সংস্থাগুলো হলো: দ্য স্টোলেন অ্যাসেট রিকভারি (এসটিএআর), ইন্টারন্যাশনাল এন্টি করাপশন কোঅর্ডিনেশন সেন্টার (আইএসিসিসি), যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিস এবং ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর অ্যাসেট রিকভারি (আইসিএআর)।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিবার ছাড়াও যে শিল্প গ্রুপগুলোর বিরুদ্ধে পাচারের অভিযোগ রয়েছে সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো: সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর আরামিট গ্রুপ, এস আলম গ্রুপ, বেক্সিমকো গ্রুপ, সিকদার গ্রুপ, নাসা গ্রুপ, বসুন্ধরা গ্রুপ, ওরিয়ন গ্রুপ, জেমকন গ্রুপ, নাবিল গ্রুপ এবং সামিট গ্রুপ। এসব গ্রুপের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট প্রধান ব্যক্তিদের ব্যক্তিগত আর্থিক বিষয়ও তদন্তের আওতায় আনা হয়েছে।

বিএফআইইউ থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত এক হাজার ৫৭৩টি ব্যাংক হিসাবে ১ হাজার ৬৮০ কোটি টাকা এবং ৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের পাশাপাশি ১৮৮টি বিও (বেনিফিশিয়ারি ওনার্স অ্যাকাউন্ট) হিসাবে ১৫ হাজার ৫০০ কোটি টাকার অর্থ ও শেয়ার স্থগিত করা হয়েছে।

আদালতের নির্দেশনায় জব্দ করা দেশীয় সম্পদের পরিমাণ ৪৬ হাজার ৮০৫ কোটি টাকা, যার মধ্যে স্থাবর সম্পদ ৯ হাজার ৯৯৯ কোটি টাকা এবং অস্থাবর সম্পদ ৩৬ হাজার ৮০৬ কোটি টাকা। এছাড়াও, বিদেশে থাকা ১০ হাজার ৪৫৫ কোটি ৫৪ লাখ টাকার সম্পদ জব্দ করা হয়েছে, যার মধ্যে স্থাবর সম্পদ ৬ হাজার ৯৭ কোটি টাকা এবং অস্থাবর সম্পদ ৪ হাজার ৩৫৪ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে, আদালতের নির্দেশনায় দেশে-বিদেশে মোট স্থগিত করা সম্পদের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫৭ হাজার ২৬০ কোটি ৫৬ লাখ টাকা।

এসপি

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

সর্বোচ্চ পঠিত