ঢাকা, রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৯ ভাদ্র ১৪৩২
‘ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন না হলে জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে’

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন না হলে দেশে শুধু রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা নয়, জাতীয় নিরাপত্তাও বিঘ্নিত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।
শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে প্রথম আলোর কার্যালয়ে আয়োজিত এক গোলটেবিল বৈঠকে এ মন্তব্য করেন তিনি।
অধ্যাপক রীয়াজ বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আমি বারবার কথা বলেছি। তারা অনেক ক্ষেত্রে সাড়া দিয়েছে। কিন্তু এই প্রক্রিয়া অনন্তকাল চলতে পারে না, কোনো একসময় এর সমাপ্তি ঘটাতে হবে। সে কারণেই ফেব্রুয়ারির মধ্যেই নির্বাচন হওয়া প্রয়োজন। না হলে দেশে অস্থিরতা তৈরি হবে এবং জাতীয় নিরাপত্তাও হুমকির মুখে পড়বে।
তিনি আরও বলেন, আমরা এই নির্বাচন করছি কারণ রাষ্ট্রকাঠামোয় কিছু মৌলিক পরিবর্তন নিশ্চিত করতে চাই। ১৬ বছরের সংকটের ভয়াবহতা আমরা দেখেছি। সেটা কেবল একটি সময়সীমার সংকট নয়, বরং ব্যক্তিতান্ত্রিক স্বৈরতন্ত্রের প্রতিষ্ঠা ছিল। আমরা চাই একটি সংহত গণতন্ত্র যেটি তিন দফা (১৯৭৩, ১৯৯১, ২০০৯) চেষ্টার পরও আমরা পাইনি। যদি কাঠামোগত পরিবর্তনে ঐকমত্য না হয়, তাহলে পরবর্তী নির্বাচনেও মৌলিক পরিবর্তন আসবে না।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনার ব্যক্তিনির্ভর স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের পর রাজনৈতিক দলগুলো যে ঐক্য গড়ে তুলেছিল তা এখন ভেঙে গেছে। এবারের নির্বাচন সেই ঐকমত্যকে পুনর্গঠনের সুযোগ করে দিতে পারে।
অধ্যাপক রীয়াজ জানান, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কাজ শুরু হয় গত ১৫ ফেব্রুয়ারি। ৩০টিরও বেশি রাজনৈতিক দল সংবিধান, বিচারব্যবস্থা, জনপ্রশাসন, পুলিশসহ বিভিন্ন বিষয়ে মতবিনিময় করেছে। তিনি এটিকে ইতিবাচক দিক হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, এতগুলো দল পরস্পরের সহিষ্ণু থেকে আলোচনা করেছে, এটি রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তনের ইঙ্গিত।
তিনি জানান, এখন পর্যন্ত ৮৪টি বিষয়ে আলোচনা হয়েছে, এর মধ্যে ৬৪টিতে প্রাথমিক ঐকমত্য গড়ে উঠেছে। “যদিও কিছু ছোটখাটো আপত্তি আছে, তবে তা প্রক্রিয়াকে থামিয়ে দিতে পারে না। শেষ ২০টি বিষয়ের মধ্যে ১১টিতে সিদ্ধান্ত হয়েছে, কেবল একটি বিষয়ে একটি দল নোট অব ডিসেন্ট দিয়েছে।
সংবিধান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা এখনো সংবিধানের মধ্যেই আছি, কারণ ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী এই সরকার গঠিত হয়েছে। কিন্তু যদি পুরো সংবিধানের মধ্যে আমরা থাকতাম, তবে আজ জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রয়োজন হতো না। এটি প্রমাণ করে কিছু মৌলিক প্রশ্ন রয়ে গেছে, যেগুলো সমাধান করতে হবে।
তিনি আরও জানান, রাজনৈতিক দলগুলো ছয়টি পথ প্রস্তাব করেছে। বিশেষজ্ঞরা দু’টি পথের পরামর্শ দিয়েছেন। যেসব প্রস্তাব সংবিধানের বাইরে, সেখানে সবারই একমত। তবে সংবিধান সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ভিন্নমত আছে, বিশেষত নির্বাহী ক্ষমতা সীমিত করা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করার বিষয়ে।
গোলটেবিল বৈঠকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ, জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য মতিউর রহমান আকন্দ, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হোসেন জিল্লুর রহমান, সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, হা-মীম গ্রুপের এমডি এ কে আজাদ, বদিউল আলম মজুমদার, লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. মাহফুজুর রহমান, দ্য ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনাম এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সামিনা লুৎফা উপস্থিত ছিলেন।
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- সাবেক কর্মীদের ১৮২৩ কোটি টাকা আটকে রেখেছে ম্যারিকো
- শেয়ার কারসাজিতে ৫ বিনিয়োগকারীকে ১৩ কোটি টাকা জরিমানা
- এক হাজার কোটি টাকার মামলায় শিবলী রুবাইয়াত গ্রেপ্তার
- তালিকাচ্যুতির ঝুঁকিতে অলিম্পিক এক্সেসরিজ
- সরকারের সিদ্ধান্তে ডুবছে শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীদের স্বপ্ন?
- শেয়ার কারসাজিতে ১২ জনকে সাড়ে ৩ কোটি টাকা জরিমানা
- সর্বোচ্চ চাহিদায় নাগালের বাইরে ১৪ প্রতিষ্ঠান
- তিন কোম্পানির অস্বাভাবিক শেয়ারদর: ডিএসইর সতর্কবার্তা
- কৃত্রিম চাপে শেয়ারবাজারে অস্থিরতা, সহসা পুনরুদ্ধারের সম্ভাবনা
- আরএসআই বিশ্লেষণে সর্বোচ্চ সতর্ক সংকেত পাঁচ শেয়ারে
- এক কোম্পারি অস্থিরতায় শেয়ারবাজারে তোলপাড়
- মুনাফা বাড়াতে নতুন পরিকল্পনা: ঘুরে দাঁড়াচ্ছে হাক্কানী পাল্প
- ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে ইস্টার্ন হাউজিং
- পাঁচ কোম্পানির কারণে থমকে গেল শেয়ারবাজারের উত্থান
- ২২৭ কোটি টাকায় টোটালগাজ কিনে নিল ওমেরা পেট্রোলিয়াম