ঢাকা, মঙ্গলবার, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৫ ভাদ্র ১৪৩২

কৃত্রিম চাপে শেয়ারবাজারে অস্থিরতা, সহসা পুনরুদ্ধারের সম্ভাবনা

২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৯ ১৫:৩৪:০৫

কৃত্রিম চাপে শেয়ারবাজারে অস্থিরতা, সহসা পুনরুদ্ধারের সম্ভাবনা

নিজস্ব প্রতিবেদক: সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার শেয়ারবাজার ইতিবাচক প্রবণতায় ছিল। ওইদিন প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক বেড়েছিল ২২ পয়েন্ট। লেনদেন হয়েছিল ১৪৪১ কোটি ৯০ লাখ টাকা। এর মাধ্যমে এক বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ উচ্চতায় পৌছেছিল শেয়ারবাজার। তারপরের দেন সোমবার কিছুটা নেতিবাচক প্রবণতায় টার্ন নেয়। এদিন ডিএসইর সূচক কমেছিল সাড় ৮ পয়েন্ট। আজ মঙ্গলবার (০৯ সেপ্টেম্বর) সূচক ও লেনদেনে অস্বাভাবিক পতন দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে।

এদিন প্রধান শেয়ারবাজার সূচক উঠানামার গতি শুরুতে স্বাভাবিক ছিল। কিন্তু এক ঘন্টার পরেই অস্বাভাবিকভাবে একটানা পতন হতে থাকে। এই অস্বাভাবিক দরপতনের পেছনে বড় বিনিয়োগকারীদের হাত রয়েছে বলেঅভিযোগ করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা। আজ বড় বিনিয়োাগকারীরা শেয়ার বিক্রির চাপ তৈরি করে মুনাফা তুলে নিয়েছে। একই সঙ্গে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি করে কম দরে শেয়ার কেনার পাঁয়তারা করছে। কারণ এর আগের দিনগুলোতে যে হারে সুচক ও লেনদেন বেড়েছিল, সে হারে শেয়ার দাম বাড়েনি। কিন্তু আজ যে হারে পতন হয়েছে, খাতভিত্তিক পতনের ঝাপটা ছিল অনেক বেশি। আজ শেষ বেলায় বহু প্রতিষ্ঠানের শেয়ার বিক্রেতা সংকটের কাছাকাছি লেনদেন হয়েছে। একই সঙ্গে উল্লেখযোগ্য হারে লেনদেনও কমেছে।

বাজার সংশ্লিষ্টদের মতে, আজকের পতন মূলত কৃত্রিমভাবে আতঙ্ক সৃষ্টির ফলাফল। বাস্তবে বাজারের মৌলভিত্তিক কোনো খাতে নেতিবাচক পরিবর্তন হয়নি। বরং বেশ কিছু খাতের কোম্পানি এখনো শক্তিশালী আর্থিক ভিত্তি এবং স্থিতিশীল কার্যক্রম ধরে রেখেছে। যেসব বিনিয়োগকারী দীর্ঘমেয়াদি দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে বাজারে রয়েছেন, তারা জানেন যে এ ধরনের কৃত্রিম চাপ বা গুজব নির্ভর আতঙ্ক বাজারের প্রকৃত চিত্র তুলে ধরে না। তাই সাময়িক ওঠানামাকে অযথা ভয় পাওয়ার কিছু নেই। বরং এ ধরনের সময়ে অনেকে ভালো শেয়ারের সুযোগও খুঁজে পান।

অন্যদিকে, বিশ্লেষকরা মনে করছেন এই সাময়িক ধাক্কা কাটিয়ে খুব দ্রুতই বাজার ঘুরে দাঁড়াবে। বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরে আসার সঙ্গে সঙ্গে আবারও লেনদেনে গতি আসবে এবং বাজার তার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে যাবে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বারবার দেখা গেছে, কোনো কৃত্রিম চাপ বা আতঙ্কের প্রভাবে সাময়িক পতন হলেও মৌলভিত্তিক শক্তিশালী কোম্পানিগুলো দ্রুতই স্থিতিশীলতা ফিরে পেয়েছে। এবারও তার ব্যতিক্রম হওয়ার কারণ নেই। বরং ইতিবাচক সংবাদ এবং কোম্পানিগুলোর আর্থিক স্থিতিশীলতা বিনিয়োগকারীদের নতুন করে আস্থা জোগাবে।

আজ ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৮৯.৩৩ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৫৩৮.২৫ পয়েন্টে। এদিন অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসইএস ২১.২২ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ২০৩.৯৮ পয়েন্টে। আর ডিএসই-৩০ সূচক ৯.১৫ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ২ হাজার ১৫২.৮২ পয়েন্টে।

আজ ডিএসইতে মোট ৪০১টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নেয়। এর মধ্যে ৬৮টির দর বেড়েছে, ৩০৫টির দর কমেছে এবং ২৮টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে।

ডিএসইতে আজ মোট ১ হাজার ১৭৭ কোটি ২৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। গত কর্মদিবসে লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ৪০০ কোটি ৮৪ লাখ টাকার। আগের দিনের তুলনায় লেনদেন কমেছে ২২৩ কোটি ৫৮ লাখ টাকা।

এদিকে, অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সূচক কমলেও টাকার অংকে লেনদেন বেড়েছে। তবে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের দর কমেছে।

এদিন সিএসইতে ১৯ কোটি ৭৭ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগেরদিন সিএসইতে ১৮ কোটি ৭৫ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছিল।

আজ সিএসইতে লেনদেন হওয়া ২৪৩টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শেয়ার ও ইউনিট দর বেড়েছে ৪৭টির, কমেছে ১৬৮টির এবং পরিবর্তন হয়নি ২৮টির।

এদিন সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ২১৪.১৩ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার ৫৫৮.৯৩ পয়েন্টে। আগেরদিন সূচক সিএএসপিআই ৪৫.১১ পয়েন্ট বেড়েছিল।

এসকে/

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

সর্বোচ্চ পঠিত