ঢাকা, মঙ্গলবার, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৪ ভাদ্র ১৪৩২

মিরাকেলের বিরুদ্ধে মূল্য সংবেদনশীল তথ্য গোপন করার অভিযোগ

২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৯ ০০:০৯:২৪

মিরাকেলের বিরুদ্ধে মূল্য সংবেদনশীল তথ্য গোপন করার অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশন (বিসিআইসি) এখন থেকে তাদের প্রয়োজনীয় ওভেন পলিপ্রোপিলিন ও পলিথিন ব্যাগের ৫০ শতাংশ সরাসরি মিরাকল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড থেকে কিনবে। শিল্প মন্ত্রণালয়ের এই নির্দেশনা কোম্পানিটির ব্যবসা বৃদ্ধি ও নতুন অর্ডার পেতে সাহায্য করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

শিল্প মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা থেকে জানা গেছে, চলতি সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে এই আদেশ জারি করা হয়েছে। এর আগে, গত বছরের ডিসেম্বরে বিসিআইসি’র চাহিদার মাত্র ২০ শতাংশ মিরাকল ইন্ডাস্ট্রিজকে সরবরাহ করার জন্য বরাদ্দ ছিল।

এই খবর ছড়িয়ে পড়ার পর গত ১১ কার্যদিবসে মিরাকল ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ারের দাম ২৭ শতাংশ বেড়ে সোমবার (০৮ সেপ্টেম্বর) প্রতিটি ৩৩ টাকা ৯০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে। তবে কোম্পানিটি এখনও কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়নি। এর পেছনে কোম্পানিটির বিরুদ্ধে শেয়ার কারসাজির ইন্ধান থাকার অভিযোগ তুলছেন বিনিয়োগকারীরা।

এক সময় মিরাকল ইন্ডাস্ট্রিজ বিসিআইসি'র শতভাগ ব্যাগ সরবরাহ করত। তবে ২০০৭ সালে সরকার এই ব্যবস্থা বাতিল করে উন্মুক্ত টেন্ডারের মাধ্যমে ক্রয়ের নিয়ম চালু করে। গত বছরের ডিসেম্বরে কোম্পানিটিতে সীমিত পরিসরে পুনরায় অর্ডার দেওয়া শুরু হয়।

বিসিআইসি'র কর্মকর্তাদের মতে, এই ধরনের ব্যাগের চাহিদা মূলত সার উৎপাদন ও আমদানির উপর নির্ভরশীল। চলতি অর্থবছরে বিসিআইসি ইউরিয়া সারের মোট চাহিদা প্রায় ২৭ লাখ টন অনুমান করেছে। এই চাহিদা মেটাতে প্রায় ১০ লাখ টন সার উৎপাদনের এবং ১৭ লাখ টন আমদানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

১৯৯৫ সালে বিসিআইসি এবং চারজন উদ্যোক্তার যৌথ উদ্যোগে মিরাকল ইন্ডাস্ট্রিজ প্রতিষ্ঠিত হয়। কোম্পানিটি সিমেন্ট, সার, লবণ, চিনি, খাদ্যশস্য এবং রাসায়নিক পদার্থের ব্যাগ উৎপাদন করে। এর দুটি উৎপাদন ইউনিট রয়েছে—একটি স্থানীয় বাজারের জন্য এবং অন্যটি রপ্তানির জন্য।

২০২৩ সালের আগস্ট মাসে লুৎফুজ্জামান বাবর-এর পরিবারের কাছ থেকে মেহমুদ ইকুইটিস লিমিটেড কোম্পানিটির নিয়ন্ত্রণ নেয়। এর পর নতুন মালিক পক্ষ কোম্পানির বোর্ডে তিনজন পরিচালক নিয়োগ করে এবং কার্যক্রম পুনরায় চালু করার জন্য প্রয়োজনীয় বিনিয়োগের পরিকল্পনা ঘোষণা করে।

কোম্পানির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তাদের উৎপাদন এখনও প্রায় ৩০ বছর পুরোনো মেশিনের ওপর নির্ভরশীল, তাই কার্যক্রম সম্প্রসারণের জন্য নতুন বিনিয়োগ প্রয়োজন। নতুন ব্যবস্থাপনা ইতিমধ্যে বেশ কিছু বিনিয়োগ করেছে।

২০১৯ অর্থবছর পর্যন্ত মিরাকল ইন্ডাস্ট্রিজ লাভজনক ছিল। তবে ২০২০ অর্থবছরে শেয়ারহোল্ডারদের মধ্যে দ্বন্দ্বের কারণে এটি রেকর্ড ১২ কোটি টাকা লোকসান করে। এই সময় কোম্পানির রাজস্ব ৮৫ শতাংশ কমে মাত্র ৯ কোটি টাকায় নেমে আসে। এছাড়াও, ২০১৯ অর্থবছরের পর থেকে কোম্পানিটি রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছে।

২০২৫ অর্থবছরের তিন প্রান্তিকে (জুলাই’২৪-মার্চ’২৫) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি লোকসান হয়েছে ১ টাকা ৬৩ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে শেয়ার প্রতি লোকসান ছিল ১ টাকা ৭৮ পয়সা।

কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধন রয়েছে ৩৫ কোটি ২২ লাখ টাকা। বিপরীতে রিজার্ভ রয়েছে ১২ কোটি ৭৬ লাখ টাকা।

এএসএম/

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

সর্বোচ্চ পঠিত