ঢাকা, শনিবার, ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২২ ভাদ্র ১৪৩২

১৫০ কোটি ডলারের কপিরাইট মামলা এআই কোম্পানির বিরুদ্ধে

২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৬ ১৩:০১:৫১

১৫০ কোটি ডলারের কপিরাইট মামলা এআই কোম্পানির বিরুদ্ধে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রতিষ্ঠান অ্যানথ্রোপিক লেখকদের কপিরাইট লঙ্ঘনের মামলার নিষ্পত্তিতে প্রায় ১.৫ বিলিয়ন ডলার বা ১৫০ কোটি ডলার (প্রায় ১.১১ বিলিয়ন পাউন্ড) ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য সম্মত হয়েছে। মামলাকারী লেখকদের অভিযোগ, প্রতিষ্ঠানটি তাদের বই অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করেছে ক্লদ নামে এআই চ্যাটবট প্রশিক্ষণের জন্য।

এই রফার অনুমোদনের জন্য এখন যুক্তরাষ্ট্রের জেলা জজ উইলিয়াম অলসাপের স্বীকৃতি প্রয়োজন। লেখকদের আইনজীবীরা বলছেন, আদালতের অনুমোদন মিললে এটি ইতিহাসে সবচেয়ে বড় কপিরাইট ক্ষতিপূরণ হিসেবে ধরা হবে।

প্রসঙ্গত, দুই মাস আগে জজ অলসাপ রায় দিয়েছিলেন যে, বই ব্যবহার করে এআই প্রশিক্ষণ দেওয়া যুক্তরাষ্ট্রের কপিরাইট আইন লঙ্ঘন করে না। তবে অ্যানথ্রোপিককে চুরি করা উপকরণ ব্যবহার করার অভিযোগে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে বলে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।

গত শুক্রবার এক বিবৃতিতে অ্যানথ্রোপিক জানিয়েছে, এই রফার মাধ্যমে বিচারাধীন সব ‘লেগাসি ক্লেইমস’ নিষ্পত্তি হবে। প্রতিষ্ঠানটি বরাবরই নিজেদের নৈতিক বিকল্প হিসেবে তুলে ধরেছে এবং নিরাপদ এআই সিস্টেম তৈরিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকার কথা জানিয়েছে।

অ্যানথ্রোপিকের ডেপুটি জেনারেল কাউন্সেল অপর্ণা শ্রীধর বলেন, “আমরা এমন সিস্টেম তৈরি করতে চাই যা ব্যক্তির দক্ষতা বাড়াবে, বৈজ্ঞানিক উদ্ভাবনকে এগিয়ে নেবে এবং জটিল সমস্যা সমাধানে সহায়তা করবে।” উল্লেখযোগ্য, অ্যানথ্রোপিককে সমর্থন দিচ্ছে আমাজন ও অ্যালফাবেট।

২০২৪ সালে দায়ের করা মামলায় বেস্টসেলিং থ্রিলার লেখক আন্দ্রেয়া বার্টজ অভিযোগ করেন, তার বই চুরি করে ক্লদ এআই প্রশিক্ষিত হয়েছে। মামলায় আরও দুজন লেখক রয়েছেন—‘দ্য গুড নার্স’-এর লেখক চার্লস গ্র্যাবার এবং ‘দ্য ফেদার থিফ’-এর লেখক কার্ক ওয়ালেস জনসন। তাদের অভিযোগ, অ্যানথ্রোপিক ৭ মিলিয়ন বা ৭০ লাখের বেশি বই ব্যবহার করে বহু বিলিয়ন ডলারের ব্যবসা গড়ে তুলেছে।

প্রথমে ডিসেম্বরেই বিচার শুরু হওয়ার কথা ছিল, তবে রফার মাধ্যমে তা আগেই নিষ্পত্তি হলো। লেখকদের আইনজীবী জাস্টিন নেলসন মন্তব্য করেছেন, “এটি এআই যুগে প্রথম এমন নিষ্পত্তি। এটি শুধু অর্থবহ ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করছে না, ভবিষ্যতের জন্যও একটি নজির স্থাপন করছে—এআই কোম্পানিগুলোকে মূল কনটেন্টের মালিকদের অর্থ দিতে হবে।”

লন্ডন বিজনেস স্কুলের অধ্যাপক অ্যালেক্স ইয়াং বলেন, “এআই প্রশিক্ষণের জন্য মানবিক কনটেন্ট অপরিহার্য। যদি এআইভিত্তিক কনটেন্টের কপিরাইট স্বীকৃতি পাওয়া যায়, তবে মানুষের তৈরি কনটেন্টের জন্য ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করাও জরুরি।”

এদিকে, অ্যানথ্রোপিক ছাড়াও ওপেনএআই, মাইক্রোসফট ও মেটার বিরুদ্ধে একই ধরনের কপিরাইট লঙ্ঘনের অভিযোগে মামলা চলছে।

এমজে

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

সর্বোচ্চ পঠিত