ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৮ আগস্ট ২০২৫, ১৩ ভাদ্র ১৪৩২

বেক্সিমকো বন্ডের সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা কোথায় গেল? তদন্তের নির্দেশ 

ডুয়া নিউজ- শেয়ারবাজার
২০২৫ আগস্ট ২৮ ১৯:৫১:৫৫
বেক্সিমকো বন্ডের সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা কোথায় গেল? তদন্তের নির্দেশ 

শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) বেক্সিমকো কর্তৃক বন্ডের মাধ্যমে সংগৃহীত অর্থের ব্যবহার নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে। ২০২১ এবং ২০২৪ সালে ইস্যু করা দুটি বন্ড থেকে কোম্পানিটি মোট ৪ হাজার ৫০০ কোটি টাকা সংগ্রহ করেছিল। এই বিপুল অঙ্কের অর্থ সঠিক খাতে ব্যবহৃত হয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখার জন্য দুটি পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

২০২১ সালে বেক্সিমকো 'গ্রিন সুকুক বন্ড' ইস্যু করে ৩ হাজার কোটি টাকা সংগ্রহ করে। এই অর্থ তিস্তা সোলার এবং করতোয়া সোলার প্রকল্পে ব্যবহারের কথা ছিল, যার মাধ্যমে নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করার পরিকল্পনা ছিল। এরপর ২০২৪ সালে 'আইএফআইসি গ্যারান্টিড শ্রীপুর টাউনশিপ জিরো কুপন বন্ড' থেকে ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা তোলা হয়, যা আবাসন খাতে বিনিয়োগ করার কথা ছিল।

বিষয়টি নিয়ে বিএসইসির মুখপাত্র মো. আবুল কালাম সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, এর আগে বন্ডগুলোর অনুমোদন প্রক্রিয়া নিয়ে তদন্ত হলেও, তহবিল সঠিক খাতে ব্যবহার হয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হয়নি। তিনি জানান, "এ কারণেই দুটি কমিটি গঠন করা হয়েছে, যাতে তহবিল অপব্যবহারের কোনো ঘটনা ঘটেছে কিনা তা নিশ্চিত করা যায়।"

বুধবার বিএসইসি জারি করা আদেশে জানায়, একটি তিন সদস্যের কমিটি বেক্সিমকো গ্রিন সুকুক বন্ডের ইস্যুকারী কোম্পানি, ট্রাস্টি (ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ) এবং অডিটরদের (এম জে আবেদীন অ্যান্ড কোং) ভূমিকা খতিয়ে দেখবে।

অন্যদিকে, শ্রীপুর টাউনশিপ জিরো কুপন বন্ড নিয়েও বিতর্ক উঠেছে। যদিও আইএফআইসি ব্যাংক এই বন্ডের ইস্যুকারী ছিল না, বেক্সিমকো "আইএফআইসি আমার বন্ড" নামে বিজ্ঞাপন দিয়ে বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা করে। এই বন্ডের ট্রাস্টি ছিল সন্ধানী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি এবং অডিটর ছিল এম জে আবেদীন অ্যান্ড কোং।

বিএসইসির অন্য একটি তদন্তে দেখা যায়, তহবিল সংগ্রহের পরপরই শ্রীপুর টাউনশিপ প্রকল্পের পরিশোধিত মূলধনের একটি বড় অংশ সরিয়ে নেওয়া হয়। এর পাশাপাশি, বেক্সিমকো গ্রিন সুকুক বন্ডের প্রায় ৭০ শতাংশ ব্যাংকগুলোকে জোর করে কিনতে বাধ্য করার অভিযোগ রয়েছে।

বর্তমানে সুকুক বন্ডধারীরা সুদ পেলেও, অবশিষ্ট সুদ এবং আসল টাকা পরিশোধ নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে। এই বন্ডের মেয়াদ ২০২৬ সালের ডিসেম্বরে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও, পরিশোধ সংক্রান্ত জটিলতার কারণে এর মেয়াদ আরও পাঁচ বছর বাড়ানোর প্রক্রিয়া চলছে।

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত