ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৮ আগস্ট ২০২৫, ১৩ ভাদ্র ১৪৩২
ইতিহাসের সাক্ষী বিশ্বের প্রাচীন বাজারগুলোতে কি পাওয়া যায়?

শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে বিশ্বের নানা প্রান্তে গড়ে ওঠা প্রাচীন বাজারগুলো শুধু কেনাবেচার কেন্দ্র নয়, বরং ইতিহাস, সংস্কৃতি ও মানুষের জীবনযাত্রার জীবন্ত দলিল। এসব বাজারের প্রতিটি গলি, প্রতিটি দোকান বহন করে অতীতের বাণিজ্য, সামাজিক মেলবন্ধন এবং ঐতিহ্যের গল্প। আজও এগুলো স্থানীয় জীবনধারা ও কারুশিল্পের পাশাপাশি পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় কেন্দ্র হিসেবে টিকে আছে।
খান এল-খালিলি, কায়রো, মিসর১৩৮২ সালে সুলতান বারকুক প্রতিষ্ঠা করেন কায়রোর বিখ্যাত খান এল-খালিলি বাজার। মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকার বাণিজ্যকেন্দ্র হিসেবে একসময় এটি ছিল অনন্য। সরু গলি ও মধ্যযুগীয় স্থাপত্যের ছোঁয়া আজও এর বিশেষত্ব। হাতে তৈরি গয়না, মসলা, সুগন্ধি, পিতলের সামগ্রীসহ ঐতিহ্যবাহী মিসরীয় দ্রব্যের জন্য প্রসিদ্ধ এই বাজারে কফিহাউসগুলো এখনও স্থানীয় ও বিদেশি দর্শনার্থীদের মিলনস্থল।
গ্র্যান্ড বাজার, ইস্তাম্বুল, তুরস্ক১৪৫৫ সালে প্রতিষ্ঠিত গ্র্যান্ড বাজার বিশ্বে সবচেয়ে পুরোনো ও বৃহৎ বাজারগুলোর একটি। সিল্ক রোডের গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হিসেবে ইউরোপ, এশিয়া ও আফ্রিকার বণিকেরা এখানে জড়ো হতেন। প্রায় ৬১টি রাস্তা ও চার হাজারের বেশি দোকানের এই বাজারে প্রতিদিন লাখো মানুষ ভিড় জমাত। গোলকধাঁধার মতো নকশায় প্রতিটি গলি নির্দিষ্ট পণ্যের জন্য পরিচিত। ঐতিহাসিক ও প্রাণবন্ত পরিবেশ আজও ইস্তাম্বুলের সংস্কৃতির অপরিহার্য অংশ করে তুলেছে গ্র্যান্ড বাজারকে।
চাঁদনি চক, দিল্লি, ভারতমোগল সম্রাট শাহজাহানের কন্যা জাহানারা বেগম ১৬৫০ সালে নকশা করেছিলেন দিল্লির বিখ্যাত চাঁদনি চক বাজার। এর কেন্দ্রে একসময় একটি ঝলমলে পুকুর ছিল, যার আলোতেই নামকরণ। শাড়ি-লেহেঙ্গা, গয়না, মসলা থেকে ইলেকট্রনিকস—সবই মেলে এখানে। শুধু কেনাকাটাই নয়, পরোটা, জিলাপি, চাট আর কাবাবের মতো স্ট্রিট ফুডও চাঁদনি চককে করে তুলেছে বিখ্যাত।
বোরো মার্কেট, লন্ডন, যুক্তরাজ্যলন্ডনের সাউথওয়ার্কে অবস্থিত বোরো মার্কেটের ইতিহাস এগারো শতক পর্যন্ত বিস্তৃত। একসময় এটি ছিল পাইকারি খাবারের বাজার, যা এখন পরিণত হয়েছে খাদ্যরসিকদের গন্তব্যে। তাজা ফল-সবজি, চিজ, বেকারি পণ্য, মাংস ও আন্তর্জাতিক খাবারের জন্য এটি জনপ্রিয়। প্রাণবন্ত পরিবেশ ও নানা স্বাদের খাবারের গন্ধে ভরপুর থাকে এই বাজার।
পাইক প্লেস মার্কেট, সিয়াটল, যুক্তরাষ্ট্র১৯০৭ সালে প্রতিষ্ঠিত এই বাজার আজও সক্রিয়। স্থানীয় কৃষকদের সরাসরি ক্রেতাদের কাছে পণ্য বিক্রির সুযোগ দেওয়ার লক্ষ্যেই এর সূচনা। সবচেয়ে জনপ্রিয় ‘উড়ন্ত মাছ’ প্রদর্শনী—যেখানে বিক্রেতারা মাছ ছুড়ে দিয়ে বিক্রি করেন। এখানে মাছ, ফল-সবজি, ফুল, হস্তশিল্প ও খাবারের সমাহার রয়েছে।
প্রাচীন এসব বাজার কেবল লেনদেনের স্থান নয়, বরং প্রতিটি শহরের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও জীবনযাত্রার প্রতিফলন। এগুলো যেন একেকটি জীবন্ত জাদুঘর, যেখানে অতীত ও বর্তমানের মিলন ঘটে প্রতিদিন।
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- তিন কোম্পানির কারখানা বন্ধ, ক্ষোভ বাড়ছে বিনিয়োগকারীদের
- আইসিবি’র বিশেষ তহবিলের মেয়াদ ২০৩২ সাল পর্যন্ত বৃদ্ধি
- কেয়া কসমেটিক্সের ৮ হাজার কোটি টাকা উধাও, চার ব্যাংককে তলব
- সম্ভাবনার নতুন দিগন্তে শেয়ারবাজারের খান ব্রাদার্স
- ব্লুমবার্গের টেকসই তালিকায় বাংলাদেশের ১১ তালিকাভুক্ত কোম্পানি
- মূলধন ঘাটতিতে দুই ব্রোকারেজ হাউজ, ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ
- দুই খবরে আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ শেয়ারের চমক
- সাকিবের মোনার্কসহ ৮ ব্রোকারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ
- ২৩ আগস্ট : শেয়ারবাজারের সেরা ৮ খবর
- চলতি বছর শেয়ারবাজারে আসছে রাষ্ট্রায়াত্ব দুই প্রতিষ্ঠান
- হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে প্রতারণা, বিনিয়োগকারীদের সতর্ক করল ডিএসই
- বিএসইসির নতুন মার্জিন বিধিমালার খসড়া অনুমোদন
- কোম্পানির অস্বাভাবিক শেয়ারদর: ডিএসইর সতর্কবার্তা
- বিমা আইন সংস্কার: বিনিয়োগ ও আস্থায় নতুন দিগন্ত
- শেয়ারবাজারের জন্য সুখবর: কমছে ট্রেজারি বিল ও বন্ডের সুদ