ঢাকা, বুধবার, ৩০ জুলাই ২০২৫, ১৫ শ্রাবণ ১৪৩২

গণভবন হস্তান্তর করল পূর্ত মন্ত্রণালয়

ডুয়া নিউজ- জাতীয়
২০২৫ জুলাই ২৯ ১১:০৯:৪৫
গণভবন হস্তান্তর করল পূর্ত মন্ত্রণালয়

গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় জমিসহ সরকারি বাসভবন গণভবন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অনুকূলে হস্তান্তর করেছে। তেজগাঁও সাবরেজিস্ট্রি অফিসের মাধ্যমে গত সপ্তাহে ১৭ একর জমির ৯৯ বছরের লিজ দলিল সম্পন্ন হয়। এ জমিতে নির্মিত হচ্ছে ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর’ যা আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন হবে আগামী ৫ আগস্ট।

সরকারের বরাদ্দকৃত ১১১ কোটি টাকায় সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বর্তমানে জাদুঘরের প্রাথমিক কাঠামো প্রস্তুতের কাজ করছে। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানিয়েছেন, কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে এবং জাদুঘরের নকশা এমনভাবে করা হয়েছে যাতে দর্শনার্থীরা সেখানে প্রবেশ করে আন্দোলনের পটভূমি ও রক্তাক্ত ইতিহাস গভীরভাবে উপলব্ধি করতে পারেন।

সূত্র বলছে, ২০২৪ সালের ‘বর্ষা বিপ্লবে’ শহীদ ও আহতদের স্মৃতি সংরক্ষণের অংশ হিসেবে এই জাদুঘর নির্মাণের উদ্যোগ নেয় সরকার। দীর্ঘদিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাসস্থান হিসেবে ব্যবহৃত এই ভবনটি গত বছর ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত উচ্চপর্যায়ের এক বৈঠকে জাদুঘরে রূপান্তরের নীতিগত সিদ্ধান্ত পায়। তবে প্রকল্পের নকশা অনুমোদন পেতে ৭ মাস সময় লাগে। অবশেষে ৮ জুলাই অনুমোদন পাওয়া নকশার ভিত্তিতে ত্বরিত বাস্তবায়নের জন্য সরাসরি ক্রয় পদ্ধতি গ্রহণ করা হয়।

লিজ দলিল অনুযায়ী, জমির মালিকানা এখনো গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের কাছে থাকলেও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় ৯৯ বছরের জন্য ব্যবহারের অধিকার পেয়েছে। জমির তফশিল অনুযায়ী, তেজগাঁও মৌজার ‘বি’ সেক্টরের প্লট নম্বর ০৫ এ অবস্থিত এই ১৭.৪৬৭৯ একর জমির দলিলে দাতা হিসাবে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নজরুল ইসলাম এবং গ্রহীতা হিসেবে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মফিদুর রহমান স্বাক্ষর করেন।

দলিলে কিছু শর্তও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। জমিটি অন্য কোথাও হস্তান্তর বা বিদ্যমান কাঠামোয় পরিবর্তন করতে হলে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন লাগবে। বার্ষিক ৩,০০০ টাকা হারে খাজনা প্রদান করতে হবে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়কে। কোনো মূল্য নির্ধারণ ছাড়াই এই দলিল সম্পন্ন করা হয়েছে যা সরকারি প্রতিষ্ঠানের মধ্যকার লিজে প্রচলিত বিধি অনুযায়ী বৈধ।

নির্মাণাধীন জাদুঘরে থাকছে বর্ষা বিপ্লবের স্থিরচিত্র, শহীদদের ব্যবহার্য জিনিসপত্র, চিঠিপত্র, অডিও-ভিডিও দলিল, সংবাদপত্রের কাটিংসহ নানা স্মারক। এছাড়া বিশেষভাবে তুলে ধরা হবে ‘স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার’ দেশত্যাগের সময়কার দৃষ্টান্তমূলক মুহূর্ত। পুরো প্রকল্পটি বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের একটি অংশ হিসেবে সংযুক্ত করা হবে।

জাদুঘরটি নির্মিত হচ্ছে ইতিহাসের ধারক হিসেবে যেখানে ছাত্র-জনতার ত্যাগ, আওয়ামী দুঃশাসনের ইতিহাস এবং অভ্যুত্থানের রক্তাক্ত স্মৃতিকে তুলে ধরা হবে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য।

তথ্য: যুগান্তর

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত