ঢাকা, মঙ্গলবার, ৮ জুলাই ২০২৫, ২৪ আষাঢ় ১৪৩২
‘অবৈধ অভিবাসী’ বলে মুসলমানদের ফেরত পাঠাচ্ছে ভারত

ভারত থেকে বিনা বিচারে বাংলাদেশে মানুষ ফেরত পাঠানোর অভিযোগ ঘিরে দুই দেশের রাজনৈতিক ও মানবাধিকার অঙ্গনে তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছে। ভারত সরকার বলছে, এই ব্যক্তিরা ‘অবৈধ অভিবাসী’। তবে মানবাধিকার সংস্থাগুলোর দাবি, এই প্রক্রিয়া বেআইনি, জাতিগত বিদ্বেষ ও ধর্মীয় পরিচয়ের ভিত্তিতে পরিচালিত।
বার্তা সংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন হিন্দু জাতীয়তাবাদী সরকার বিশেষ করে বাংলাদেশ থেকে আসা মুসলিম অভিবাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে। সরকারি ভাষ্যেও এসব অভিবাসীদের 'উইপোকা' ও 'অনুপ্রবেশকারী' বলা হচ্ছে, যার ফলে বাংলা ভাষাভাষী মুসলিমদের মধ্যে গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে।
ভারতের মানবাধিকারকর্মী হর্ষ মন্দার জানান, ভারতের পূর্বাঞ্চলের মুসলমানরা এখন নিজেদের অস্তিত্ব নিয়ে গভীর অনিশ্চয়তার মধ্যে আছেন। ২০২৪ সালে বাংলাদেশে সরকার পরিবর্তনের পর ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের টানাপোড়েনও প্রকাশ্যে আসে।
গত ২২ এপ্রিল ভারতশাসিত কাশ্মীরে হিন্দু তীর্থযাত্রীদের ওপর হামলার পর নিরাপত্তা অভিযান শুরু হয়। এই সময় বহু মানুষকে আটক করা হয় এবং অনেককেই জোরপূর্বক বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
আসামের বাসিন্দা রহিমা বেগম জানান, মে মাসে তাকে এবং চারজন মুসলিম পুরুষকে আটক করে সীমান্তে নিয়ে যাওয়া হয়। তাদের বলা হয়, ‘সামনের গ্রামে হামাগুড়ি দিয়ে যাও, দাঁড়ালেই গুলি করা হবে।’ পরে স্থানীয় লোকজন তাদের উদ্ধার করে বর্ডার গার্ডের কাছে হস্তান্তর করে। এরপরও নিপীড়নের মুখে পড়ে অবশেষে তারা ভারতের ভূখণ্ডে ফিরে আসেন। পরে রহিমাকে আবার আসামে ফিরিয়ে দেওয়া হয়, তবে তাকে হুমকি দিয়ে বলা হয়, ‘এ বিষয়ে কথা বলো না।’
ভারতের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সঞ্জয় হেগড়ে বলেন, "কোনও দেশ কাউকে নির্বাসিত করতে পারে না, যদি না অন্য দেশ তাদের নাগরিক হিসেবে স্বীকার করে। আইনি প্রক্রিয়া ছাড়া কাউকে ফেরত পাঠানো আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন।"
বাংলাদেশ সরকার জানায়, মে মাস থেকে ভারত ১,৬০০ জনকে জোরপূর্বক পাঠিয়েছে। কিন্তু ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো বলছে, এই সংখ্যা ২,৫০০-এরও বেশি। সীমান্তরক্ষীরা জানায়, ফেরত পাঠানোদের মধ্যে অন্তত ১০০ জন প্রকৃত ভারতীয় নাগরিক, যাদের পুনরায় ভারতে পাঠানো হয়েছে।
মানবাধিকারকর্মীদের দাবি, বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলোতে এই অভিযান সবচেয়ে বেশি চলছে। অধিকাংশ ফেরত পাঠানো ব্যক্তি বাংলা ভাষাভাষী নিম্নআয়ের মুসলমান। গুজরাটে ৬,৫০০ জনকে আটক করা হয়েছে, যাদের মধ্যে অনেকেই প্রকৃত ভারতীয় নাগরিক।
হর্ষ মন্দার বলেন, ‘বাংলাভাষী মুসলমানদের টার্গেট করে ঘৃণানীতির অংশ হিসেবে এ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ভাষা ও ধর্মই এখন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবহৃত অস্ত্র।’
নাজিমুদ্দিন মণ্ডল নামে এক নির্মাণ শ্রমিক বলেন, ‘মুম্বাই থেকে আমাকে তুলে নিয়ে সামরিক বিমানে করে ত্রিপুরা সীমান্তে এনে বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়া হয়। পরিচয়পত্র দেখালেও পুলিশ তা মানেনি।’ তিনি বলেন, ‘পুনরায় পশ্চিমবঙ্গে ফিরে এসেছি, কিন্তু এখন প্রতিদিন কাজে বের হলে আতঙ্ক কাজ করে।’
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- ঢাবি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের বৃত্তি : সাক্ষাৎকার যেদিন শুরু
- শেয়ারবাজারের পাঁচ কোম্পানিতে বেড়েছে বিদেশি বিনিয়োগ
- নভেম্বর-ডিসেম্বরে হতে পারে ঢাবির ৫৪তম সমাবর্তন
- ঢাবি অ্যালামনাইয়ের বৃত্তির সাক্ষাৎকার নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
- ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে ১২ কোম্পানি
- প্রথম প্রান্তিকের ইপিএস প্রকাশ করেছে পাঁচ কোম্পানি
- ২১ বস্ত্র কোম্পানিতে প্রাতিষ্ঠানিক মালিকানা নজরকাড়া তলানিতে
- ভারতের ২৫০ সেনা নিহত
- ১৭ কোম্পানি শেয়ারে সফল বিনিয়োগ, ২০ শতাংশের বেশি মুনাফা
- ‘শেয়ারবাজারের মাঠ খেলার জন্য পুরোদমে প্রস্তুত’
- হিরোশিমার চেয়ে ৬ গুণ শক্তিশালী বোমা ফেললো ইসরাইল
- ১৩ বীমায় প্রাতিষ্ঠানিক মালিকানা তলানিতে, ১০% শতাংশের নিচে শেয়ার
- সুনামির আশঙ্কা, প্রাণ হারাতে পারেন প্রায় ৩ লাখ মানুষ!
- হঠাৎ অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে, মারা গেলেন ঢাবির সাবেক শিক্ষার্থী
- আমরা নেটওয়ার্কের শেয়ার কারসাজি, তদন্তে নেমেছে বিএসইসি