ঢাকা, সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫, ৯ আষাঢ় ১৪৩২
হরমুজ প্রণালি কী এবং কেন এত গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে নজর বিশ্বশক্তির
.jpg)
ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান উত্তেজনার মধ্যে হরমুজ প্রণালির গুরুত্ব ফের উঠে এসেছে আলোচনায়। ইরানে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলার পর এই কৌশলগত জলপথ ঘিরে উদ্বেগ বাড়ছে বিশ্বজুড়ে। ইতিমধ্যে প্রণালি বন্ধে পদক্ষেপ নিয়েছে তেহরান। দেশটির পার্লামেন্ট অনুমোদন দিলেও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসবে ইরানের সর্বোচ্চ জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ থেকে।
বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই সমুদ্রপথ বন্ধ হয়ে গেলে শুধু পরিবহণ ব্যয় বাড়বে না বরং বৈশ্বিক অর্থনীতিতে মুদ্রাস্ফীতি ও মন্দার আশঙ্কা তৈরি হবে। ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে গেছে। যদিও এখন পর্যন্ত সরবরাহ ব্যবস্থায় বড় কোনো ব্যাঘাত ঘটেনি।
পারস্য উপসাগর ও ওমান উপসাগরের মাঝে অবস্থিত হরমুজ প্রণালি বিশ্বের কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ জলপথগুলোর একটি। সবচেয়ে সংকীর্ণ স্থানে এটি মাত্র ২১ মাইল চওড়া। এখান দিয়েই পারস্য উপসাগরের তেলবিশ্ব থেকে অপরিশোধিত তেল বিশ্ববাজারে পৌঁছায়। প্রণালিটির উত্তরের দিক নিয়ন্ত্রণ করে ইরান।
মার্কিন জ্বালানি তথ্য প্রশাসন (EIA) অনুসারে, প্রতিদিন প্রায় ২০ মিলিয়ন ব্যারেল তেল—যা বৈশ্বিক তেল উৎপাদনের প্রায় এক-পঞ্চমাংশ—এই প্রণালির মাধ্যমে পরিবাহিত হয়।
২১ জুন ইরানে মার্কিন হামলার পর ব্রেন্ট ক্রুডের দাম অস্থায়ীভাবে প্রতি ব্যারেল ৮০ ডলারের ওপরে উঠে যায় যা জানুয়ারির পর প্রথম। সংঘাত শুরুর আগে এই দাম ৬০ থেকে ৭৫ ডলারের মধ্যে ঘোরাফেরা করছিল। তেলের দাম আরও বাড়বে কি না তা নির্ভর করছে ইরানের পরবর্তী প্রতিক্রিয়ার ওপর।
জ্বালানি বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান টর্টোয়েজ ক্যাপিটালের সিনিয়র পোর্টফোলিও ম্যানেজার রব থামেলের মতে হরমুজ প্রণালিতে বড় ধরনের ব্যাঘাত ঘটলে তেলের দাম ১০০ ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে।
বিশ্ব অর্থনীতির ভারসাম্য রক্ষা করতে হরমুজ প্রণালির খোলা থাকা অত্যন্ত জরুরি। বিশেষ করে এশিয়ার দেশগুলো—যেমন চীন, ভারত ও দক্ষিণ কোরিয়া—এই প্রণালির ওপর নির্ভর করে বিশাল পরিমাণ তেল ও গ্যাস আমদানির জন্য। EIA-এর তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে হরমুজ প্রণালি দিয়ে যাওয়া ৮৪ শতাংশ অপরিশোধিত তেল এবং ৮৩ শতাংশ তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস গিয়েছে এশিয়ার বাজারে।
চীনের প্রতিদিনের তেল আমদানির বড় অংশ—প্রায় ৫.৪ মিলিয়ন ব্যারেল—হরমুজ প্রণালির ওপর নির্ভরশীল। ভারত আমদানি করে ২.১ মিলিয়ন এবং দক্ষিণ কোরিয়া ১.৭ মিলিয়ন ব্যারেল। বিপরীতে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের আমদানি মাত্র ৪ লাখ ও ৫ লাখ ব্যারেল।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, হরমুজ প্রণালি বন্ধ হলে সবচেয়ে বড় ক্ষতির মুখে পড়বে চীন। তাই তিনি চীনকে আহ্বান জানিয়েছেন, যেন তারা ইরানের সঙ্গে আলোচনা করে এই সংকট সমাধানের চেষ্টা করে।
তিনি আরও বলেন, প্রণালি বন্ধ করা ইরানের জন্য হবে একটি ভয়াবহ ভুল এবং অর্থনৈতিক আত্মঘাত। এর ফলে শুধু উত্তেজনাই বাড়বে না বরং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে। প্রয়োজনে পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়ার সক্ষমতা যুক্তরাষ্ট্রের আছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
এই পরিস্থিতিতে বিশ্ব অর্থনীতির স্বার্থে হরমুজ প্রণালির কার্যকর ও নিরাপদ ব্যবহার নিশ্চিত করাই এখন সময়ের বড় চ্যালেঞ্জ।
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- বদলে গেছে ধারণা, বিস্মিত ইসরায়েল
- সরাসরি পারমাণবিক অ'স্ত্র পাবে ইরান!
- ‘বিপর্যয় থেকে বিশ্ব মাত্র কয়েক মিনিট দূরে’
- প্রথম প্রান্তিকে মুনাফা থেকে লোকসানে গেল চার ব্যাংক
- সাত কোম্পানির বিনিয়োগকারীদের পুঁজির বড় অংশ উধাও
- হা'মলার পর হন্যে হয়ে ইরানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা যুক্তরাষ্ট্রের
- ভিডিও ফাঁস করার বিষয়ে মুখ খুলেছেন শরীয়তপুরের সেই ডিসি
- দুর্বল ১৫ আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিলুপ্তির চিন্তাভাবনা করছে বাংলাদেশ ব্যাংক
- জবাব দিতে শুরু করেছে ইরান
- একাধিক মিসাইল ছুঁড়েছে উত্তর কোরিয়া
- শেয়ার কিনেছেন চার কোম্পানির উদ্যোক্তা পরিচালকরা
- ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে ঢাবিতে ক্লাস ছুটি কতদিন, যা জানা গেল
- মোবাইলে কল এলেই ইন্টারনেট বন্ধ? এক মিনিটেই সমাধান!
- জেরুজালেম ও তেল আবিবে বড় বিস্ফোরণ, ট্রাম্পের জরুরি বৈঠক
- বিএসইসির তদন্তের জালে শেয়ারবাজারের ৫ ঋণগ্রস্ত কোম্পানি