ঢাকা, বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫, ৪ আষাঢ় ১৪৩২
জার্মানিতে বেক্সিমকো ৩৩ মিলিয়ন ইউরো ঋণখেলাপি

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারিখাত বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের মালিকানাধীন বেক্সিমকো লিমিটেড এবার জার্মানিতেও ঋণখেলাপি হয়েছে। এই ঘটনায় ঋণদাতা আইএনজি ব্যাংকের জার্মান শাখাকে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। ডাচ বহুজাতিক ব্যাংক-আইএনজি বেক্সিমকোকে দেওয়া ৩৩ মিলিয়ন ইউরোর ইসিএ টার্ম লোন আদায়ে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)-কে চিঠি দিয়েছে।
গত ২১ মে বৈদেশিক ঋণ ও সাপ্লায়ার্স ক্রেডিট যাচাই কমিটি (ফরেন লোন/সাপ্লায়ার্স ক্রেডিট স্ক্রুটিনি কমিটি)-এর সভায় বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর সভায় সভাপতিত্ব করেন।
সভার কার্যবিবরণী অনুযায়ী সিদ্ধান্ত হয়েছে, পাওনা আদায়ে বেক্সিমকো লিমিটেডের বিরুদ্ধে আইনী পদক্ষেপ নিতে জার্মান ঋণদাতাকে কমিটি পরামর্শ দেবে। কার্যবিবরণীতে আরও বলা হয়েছে, "ঋণগ্রহীতা বেক্সিমকো ঋণ পরিশোধে অগ্রসর না হলে বিদ্যমান আইনি কাঠামোর আওতায় ঋণ আদায়ের ব্যবস্থা নিতে ঋণদাতাকে বিডা জানাবে।"
বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বেক্সিমকো জার্মানির আইএনজি ব্যাংক থেকে ৩৩ মিলিয়ন ইউরোর ইসিএ টার্ম লোন নিয়েছিল। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি ঋণের আসল কিংবা সিকিউরিটি ইন্টারেস্ট পরিশোধ করেনি। এর পরিপ্রেক্ষিতে আইএনজি ব্যাংক বিডাকে চিঠি দিয়ে জানতে চেয়েছিল, বাংলাদেশ সরকার এ বিষয়ে বেক্সিমকোর বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ নিয়েছে এবং তার ফলাফল কী। এই চিঠিটিই গভর্নরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কমিটির সভায় উপস্থাপন ও আলোচনা হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, গত বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বেক্সিমকো গ্রুপের মোট ঋণ ছিল প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা, যার অর্ধেক তখন খেলাপি হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ ছিল। জনতা ব্যাংক থেকে কোম্পানিটি প্রায় ২৮ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে খেলাপি হয়েছে। শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত বেক্সিমকো লিমিটেডের ১৪টি কারখানা গত ৯ মার্চ থেকে স্থায়ীভাবে বন্ধ রয়েছে এবং এসব কারখানার শ্রমিকদের পাওনা টাকা সরকার পরিশোধ করেছে।
এদিকে, চেক প্রজাতন্ত্রের চেকোস্লোভেন্সকা ওবখোদিনি বানকা (চেকোস্লোভাকিয়ার বাণিজ্যিক ব্যাংক) থেকে নেওয়া ৪.১০ মিলিয়ন ইউরোর ইসিএ কাভার্ড বায়ার্স ক্রেডিট পরিশোধে 'সহযোগিতা না করার' অভিযোগে দেশবন্ধু গ্রুপের বিরুদ্ধে একটি চিঠি পাঠিয়েছে দিল্লিতে অবস্থিত চেক প্রজাতন্ত্রের দূতাবাস। এই চিঠি নিয়েও স্ক্রুটিনি কমিটির বৈঠকে আলোচনা হয়। কমিটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, দেশবন্ধু গ্রুপের ঋণখেলাপি পরিস্থিতির শান্তিপূর্ণ সমাধানে চেক প্রজাতন্ত্রের এক্সপোর্ট গ্যারান্টি অ্যান্ড ইন্স্যুরেন্স করপোরেশন (ইজিএপ) এবং ঋণগ্রহীতার মধ্যে কার্যকর যোগাযোগ স্থাপনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে বিডা।
গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর বেক্সিমকো গ্রুপের চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান গ্রেপ্তার হয়ে বর্তমানে কারাগারে আছেন। সম্প্রতি যুক্তরাজ্য সরকার তার ছেলে ও ভাতিজার নামে থাকা সম্পত্তি জব্দ করেছে।
অন্যদিকে, দেশবন্ধু গ্রুপের চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা দীর্ঘদিন ধরে দেশের বাইরে অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে। গ্রুপটির একটি কোম্পানি দেশবন্ধু পলিমার বাংলাদেশের শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত রয়েছে।
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- ডিভিডেন্ডের উপর উচ্চ কর: শেয়ারবাজারের স্থিতিশীলতা নিয়ে উদ্বেগ
- বদলে গেছে ধারণা, বিস্মিত ইসরায়েল
- শেয়ারবাজারের শর্ত পূরণে ৬০ কোম্পানিকে বিএসইসির আল্টিমেটাম
- মূলধন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত শেয়ারবাজারের ১৩ ব্যাংকের
- নীলক্ষেত হোস্টেল থেকে ঢাবির সাবেক শিক্ষার্থীর ম’রদেহ উদ্ধার
- শেয়ারবাজারের ১০ ব্যাংকে আমানত বেড়েছে ৩২ হাজার কোটি টাকা
- ইরানকে হা-ম-লা বন্ধে প্রস্তাব
- ঢাবিতে হটাৎ ছাত্রলীগের বিক্ষোভ, ককটেল বি-স্ফো-র-ণ
- কারাগারে ফাঁসিতে ঝুললেন সেই অস্ত্রধারী আ’লীগ নেতা
- দুই বড় খবরের মধ্যে আজ খুলছে দেশের শেয়ারবাজার
- ‘বিপর্যয় থেকে বিশ্ব মাত্র কয়েক মিনিট দূরে’
- মূলধনের বেশি রিজার্ভ জ্বালানি খাতের ১৪ কোম্পানির
- লন্ডন ছাড়ছেন তারেক রহমান
- শেয়ারবাজারে হাজার কোটির ক্লাবে ব্যাংকবহির্ভূত ৬ কোম্পানি
- জেরুজালেম ও তেল আবিবে বড় বিস্ফোরণ, ট্রাম্পের জরুরি বৈঠক