ঢাকা, শনিবার, ১৪ জুন ২০২৫, ৩০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
পাচারকৃত অর্থ ফেরত দিতে যুক্তরাজ্যের প্রতি আহ্বান

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস চার দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে বর্তমানে যুক্তরাজ্যে রয়েছেন। এ সময়কে ঘিরে যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ এবং তাদের পাচারকৃত অবৈধ অর্থ জব্দ করে বাংলাদেশে ফিরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে দুর্নীতিবিরোধী তিনটি সংস্থা।
মঙ্গলবার (১০ জুন) দেওয়া এক যৌথ বিবৃতিতে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি), স্পটলাইট অন করাপশন এবং ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল ইউকে, যুক্তরাজ্য সরকারের প্রতি এ আহ্বান জানায়।
বিবৃতিতে বলা হয়, 'দেশটিতে অবস্থানরত সন্দেহভাজন বাংলাদেশি অর্থপাচারকারীদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ এবং পাচারকৃত সম্পদ পুনরুদ্ধারে সংশ্লিষ্ট আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার প্রচেষ্টা জোরদার করতে হবে।'
এ বিষয়ে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, "বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক উত্তরণ এবং জবাবদিহিমূলক সুশাসনের সম্ভাবনাময় এ সময়ে যুক্তরাজ্য সরকারকে জরুরি ভিত্তিতে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে। রাষ্ট্র সংস্কারের চলমান উদ্যোগে, বিশেষত দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে পাচার হওয়া সম্পদ ফিরিয়ে দেওয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র। এতে একটি শক্ত বার্তা যাবে যে অর্থপাচারকারীদের শুধুই উৎস দেশ নয়, গন্তব্য দেশেও জবাবদিহির মুখোমুখি হতে হবে।"
স্পটলাইট অন করাপশনের নির্বাহী পরিচালক সুসান হাওলি বলেন, "সময়ের অপচয় না করে যুক্তরাজ্য সরকারের এখনই উচিত বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থ জব্দে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা এবং সংশ্লিষ্ট আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার প্রচেষ্টা জোরদার করা।"
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল ইউকে-এর পলিসি ডিরেক্টর ডানকান হেমস বলেন, "যুক্তরাজ্য সরকার অর্থপাচারের বিরুদ্ধে যে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে, তার বাস্তব প্রতিফলন হওয়া উচিত। বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠজনদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত যুক্তরাজ্যে পাচারকৃত ৪০০ মিলিয়ন পাউন্ডের সম্পদের যে তথ্য পাওয়া গেছে, তা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় জব্দ ও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। শুধু কথার মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক পুনরুদ্ধারে যুক্তরাজ্যকে সহযোগিতার বাস্তব উদাহরণ রাখতে হবে।"
প্রসঙ্গত, দ্য অবজারভার ও ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল ইউকে-এর যৌথ অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, যুক্তরাজ্যে শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিদের মালিকানাধীন অন্তত ৪০০ মিলিয়ন পাউন্ড মূল্যের সম্পদের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। এর মধ্যে যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি ইতোমধ্যে প্রায় ৯০ মিলিয়ন পাউন্ড মূল্যের সম্পদ জব্দ করেছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস দুর্নীতি দমন এবং ২০০৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত পাচার হওয়া বিপুল অর্থ—যার পরিমাণ বার্ষিক গড়ে প্রায় ১১ বিলিয়ন পাউন্ড বা ১৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার—পুনরুদ্ধারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। বাংলাদেশ সরকারের গঠিত শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিশনের তথ্যমতে, এই সময়কালে মোট প্রায় ২৩৪ বিলিয়ন ডলার বিদেশে পাচার হয়েছে।
বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার অন্তর্বর্তী সরকারকে শান্তি পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন। অন্যদিকে, ব্রিটিশ পররাষ্ট্র সচিব ঘোষণা দিয়েছেন, "অর্থপাচারের স্বর্ণযুগ শেষ হয়েছে।"
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণ: এক কোম্পানির শেয়ার কিনলেন উদ্যোক্তারা
- শেয়ারবাজারে বিস্ময়: এক লাখ টাকার শেয়ার ৮০ কোটি!
- বিনিয়োগকারীদের সর্বনাশ করেছে তালিকাভুক্ত দুই কোম্পানি
- বাংলাদেশের শেয়ারবাজারে দ্যুতি ছড়াচ্ছে ১৩ ‘বনেদি’ কোম্পানি
- মুনাফা থেকে লোকসানে তথ্য প্রযুক্তির দুই কোম্পানি
- ডিভিডেন্ডের উপর উচ্চ কর: শেয়ারবাজারের স্থিতিশীলতা নিয়ে উদ্বেগ
- শেয়ারবাজারের ১০ ব্যাংকে আমানত বেড়েছে ৩২ হাজার কোটি টাকা
- বড় আন্দোলনে নামছে ৩ 'দল'
- সত্যিই কি স্ট্রোক করেছেন মির্জা ফখরুল? যা জানা গেল
- ডিভিডেন্ড বেড়েছে শেয়ারবাজারের সাত ব্যাংকের
- ২৪ ঘণ্টায় করোনায় মৃ'ত্যু ৬
- ক্যাশ ফ্লো বেড়েছে ওষুধ খাতের ১৩ কোম্পানির
- ফেসবুক কমেন্টকে কেন্দ্র করে ঢাবি ছাত্রের আ-ত্ম-হ-ত্যা
- মূলধনের বেশি রিজার্ভ জ্বালানি খাতের ১৪ কোম্পানির
- মুনাফা বেড়েছে ১৮ জেনারেল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির