ঢাকা, শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫, ৬ আষাঢ় ১৪৩২
ইউনূসের সঙ্গে সংঘাত এড়িয়ে সমঝোতার পথে বিএনপি

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিষয়ে বিএনপি তাদের কঠোর অবস্থান থেকে সরে আসছে। দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকারের বিরুদ্ধে সংঘাতে না যাওয়ার জন্য দলটির সিনিয়র নেতাদের পরামর্শ দিয়েছেন।
শনিবার (০৭ জুন) ঈদের দিন রাতে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্যসহ সিনিয়র নেতারা খালেদা জিয়াকে শুভেচ্ছা জানাতে গেলে তিনি এই পরামর্শ দেন। বিএনপি চেয়ারপারসন নেতাদের বলেন, "অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে সংঘাতে গেলে বিএনপির কোনো লাভ নেই।"
খালেদা জিয়ার পরামর্শ ও তারেক-ইউনূস বৈঠক
বিএনপি চেয়ারপারসনের এই পরামর্শের পর সোমবার (০৯ জুন) রাতে স্থায়ী কমিটির বৈঠক ডাকা হয়। এই বৈঠকে খালেদা জিয়ার মতামতের ওপর বিশদ আলোচনা করা হয়। এ বিষয়ে আলোচনার পর কঠোর অবস্থান থেকে সরে আসার পাশাপাশি ড. ইউনূসের সঙ্গে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠকের বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
দলের একটি সূত্র জানায়, লন্ডনে আগামী শুক্রবার (১৩ জুন) ড. ইউনূসের সঙ্গে তারেক রহমানের প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। লন্ডনের ডরচেষ্টার হোটেলে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হবে। প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকে বৈঠকটি নির্ধারণ করা হয়।
নির্বাচন প্রসঙ্গে বিএনপির পূর্বের প্রতিক্রিয়া ও বর্তমান অবস্থান
ঈদের আগের দিন ৬ জুন সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, "জাতীয় সংসদ নির্বাচন আগামী বছরের এপ্রিল মাসের প্রথমার্ধের যে কোনো দিন অনুষ্ঠিত হবে।" এর পরপরই ওই রাতে স্থায়ী কমিটির বৈঠক ডেকে আলোচনার পর কড়া প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বিএনপি।
দলটি তখন বলেছিল, এপ্রিলের প্রথমার্ধে নির্বাচন হলে আবহাওয়ার সংকট থাকবে। এছাড়া রমজানের মধ্যে নির্বাচনী প্রচারণা ও কার্যক্রম এমন এক পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে, যা নির্বাচনকে পিছিয়ে দেওয়ার কারণ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। তাছাড়া ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠান কেন সম্ভব নয়, এর কোনো সুনির্দিষ্ট কারণ প্রধান উপদেষ্টার ভাষণে উল্লেখ করা হয়নি।
এরপর রাজনৈতিক অঙ্গনে পক্ষে-বিপক্ষে আলোচনা সমালোচনা তৈরি হয়। এমন পরিস্থিতির মধ্যে সরকার সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনার মাধ্যমে লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তারেক রহমানের বৈঠকের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয় এবং তারেক রহমানও বৈঠকের বিষয়ে সম্মতি জানান। এরপরই সোমবার রাতে বিএনপি স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বিষয়টি নির্ধারণ করা হয়। ধারণা করা হচ্ছে, আগের কঠোর অবস্থান থেকে সরে আসছে বিএনপি।
বৈঠকের গুরুত্ব ও রাজনৈতিক প্রভাব
প্রধান উপদেষ্টা ও তারেক রহমানের এই বৈঠককে বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় হিসেবে দেখা হচ্ছে। নির্বাচনের রোডম্যাপ, একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি এবং অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর ভূমিকা নিয়েও আলোচনা হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। নির্বাচনের আগে প্রধান উপদেষ্টা এবং বিরোধী দলের একজন শীর্ষ নেতার মধ্যে এই ধরনের উচ্চপর্যায়ের আলোচনা দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন জল্পনা-কল্পনার জন্ম দিয়েছে। এই আলোচনার ফলাফল দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা কমাতে এবং একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পথ প্রশস্ত করতে সহায়ক হবে কি না, সেটাই এখন দেখার বিষয়।
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- ডিভিডেন্ডের উপর উচ্চ কর: শেয়ারবাজারের স্থিতিশীলতা নিয়ে উদ্বেগ
- বদলে গেছে ধারণা, বিস্মিত ইসরায়েল
- শেয়ারবাজারের শর্ত পূরণে ৬০ কোম্পানিকে বিএসইসির আল্টিমেটাম
- ‘বিপর্যয় থেকে বিশ্ব মাত্র কয়েক মিনিট দূরে’
- মূলধন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত শেয়ারবাজারের ১৩ ব্যাংকের
- নীলক্ষেত হোস্টেল থেকে ঢাবির সাবেক শিক্ষার্থীর ম’রদেহ উদ্ধার
- ইরানকে হা-ম-লা বন্ধে প্রস্তাব
- ঢাবিতে হটাৎ ছাত্রলীগের বিক্ষোভ, ককটেল বি-স্ফো-র-ণ
- কারাগারে ফাঁসিতে ঝুললেন সেই অস্ত্রধারী আ’লীগ নেতা
- একাধিক মিসাইল ছুঁড়েছে উত্তর কোরিয়া
- দুর্বল ১৫ আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিলুপ্তির চিন্তাভাবনা করছে বাংলাদেশ ব্যাংক
- দুই বড় খবরের মধ্যে আজ খুলছে দেশের শেয়ারবাজার
- ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে ঢাবিতে ক্লাস ছুটি কতদিন, যা জানা গেল
- লন্ডন ছাড়ছেন তারেক রহমান
- জেরুজালেম ও তেল আবিবে বড় বিস্ফোরণ, ট্রাম্পের জরুরি বৈঠক