ঢাকা, রবিবার, ২২ জুন ২০২৫, ৮ আষাঢ় ১৪৩২

প্রধান উপদেষ্টাকে টিউলিপের চিঠি, যা বললেন প্রেস সচিব

ডুয়া নিউজ- জাতীয়
২০২৫ জুন ০৮ ২০:৫৩:১৬
প্রধান উপদেষ্টাকে টিউলিপের চিঠি, যা বললেন প্রেস সচিব

যুক্তরাজ্যের এমপি ও সাবেক মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিকের পাঠানো চিঠির বিষয়ে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

রোববার (৮ জুন) বিকেলে তিনি জানান, আমরা এখন পর্যন্ত টিউলিপ সিদ্দিকের কোনো চিঠি পাইনি। ৫ জুন থেকে ছুটিতে রয়েছি।

এদিকে জানা গেছে, অধ্যাপক ইউনূস আগামীকাল সোমবার (৯ জুন) লন্ডনের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করবেন এবং ১৪ জুন দেশে ফিরবেন।

তবে এর মধ্যেই রোববার ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, টিউলিপ সিদ্দিক অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চান এবং তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে বিদ্যমান ‘ভুল–বোঝাবুঝির’ অবসান ঘটাতে চান।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইউনূসের আসন্ন যুক্তরাজ্য সফরের সময় তিনি এই সাক্ষাৎ চান বলে একটি চিঠিও পাঠিয়েছেন টিউলিপ, যিনি বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগনি হিসেবেও পরিচিত।

চিঠিতে যা আছে

চিঠিতে টিউলিপ লিখেছেন, “আমি জানতে পেরেছি আপনি সরকারি সফরে লন্ডনে আসতে পারেন। আপনার এই সফর উপলক্ষে আমি আপনাকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাই। একজন সংসদ সদস্য ও সাবেক মিনিস্টার হিসেবে আমি সবসময় যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের মধ্যে একটি দৃঢ় ও স্বাস্থ্যকর সম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টা করেছি, বিশেষ করে লন্ডনে বসবাসরত বিশাল ব্রিটিশ-বাংলাদেশি কমিউনিটির কারণে, যার একজন গর্বিত সদস্য আমি নিজেও। আমি আপনার সফরের সর্বাঙ্গীন সাফল্য কামনা করি।

“আপনি যখন লন্ডনে থাকবেন, আমি আপনাকে হাউস অব কমন্সে আমার সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজে বা বিকেলের চা-পানের আমন্ত্রণ জানাতে চাই। জনসেবার প্রতি আমাদের অভিন্ন প্রতিশ্রুতি ও দায়বদ্ধতা রয়েছে, আর আমরা যারা সুশাসন, সঠিক প্রক্রিয়া এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি, তাদের জন্য এটা চ্যালেঞ্জিং একটা সময়। বিষয়গুলো নিয়ে আপনার অভিমত জানতে পারলে আমার ভালো লাগবে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকাকালে আমি সবসময়ই অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে আপনার ঐতিহাসিক কাজের প্রতি আগ্রহী ছিলাম।”

টিউলিপ মনে করছেন, ঢাকার দুর্নীতি দমন কমিশনের পক্ষ থেকে তোলা ‘মিথ্যা’ অভিযোগের কারণে যে ‘ভুল বোঝাবুঝি’ তৈরি হয়েছে, লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করার সুযোগ পেলে তিনি হয়ত বোঝাতে পারবেন যে, সেসব অভিযোগ ‘সঠিক নয়’।

“তারা (দুদক) মনে করছে, আমার খালা, বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিষয়ে আমার কাছে কিছু প্রশ্নের উত্তর পাওয়া দরকার। আমি যুক্তরাজ্যের একজন নাগরিক, লন্ডনে আমার জন্ম। গত এক দশক ধরে আমি পার্লামেন্টে হ্যাম্পস্টেড ও হাইগেট আসনের ভোটারদের প্রতিনিধিত্ব করছি। বাংলাদেশে আমার কোনো সম্পত্তি বা ব্যবসায়িক স্বার্থ নেই। বাংলাদেশের প্রতি আমার আবেগ থাকলেও সেটি আমার জন্মস্থান বা কর্মস্থল নয়, সেখানে আমি থাকিও না।”

এই ব্রিটিশ এমপি অভিযোগ করেছেন, বিষয়টি স্পষ্ট করতে তিনি দুদকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছেন, কিন্তু তারা লন্ডনে তার আইনজীবীদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে ‘অস্বীকৃতি জানিয়েছে’ এবং ঢাকায় উল্টোপাল্টা ঠিকানায় বারবার চিঠি পাঠাচ্ছে।

“এই কাল্পনিক তদন্তের প্রতিটি পদক্ষেপ গণমাধ্যমে প্রকাশ করা হচ্ছে, অথচ আমার আইনজীবীদের সঙ্গে কোনো আলোচনা করা হচ্ছে না। এসব প্রতিবেদন যেন আমার নির্বাচনী এলাকার জনগণ এবং দেশের জন্য আমার গুরুত্বপূর্ণ কাজের পথে বাধা হয়ে না দাঁড়ায়, তা নিশ্চিত করা যে অত্যন্ত জরুরি, তা আপনি বুঝতে পারবেন বলেই আমি বিশ্বাস করি।”

ইউনূসকে টিউলিপ লিখেছেন, “এই বিভ্রান্তি দূর করতে আপনার সহায়তা পেলে আমি অত্যন্ত কৃতজ্ঞ হব। আমরা সাক্ষাৎ করার আগে আমি আপনার সঙ্গে আমার আইনজীবীদের পক্ষ থেকে দুদককে দেওয়া জবাবগুলো শেয়ার করতে চাই। আমি লন্ডনের পার্লামেন্টারি স্ট্যান্ডার্ডস কমিশনারের রিপোর্টের একটি কপিও আপনাকে দিতে চাই, যেখানে স্পষ্ট করা হয়েছে যে, কোনো ধরনের অনিয়মের সঙ্গে আমি জড়িত ছিলাম না।

“আপনার ব্যস্ত সূচির মধ্যে কখন ওয়েস্টমিনস্টারে আমাদের সাক্ষাৎ সম্ভব, অনুগ্রহ করে জানালে কৃতজ্ঞ থাকব। আপনার সঙ্গে সাক্ষাতের অপেক্ষায় থাকলাম।”

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত