ঢাকা, রবিবার, ৮ জুন ২০২৫, ২৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
দুদকের জালে সাবেক শীর্ষ ১০ সামরিক কর্মকর্তা

সরকার পরিবর্তনের পর দুর্নীতির বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতিতে কঠোর অবস্থান নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এরই ধারাবাহিকতায় এবার সাবেক ১০ জন শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তাকে অনুসন্ধানের আওতায় আনা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে ক্ষমতার অপব্যবহার, ঘুষ গ্রহণ, জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন এবং কোটি কোটি টাকার অর্থপাচারের।
দুদকের তদন্ত অগ্রগতিদুদক সূত্রে জানা গেছে, এসব অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত ও অনুসন্ধান ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। কয়েকজনের ব্যাংক হিসাব ও সম্পদ জব্দ করা হয়েছে এবং অনেকের বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞাও জারি করা হয়েছে।
অভিযুক্তদের তালিকা ও অভিযোগ
১. জেনারেল (অব.) আজিজ আহমেদ – সাবেক সেনাপ্রধান
অভিযোগ: ক্ষমতার অপব্যবহার, শত কোটি টাকার সম্পদ অর্জন, হুন্ডির মাধ্যমে মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরে অর্থপাচার।
বিশেষ তথ্য: যুক্তরাষ্ট্র তার ভিসা বাতিল করেছে; চার সদস্যের কমিটি অনুসন্ধান করছে।
২. এয়ার চিফ মার্শাল (অব.) শেখ আব্দুল হান্নান – সাবেক বিমানবাহিনী প্রধানঅভিযোগ: রাষ্ট্রীয় অর্থ অপচয়, ঘুষ গ্রহণ, অবৈধ সম্পদ অর্জন।ব্যাংক হিসাব ও কয়েক কোটি টাকার সম্পদ জব্দ।
৩. মেজর জেনারেল টি এম জোবায়ের – সাবেক এনএসআই মহাপরিচালকঅভিযোগ: চাকরিতে ঘুষ, ভয়ভীতি দেখিয়ে সম্পদ অর্জন, লন্ডনে অর্থপাচার।ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ, বিদেশযাত্রা নিষিদ্ধ।
৪. মেজর জেনারেল (অব.) মো. সিদ্দিকুর রহমান – সাবেক রাজউক চেয়ারম্যানঅভিযোগ: রাজউকের প্রকল্পে দুর্নীতি, অবৈধ সম্পদ অর্জন।তথ্য: তার ও স্ত্রীর বিদেশযাত্রা নিষিদ্ধ, তদন্ত চলমান।
৫. মেজর জেনারেল (অব.) সালাউদ্দিন মিয়াজী – সাবেক সামরিক সচিবঅভিযোগ: জমি দখল ও দুর্নীতির মাধ্যমে পার্ক নির্মাণ।গ্রেপ্তার হন যশোরের রিসোর্ট থেকে; বর্তমানে জামিনে মুক্ত।
৬. মেজর জেনারেল (অব.) হামিদুল হক – সাবেক ডিজিএফআই প্রধানঅভিযোগ: জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ ও অর্থ আত্মসাৎ।তাকে ও স্ত্রীকে বিদেশযাত্রা থেকে বিরত রাখতে আদালতের নিষেধাজ্ঞা।
৭. লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. মজিবুর রহমান – সাবেক এসএসএফ ডিজিঅভিযোগ: স্ত্রীসহ বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জন ও অর্থপাচার।দুইটি বাড়ি, ১০টি প্লট ও ১৬টি ব্যাংক হিসাব জব্দ।
৮. লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী – সাবেক এমপিঅভিযোগ: মালয়েশিয়ায় শ্রমবাজারে দুর্নীতি, অবৈধ ব্যবসা।ফেনীর সাবেক এমপি হিসেবে ১৬টি মামলায় অভিযুক্ত।
৯. মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান – সাবেক এনটিএমসি মহাপরিচালকঅভিযোগ: ৪০ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ, ৩৪২ কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেন।দুদক তার বিরুদ্ধে দুটি মামলা করেছে; বিদেশি ব্যাংক হিসাবের তথ্য পাওয়া গেছে।
১০. নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেলবর্তমানে বিদেশে অবস্থানরত এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধেও অনুসন্ধান চলমান।
দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন বলেন, “প্রত্যেকটি অভিযোগ আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যাচাই করা হচ্ছে। অনুসন্ধান শেষে প্রতিবেদন কমিশনে জমা দেওয়া হবে। এরপর প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
উল্লেখ্য, এখনো অভিযুক্তদের পক্ষ থেকে কেউ গণমাধ্যমে বক্তব্য দেননি।
সাবেক সামরিক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে এই পদক্ষেপ দেশব্যাপী আলোড়ন তুলেছে। এতে স্পষ্ট হয়েছে, আইনের দৃষ্টিতে কেউই নিষ্কৃতি পাচ্ছেন না – সবাইকেই জবাবদিহির আওতায় আসতে হচ্ছে।
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- লাইভে এসে হিরো আলমের আ-ত্ম-হ-ত্যা
- পাঁচ কোম্পানির বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিএসসি
- শেয়ার কারসাজিতে ১৪ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানকে ২.৫২ কোটি টাকা জরিমানা
- শিক্ষা ক্যাডারে ৪৯তম বিশেষ বিসিএস সার্কুলার প্রকাশে পিএসসির চেয়ারম্যানকে স্মারকলিপি
- মৌসুমী-হাসান জাহাঙ্গীরের বিয়ে: ওমর সানীর ‘জুতাপেটা’র হুমকি
- বিনিয়োগকারীদের ডিভিডেন্ড দেয়ায় ক্যাটাগরি উন্নতি
- ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণ: এক কোম্পানির শেয়ার কিনলেন উদ্যোক্তারা
- শেয়ারবাজার বাঁচাতে অর্থ উপদেষ্টা ও বিএসইসি চেয়ারম্যানের অপসারণের দাবি
- শেয়ারবাজারে কালো টাকা বিনিয়োগের সুযোগ চান বিনিয়োগকারীরা
- প্রথমবারের মতো লোকসানে কোম্পানি, ডিভিডেন্ডও তলানিতে
- শেয়ারবাজারের ৫ ইসলামী ব্যাংক একীভূত করতে রোডম্যাপ ঘোষণা
- বিচ হ্যাচারি: ঝলমলে অবস্থান থেকে হঠাৎ অন্ধকারে!
- ডিএসইর চোখে বাজেট শেয়ারবাজারবান্ধব
- শেয়ার কারসাজির দায়ে হিরু-সাকিবদের ২০৮ কোটি টাকা জরিমানা
- মোবাইল কোম্পানিকে শেয়ারবাজারে আনতে বিশেষ প্রণোদনা