ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৫, ১৩ কার্তিক ১৪৩২

অভিযানে জামুকা, ১ লাখ ২২ হাজার মুক্তিযোদ্ধার বিরুদ্ধে ভুয়া সনদ নেওয়ার অভিযোগ

২০২৫ জুন ০২ ১১:১৪:৫৭

অভিযানে জামুকা, ১ লাখ ২২ হাজার মুক্তিযোদ্ধার বিরুদ্ধে ভুয়া সনদ নেওয়ার অভিযোগ

দেশে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা শনাক্তে মাঠপর্যায়ে কাজ শুরু করেছে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা)। এই কার্যক্রমের প্রথম ধাপে আজ (সোমবার) কুমিল্লা সার্কিট হাউজে সকাল ১০টা থেকে ৩১ জনের বিরুদ্ধে শুনানি অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এদের সবাই মুক্তিযোদ্ধা সনদধারী হলেও তাদের বিরুদ্ধে ভুয়া সনদ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

শুনানির জন্য জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে সংশ্লিষ্টদের চিঠি দিয়ে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে সংশ্লিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা, অভিযোগকারী, স্থানীয় প্রবীণ ব্যক্তি, মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ের তথ্যপ্রমাণ ও সাক্ষ্য নিয়ে সংশ্লিষ্ট পরিবারের সদস্যদের।

ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা শনাক্তে বৃহৎ অভিযান:

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম বীরপ্রতীক দায়িত্ব গ্রহণের পরই ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা তৈরি ও যাচাই-বাছাইয়ে নির্দেশ দেন। এরপরই জেলা ও উপজেলা পর্যায় থেকে হাজার হাজার অভিযোগ জমা পড়ে। এসব অভিযোগ যাচাই-বাছাই করতে মাঠে নামে জামুকা।

জামুকার মহাপরিচালক শাহিনা খাতুন বলেন, "ঢাকায় বসে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা চিহ্নিত করা সম্ভব না। তাই আমরা সরাসরি মাঠে যাচ্ছি। ঘটনাস্থলে গিয়ে সাক্ষ্য-প্রমাণ যাচাই করে সত্য উদঘাটনের চেষ্টা করছি।"

জামুকার সদস্য খ. ম. আমীর আলী বলেন, "সব সরকার শুধু সনদ দিয়েই গেছে। কেউ যাচাই করেনি কে আসল, কে ভুয়া। এখন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধার সম্মান রক্ষায় আমরা ভুয়াদের শনাক্তের কাজ করছি।"

১ লাখ ২২ হাজার ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার বিরুদ্ধে অভিযোগ:

মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে দেশে ২ লাখ ৮ হাজার মুক্তিযোদ্ধা সনদধারী রয়েছেন। কিন্তু জামুকার হিসাবে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা প্রায় ১ লাখ ২২ হাজার। মূল ভিত্তি ধরা হয়েছে ১৯৯৪ সালে বিএনপি সরকারের সময়ে করা ৮৬ হাজারের মুক্তিযোদ্ধার তালিকা।

এ পর্যন্ত ২ হাজার ১১১ জনের সনদ বয়সের ঘাটতির কারণে বাতিল হয়েছে এবং সর্বমোট ৩৯২৬ জনের গেজেট বাতিল হয়েছে। সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছেন ৮৯ হাজার ২৩৫ জন।

আজকের শুনানিতে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ:

আজ কুমিল্লা অঞ্চলের বিভিন্ন উপজেলা থেকে মোট ৩১ জনের বিরুদ্ধে ভুয়া সনদ নেওয়ার অভিযোগে শুনানি অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তাদের মধ্যে রয়েছেন:

লাকসাম, চৌদ্দগ্রাম, নাঙ্গলকোট, বরুড়া, মুরাদনগর, হোমনা, কসবা, ব্রাহ্মণপাড়া, বেগমগঞ্জ, চাঁদপুর সদর, কুমিল্লা সদরসহ বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা।

অনেকের গেজেট নম্বর ও ঠিকানাসহ অভিযোগের তথ্যপত্র প্রস্তুত করেছে জামুকা।

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় একটি সঠিক ও নির্ভরযোগ্য ডেটাবেজ তৈরির পরিকল্পনা করছে যেখানে শুধু প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধারাই অন্তর্ভুক্ত হবেন। অভিযোগ যাচাই ও শুনানি প্রক্রিয়া ধাপে ধাপে সারাদেশে চলবে।

তথ্য: যুগান্তর

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত