ঢাকা, শনিবার, ২১ জুন ২০২৫, ৭ আষাঢ় ১৪৩২

স্বচ্ছতা নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের দিকে আঙুল তুললেন দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য

ডুয়া নিউজ- জাতীয়
২০২৫ মে ২৮ ০৬:০৫:৫৭
স্বচ্ছতা নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের দিকে আঙুল তুললেন দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য

বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, সরকার পরিবর্তন হলেও বাজেট প্রণয়নের প্রক্রিয়ায় কোনো পরিবর্তন আসেনি। বৈষম্য হ্রাস বা কর্মসংস্থান বাড়াতে সরকারের কোনো সুস্পষ্ট পরিকল্পনাও দেখা যাচ্ছে না। অন্তর্বর্তী সরকারের কাজেও স্বচ্ছতার ঘাটতি রয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

রাজধানীর তেজগাঁওয়ে এনটিভির স্টুডিওতে অনুষ্ঠিত ‘কেমন বাজেট চাই’ শীর্ষক আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন।

এফবিসিসিআই ও এনটিভির যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিত এই আলোচনা অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আনিসুজ্জামান চৌধুরী, বিএনপি নেতা আবদুল মঈন খান, এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান, এফবিসিসিআইয়ের প্রশাসক হাফিজুর রহমান এবং বিকেএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম।

দেবপ্রিয় বলেন, সরকার বদলেছে ঠিকই, কিন্তু প্রক্রিয়া আগের মতোই রয়ে গেছে। এখনো বাজেট পরোক্ষ করের ওপর নির্ভরশীল। বৈষম্য কমাতে বা কর্মসংস্থান বাড়াতে কোনো দৃশ্যমান উদ্যোগ নেই। বাজেট নিয়ে আবার সেই পুরনো কথাই শোনা যাচ্ছে। বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমান সরকারের মেয়াদে ২৭ লাখ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমেছে, যাদের মধ্যে ১৮ লাখই নারী। তাহলে নতুন সরকার কীভাবে বৈষম্য হ্রাসে কাজ করছে?

তিনি আরও বলেন, “এই বাজেট আসলে পূর্ববর্তী সরকারের বাজেটেরই ধারাবাহিকতা। কাঠামোগত কোনো পরিবর্তন হয়নি। বড় প্রকল্পে বরাদ্দ কাটা হয়েছে কি না, সে বিষয়ে কোনো তথ্য নেই। বরং মেগা প্রকল্পগুলোতেই বরাদ্দ বাড়তে দেখা যাচ্ছে।”

দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বাজেট প্রণয়নে অংশীজনদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার ঘাটতির বিষয়টি তুলে ধরেন। এনবিআর ভাগ করা একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ হলেও তা নিয়ে আলোচনা না হওয়ায় কার্যকর বাস্তবায়ন হয়নি বলে তিনি মন্তব্য করেন। শেয়ারবাজার পুনরুজ্জীবনের ক্ষেত্রেও একই চিত্র পরিলক্ষিত হচ্ছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।

তিনি বলেন, এই সরকার বৈধ হলেও নির্বাচিত নয়। ফলে কিছু সীমাবদ্ধতা থাকা স্বাভাবিক। কিন্তু সংস্কার, নির্বাচন, বিচার– এসব নিয়েই যখন আলোচনার জোয়ার, তখন অর্থনীতির ভবিষ্যৎ পথরেখা নিয়েও পরিষ্কার পরিকল্পনা থাকা জরুরি।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আনিসুজ্জামান চৌধুরী বলেন, দেশের অর্থনীতি অনেকটাই ঘুরে দাঁড়িয়েছে। আইএমএফের সহায়তায় আমরা আইসিইউ থেকে বেরিয়ে এসেছি। এটি বড় একটি অর্জন।

বিএনপি নেতা আবদুল মঈন খান বলেন, এ বাজেট আসলে অন্তর্বর্তীকালীন, সত্যিকারের জনগণের বাজেট নয়। গত ৯ মাসে কোনো আলোচনার উদ্যোগ নেয়নি সরকার। অথচ প্রায় ১৫টি সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়েছে—তবে বাজেট নিয়ে কেন নয়?

এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান জানান, এবার রাজস্ব আদায়ে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। কর অব্যাহতির সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে আসার কথাও বলেন তিনি।

বিকেএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, আগে আমাদের প্রস্তাবনা বাজেটে প্রতিফলিত হতো না। তবে এবার আমরা কিছুটা আশাবাদী। যদিও শিল্প খাত এখনো অনেকটা আইসিইউতে রয়েছে। তাকে সচল করতে কিছু প্রণোদনা দরকার।

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত