ঢাকা, শনিবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩ পৌষ ১৪৩২

শ্রুতিলেখক সেবা নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নতুন নীতিমালা প্রকাশ

২০২৫ ডিসেম্বর ২৭ ২১:৫২:২৪

শ্রুতিলেখক সেবা নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নতুন নীতিমালা প্রকাশ

নিজস্ব প্রতিবেদক: পাবলিক ও শ্রেণি পরীক্ষায় দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ও শারীরিকভাবে লিখতে অক্ষম শিক্ষার্থীদের জন্য শ্রুতিলেখকের সেবা গ্রহণ সংক্রান্ত নতুন নীতিমালা প্রকাশ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। ‘শ্রুতিলেখক এর সেবা গ্রহণ সংক্রান্ত নীতিমালা ২০২৫’ শীর্ষক এই নীতিমালায় শিক্ষার্থীদের জন্য বাড়তি সময় এবং আধুনিক সুযোগ-সুবিধার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব রেহানা পারভীন এই নীতিমালায় স্বাক্ষর করেছেন।

কারা পাবেন এই সুবিধা?

দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ব্যক্তি অথবা আকস্মিক দুর্ঘটনা বা স্থায়ী প্রতিবন্ধিতার কারণে যারা নিজ হাতে লিখতে সক্ষম নন, তারা এই সুবিধার আওতায় ‘শ্রুতিনির্ভর পরীক্ষার্থী’ হিসেবে গণ্য হবেন। এই নীতিমালা সরকারি-বেসরকারি স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় এবং সব শিক্ষা বোর্ডের অধীনে পরিচালিত পরীক্ষার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে।

নীতিমালার প্রধান বৈশিষ্ট্যসমূহ:

১. অতিরিক্ত সময়: শ্রুতিনির্ভর পরীক্ষার্থীরা মোট সময়ের এক-চতুর্থাংশ (২৫ শতাংশ) অতিরিক্ত সময় পাবেন। অর্থাৎ প্রতি ঘণ্টায় ১৫ মিনিট করে বাড়তি সময় মিলবে। তবে পরীক্ষার সময় যাই হোক, অতিরিক্ত সময় ১০ মিনিটের কম হবে না।

২. শ্রুতিলেখক মনোনয়ন: পরীক্ষার্থী নিজে সর্বোচ্চ ২ জন শ্রুতিলেখক মনোনয়ন করতে পারবেন। যদি কোনো শিক্ষার্থী শ্রুতিলেখক দিতে না পারেন, তবে কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ তা সরবরাহ করবে। নিয়োগের অন্তত ৭ দিন আগে শ্রুতিলেখকের সঙ্গে পরীক্ষার্থীর সাক্ষাতের ব্যবস্থা করতে হবে।

৩. শ্রুতিলেখকের যোগ্যতা ও দায়িত্ব: শ্রুতিলেখকের উচ্চারণ স্পষ্ট, হাতের লেখা সুন্দর এবং বানান ও লেখায় দ্রুত হতে হবে। তিনি প্রশ্ন পড়ে শোনানো, উত্তর হুবহু লেখা এবং ওএমআর ফরম পূরণে সহায়তা করবেন।

৪. সহায়ক উপকরণ: পরীক্ষার্থীরা টকিং ক্যালকুলেটর, ব্রেইল স্লেট, অ্যাবাকাস, হুইলচেয়ার বা বিশেষ ম্যাগনিফায়ার ব্যবহার করতে পারবেন। এমনকি কর্তৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে (ইন্টারনেট ছাড়া) কম্পিউটার ব্যবহারের সুযোগও থাকবে।

৫. অবকাঠামো সুবিধা: বিশেষ এই পরীক্ষার্থীদের জন্য কেন্দ্রের নিচতলায় পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। পর্যাপ্ত আলো এবং প্রয়োজনে তাদের শারীরিক অবস্থা অনুযায়ী চেয়ার-টেবিল বা বেডের ব্যবস্থা রাখতে হবে।

অন্যান্য নিয়মাবলি:

শিক্ষার্থীদের প্রমাণ হিসেবে সমাজসেবা অধিদপ্তরের ‘সুবর্ণ নাগরিক কার্ড’ অথবা সিভিল সার্জনের প্রত্যয়নপত্র (সর্বোচ্চ ৬ মাস মেয়াদী) জমা দিতে হবে। শ্রুতিলেখকদের কাজের বিনিময়ে সম্মানী ও প্রশংসাপত্র প্রদান করা হবে। নীতিমালায় কঠোরভাবে বলা হয়েছে, শ্রুতিলেখকের মাধ্যমে কোনো অনৈতিক সুবিধা বা প্রতারণার আশ্রয় নিলে সংশ্লিষ্ট পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা বাতিল করা হবে।

এসপি

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত

শিক্ষা এর অন্যান্য সংবাদ