ঢাকা, সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১ পৌষ ১৪৩২

সর্বদলীয় প্রতিরোধ সমাবেশ শুরু

২০২৫ ডিসেম্বর ১৫ ১৬:৩৪:০৭

সর্বদলীয় প্রতিরোধ সমাবেশ শুরু

নিজস্ব প্রতিবেদক: ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদির ওপর গুলির ঘটনার প্রতিবাদে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শুরু হয়েছে ‘সর্বদলীয় প্রতিরোধ সমাবেশ’। সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) বিকাল ৩টায় আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হওয়া এই কর্মসূচিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলসহ সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশ নিচ্ছেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, সমাবেশ শুরুর আগেই শহীদ মিনার এলাকায় নেতাকর্মীদের উপস্থিতি বাড়তে থাকে। দুপুরের পর থেকেই মঞ্চ প্রস্তুত, চেয়ার সাজানোসহ নানা আয়োজন সম্পন্ন করা হয়। ধীরে ধীরে বিভিন্ন সংগঠনের কর্মীদের ব্যস্ততায় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ একটি প্রতিবাদী সমাবেশস্থলে পরিণত হয়।

সমাবেশস্থলে উপস্থিত নেতাকর্মীরা ধারাবাহিকভাবে প্রতিবাদী স্লোগান দিতে থাকেন। স্লোগানে তারা বলেন, ‘আমরা সবাই হাদি হবো, ভুলের মুখে কথা বলব’, ‘এক হাদি রক্ত দেবে, লক্ষ হাদিস জন্ম নেবে’ এবং ‘নারায়ে তাকবির আল্লাহু আকবর’। শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলার ন্যায়বিচারের দাবিতে ক্ষোভ প্রকাশ করে হামলাকারীদের দ্রুত বিচারের দাবি তোলা হয়।

সমাবেশ শুরুর আগে মঞ্চে গান ও কবিতা আবৃত্তির আয়োজন করা হয়। এসব পরিবেশনার মাধ্যমে গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে সহিংসতার বিরুদ্ধে অবস্থান তুলে ধরা হয় এবং শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক চর্চার আহ্বান জানানো হয়।

সমাবেশে অংশ নেওয়া বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা হাদির ওপর হামলার তীব্র নিন্দা জানান। তাদের বক্তব্যে বারবার উঠে আসে রাজনৈতিক মতপ্রকাশে সহিংসতার কোনো স্থান নেই এবং এই ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত শনাক্ত করে দৃষ্টান্তমূলক বিচার নিশ্চিত করতে হবে।

আয়োজকদের ভাষ্য অনুযায়ী, এই সর্বদলীয় সমাবেশের মূল উদ্দেশ্য হলো শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলার প্রতিবাদ জানানো এবং রাজনৈতিক সহিংসতার বিরুদ্ধে একটি ঐক্যবদ্ধ অবস্থান স্পষ্ট করা। তারা বলেন, মতভিন্নতা থাকতেই পারে, কিন্তু তা কখনোই সহিংসতায় রূপ নেওয়া গ্রহণযোগ্য নয়।

শান্তিপূর্ণ পরিবেশে চলমান এই সমাবেশে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা অংশ নিচ্ছেন। শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে প্রতিবাদী কণ্ঠে ন্যায়বিচার ও সহিংসতামুক্ত রাজনীতির দাবি উচ্চারিত হচ্ছে।

উল্লেখ্য, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম সংগঠক শরিফ ওসমান হাদি অভ্যুত্থান-অনুপ্রাণিত সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক আন্দোলন ‘ইনকিলাব মঞ্চ’-এর আহ্বায়ক এবং ঢাকার ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারের প্রতিষ্ঠাতা। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতার ঘোষণা দিয়ে তিনি নিয়মিত গণসংযোগ চালিয়ে আসছিলেন।

এরই ধারাবাহিকতায় গত ১২ ডিসেম্বর (শুক্রবার) জুমার নামাজের পর পুরানা পল্টনের বক্স-কালভার্ট রোড এলাকায় মোটরসাইকেলে আসা দুই আততায়ী চলন্ত রিকশায় থাকা হাদির মাথায় গুলি করে পালিয়ে যায়। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়, পরে অবস্থার অবনতি হলে এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সর্বশেষ উন্নত চিকিৎসার জন্য আজ তাকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হচ্ছে। চিকিৎসকদের মতে, তার শারীরিক অবস্থা এখনো সংকটাপন্ন।

ইএইচপি

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত