ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৫, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

তারেক রহমান দেশে ফিরছেন মধ্য ডিসেম্বরে

২০২৫ নভেম্বর ২৭ ০৬:৪৪:৩২

তারেক রহমান দেশে ফিরছেন মধ্য ডিসেম্বরে

নিজস্ব প্রতিবেদক: ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এখনো দেশের ভোটার হিসেবে অন্তর্ভুক্ত নন। দলীয় একাধিক সূত্র জানায়, আগামী মাসের মাঝামাঝি দেশে ফেরার পর তিনি ভোটার হিসেবে নিবন্ধন করবেন। যদিও আইন অনুযায়ী তিনি বিদেশে থেকেও ভোটার হতে পারতেন, কিন্তু ইচ্ছাকৃতভাবে দেশে ফিরে নিবন্ধনের সিদ্ধান্তই তাঁর।

নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে কথা বললে কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেন, তারেক রহমান লন্ডনে ভোটার হয়েছেন কি না, এ বিষয়ে তাদের কোনো আনুষ্ঠানিক তথ্য নেই। তিনি বলেন, প্রাপ্তবয়স্ক কোনো নাগরিক ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত না থাকলে আবেদন করলেই যে কোনো সময় ভোটার হওয়া সম্ভব, তবে এ ক্ষেত্রে নির্বাচন আইন ও সময়সীমা বিবেচনায় নিতে হবে।

তার বক্তব্য অনুযায়ী, যাদের বয়স ৩১ অক্টোবরের মধ্যে ১৮ বছর পূর্ণ হয়েছে, তারা নতুন তালিকায় যুক্ত হয়েছেন। তবে যারা বাদ পড়েছেন, নির্বাচনের আগে আর যুক্ত হওয়ার সুযোগ নেই। কিন্তু পূর্বে ভোটার ছিলেন কিংবা বয়স বেশি—এমন কেউ বাদ থাকলে তাঁরা আবেদন করলে নির্বাচন কমিশন সম্পূরক তালিকা প্রকাশ করে অন্তর্ভুক্ত করতে পারবে। নির্বাচন করতে চাইলে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার আগেই ভোটার হিসেবে নিবন্ধন করা যাবে।

২০০৮ সালে ছবিযুক্ত ভোটার তালিকা তৈরির সময় তারেক রহমান ও তাঁর স্ত্রী জোবাইদা রহমান লন্ডনে অবস্থান করছিলেন। সম্প্রতি দেশে এসে জোবাইদা রহমান ভোটার হয়েছেন, কিন্তু তারেক রহমান সে প্রক্রিয়ায় অংশ নেননি এবং এখনও কোনো আবেদনও দেননি। দলীয় সূত্র বলছে, দেশে ফিরে তিনি নিজেই এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবেন।

ছবিসহ জাতীয় পরিচয়পত্র পেতে আবেদনকারীর স্বাক্ষর, দশ আঙুলের ছাপ এবং চোখের আইরিশ স্ক্যান সংগ্রহ করা বাধ্যতামূলক। নির্বাচন কমিশন চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করেছে, তবে প্রয়োজনে তিনি সরাসরি আবেদন করে ভোটার হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হতে পারবেন। যেহেতু তিনি নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন, তাই মনোনয়ন দাখিলের আগেই ভোটার তালিকায় নাম থাকতে হবে।

তার দেশে ফেরা ঘিরে বিএনপি মহলে তীব্র উত্তেজনা ও প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে। ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে তফসিল ঘোষণার সম্ভাবনা থাকায়, এর shortly পরই তিনি দেশে ফিরতে পারেন বলে দাবি নেতাদের। দলীয় সূত্র জানায়, মধ্য ডিসেম্বরেই তাঁর ফিরে আসার সম্ভাবনা বেশি, আর তার আগে ওমরাহ পালনেরও পরিকল্পনা রয়েছে। এমনকি চার্টার্ড বিমানে দেশে ফেরার বিষয়টিও আলোচনায় আছে।

দলীয় একাধিক সূত্র জানিয়েছে, তাঁর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি নিজস্ব টিমও প্রস্তুত করা হয়েছে। তাঁর আগমনের দিন রাজধানীতে লাখো নেতাকর্মী ও সমর্থক সমবেত হতে পারে বলে দল মনে করছে। নেতারা বলছেন, এ দিনটি দলীয়ভাবে ‘ঐতিহাসিক’ হয়ে উঠবে এবং নির্বাচনী প্রচারণার অর্ধেক কাজ সেদিনই সম্পন্ন হয়ে যাবে।

তারেক রহমান দেশে ফিরে উঠবেন গুলশান–২ এর ‘ফিরোজা’ ভবনের পাশে অবস্থিত ১৯৬ নম্বর বাড়িতে— যা ১৯৮১ সালে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের শাহাদতের পর তৎকালীন সরকার খালেদা জিয়াকে বরাদ্দ দেয়। এ বাড়ির নামজারি ইতোমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে এবং এটি নতুন করে সাজানো হয়েছে সিসিটিভিসহ আধুনিক নিরাপত্তা ব্যবস্থায়। বিএনপি সূত্র বলছে, চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়েই হবে তাঁর প্রধান অফিস।

দলে শীর্ষ নেতাদের একটি অংশ জানায়, তার আগমন ঘিরে সময়সূচি এখনো উচ্চপর্যায়ে গোপন রাখা হচ্ছে। অনেক সিনিয়র নেতাও নির্দিষ্ট তারিখ জানান না। আগমনের কয়েক দিন আগে বিষয়টি প্রকাশ করা হবে। তাঁকে অভ্যর্থনা জানাতে রাজধানীতে বিশাল জনসমাবেশ হবে বলে দাবি করছেন তারা।

২০০৭ সালের ৭ মার্চ জরুরি অবস্থার সময় গ্রেপ্তার হন তারেক রহমান। কারাবন্দীকালে নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে। ২০০৮ সালের সেপ্টেম্বরে জামিনের পর ১১ সেপ্টেম্বর চিকিৎসার জন্য পরিবারের সঙ্গে লন্ডনে যান এবং এরপর থেকেই সেখান থেকেই বিএনপির কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।

এএসএম/

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত