ঢাকা, সোমবার, ৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

১৩ সেনা কর্মকর্তাকে সশরীরে হাজিরের নির্দেশ

২০২৫ নভেম্বর ২৪ ১৪:০৩:১৪

১৩ সেনা কর্মকর্তাকে সশরীরে হাজিরের নির্দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক :জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে গুম–নির্যাতনের অভিযোগে মানবতাবিরোধী অপরাধের দুটি মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সেনাবাহিনীর ১৩ কর্মকর্তাসহ মোট ২৮ আসামির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের শুনানির নতুন দিন ধার্য করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল–১। বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন ট্রাইব্যুনাল রোববার শুনানির জন্য আগামী ৩ এবং ৭ ডিসেম্বর তারিখ নির্ধারণ করেন।

গ্রেফতার ১৩ সেনা কর্মকর্তার ভার্চুয়াল হাজিরার আবেদনও নাকচ করেছে ট্রাইব্যুনাল। পলাতক শেখ হাসিনার পক্ষে জেড আই খান পান্নাকে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। একইভাবে পলাতক সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ অন্য আসামিদের পক্ষেও রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী নিয়োগ করা হয়েছে।

এর আগে ১৭ নভেম্বর জুলাই গণঅভ্যুত্থানে হত্যাকাণ্ডের মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।

রোববার চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম শুনানিতে অংশ নেন। সকাল ১০টার দিকে ঢাকা সেনানিবাসে স্থাপিত সাময়িক কারাগার থেকে প্রিজন ভ্যানে করে গ্রেফতার ১৩ সেনা কর্মকর্তাকে ট্রাইব্যুনালে আনা হয়। র‍্যাবের টাস্কফোর্স ইন্টারোগেশন সেলে (টিএফআই) গুমের অভিযোগে করা মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানির দিন নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ ডিসেম্বর। আর ডিজিএফআইয়ের জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেলে (জেআইসি) গুম–নির্যাতনের অভিযোগে করা অপর মামলার শুনানি হবে ৭ ডিসেম্বর।

ভার্চুয়াল হাজিরার আবেদনে ট্রাইব্যুনাল স্পষ্ট করে জানায়—আইন সবার জন্য সমান, তাই গ্রেফতার সেনা কর্মকর্তাদের আদালতে উপস্থিত থাকতেই হবে। পলাতকদের আত্মসমর্পণের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রসেসও চলছে। ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বলেন, ‘সাবেক প্রধান বিচারপতি ও মন্ত্রীরা যখন হাজির হতে পারেন, সেনা কর্মকর্তারা কেন পারবেন না?’

গ্রেফতার এসব কর্মকর্তা হলেন—র‍্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. কামরুল হাসান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহবুব আলম, ব্রিগেডিয়ার কে এম আজাদ, কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন, কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান, লে. কর্নেল মো. মশিউর রহমান, লে. কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন, লে. কর্নেল মো. সারওয়ার বিন কাশেম, সাবেক পরিচালক মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেন, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান সিদ্দিকী এবং ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভীর মাজাহার সিদ্দিকী।

এ ছাড়া শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান কামাল, তারিক আহমেদ সিদ্দিকসহ আরও সাত আসামি এখনো পলাতক।

ট্রাইব্যুনাল সোশ্যাল মিডিয়া ও গণমাধ্যমে প্রকাশিত আপত্তিকর কনটেন্ট অপসারণেরও নির্দেশ দেন।

রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী জেড আই খান পান্না ট্রাইব্যুনাল চত্বরে সাংবাদিকদের বলেন, তাঁর মনে হয়েছে শেখ হাসিনার ‘সঠিকভাবে’ প্রতিরক্ষা পাওয়ার প্রয়োজন আছে। তিনি ব্যক্তিগতভাবে আইনজীবী হতে আবেদন করলে জানানো হয়, পলাতক থাকায় সরাসরি তিনি তা করতে পারবেন না। পরে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী হিসেবে দায়িত্ব নিতে তাঁর কোনো আপত্তি নেই বলে জানান।

ডুয়া/নয়ন

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত