ঢাকা, সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

অতিরিক্ত দামে ডাচবাংলা ব্যাংকের ভবন ক্রয় প্রস্তাব বাতিল

২০২৫ নভেম্বর ১৭ ১৫:৩১:০৯

অতিরিক্ত দামে ডাচবাংলা ব্যাংকের ভবন ক্রয় প্রস্তাব বাতিল

নিজস্ব প্রতিবেদক: শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ডাচ-বাংলা ব্যাংক লিমিটেড-এর ১ হাজার কোটি টাকারও বেশি মূল্যে মতিঝিলের একটি ভবন প্রধান কার্যালয় হিসেবে কেনার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে, ভবনটির দাম উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়িয়ে দেখানো হয়েছিল এবং এতে ব্যাংক চেয়ারম্যানের পরিবারের স্বার্থের সংঘাতের বিষয় জড়িত ছিল।

ব্যাংকটির এই প্রস্তাব বাতিল হওয়া সত্ত্বেও, শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংকটি ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বাধ্যতামূলক তথ্য প্রকাশ করেনি। শেয়ারবাজারে মূল্য-সংবেদনশীল প্রতিটি সিদ্ধান্তই শেয়ারহোল্ডারদের জানাতে হয়। এই অনিয়ম প্রসঙ্গে ডিএসই ব্রোকারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি সাইফুল ইসলাম বলেন, "কেন্দ্রীয় ব্যাংক যখন এটি বাতিল করে দিয়েছে, তখনই ব্যাংকটির উচিত ছিল পাল্টা ঘোষণা দেওয়া। তা না হলে সাধারণ শেয়ারহোল্ডাররা কীভাবে জানবেন যে ক্রয়টি বাতিল হয়েছে?"।

তবে ডাচ-বাংলা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল কাশেম মো. শিরিন গণমাধ্যমকে জানান, কেন্দ্রীয় ব্যাংক আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের আবেদন প্রত্যাখ্যানের বিষয়ে এখনো কোনো কিছু জানায়নি। তাই তারা কোনো তথ্য প্রকাশ করেননি। যদিও তিনি ভবনটির উচ্চ মূল্য নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।

ভবনটির মালিকানা নিয়েই মূলত স্বার্থের সংঘাতের বিষয়টি সামনে এসেছে। ভবনটির মালিক হলেন ব্যাংকের বর্তমান চেয়ারপারসন সাদিয়া রায়েন আহমেদের মা আমিনা আহমেদ। উল্লেখ্য, সাদিয়া রায়েন আহমেদের বাবা মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিন আহমেদও এই ব্যাংকের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন যে, তারা দামটি "অতিরিক্ত বেশি" মনে করে ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদনের বিষয়ে বিরূপ পরামর্শ দিয়েছিলেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান জানান, পর্যালোচনা করে দেখা গেছে যে প্রস্তাবিত মূল্য বাজার মূল্যের চেয়ে অনেক বেশি।

ডাচ-বাংলা ব্যাংক গত ২৭ আগস্ট ডিএসইকে জানিয়েছিল যে, তারা নিয়ন্ত্রক সংস্থার ছাড়পত্র সাপেক্ষে ১,০১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ২১.৫ তলা বিশিষ্ট ভবনটি কেনার নীতিগতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ২ লাখ ৭ হাজার ৩৪০ বর্গফুট মোট এলাকা নিয়ে গঠিত এই ভবনটি বর্তমানে ব্যাংকটির প্রধান কার্যালয় হিসেবে ভাড়া নেওয়া আছে। ব্যাংকটির ২০২৪ সালের বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই লিজ চুক্তির অধীনে প্রতি মাসে প্রায় ২ কোটি টাকা ভাড়া পরিশোধ করা হয়। গত ১৮ সেপ্টেম্বর, ডিএসই ব্যাংকটির কাছে উচ্চ ক্রয় মূল্যের যৌক্তিকতা জানতে চেয়েছিল। জবাবে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল যে তারা সুশাসনের প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ এবং এই অধিগ্রহণ প্রতিষ্ঠান ও বিনিয়োগকারী উভয়ের জন্যই উপকারী হবে বলে তারা বিশ্বাস করে।

এএসএম/

শেয়ারবাজারের বিশ্লেষণ ও ইনসাইড স্টোরি পেতে আমাদের পেজ ফলো করুন।

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত