ঢাকা, রবিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৫, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

সেনাবাহিনীর সহযোগিতা চেয়ে সেনাসদরে সুপ্রিম কোর্টের চিঠি

২০২৫ নভেম্বর ১৬ ১৯:২৭:০৫

সেনাবাহিনীর সহযোগিতা চেয়ে সেনাসদরে সুপ্রিম কোর্টের চিঠি

নিজস্ব প্রতিবেদক: মানবতাবিরোধী অপরাধের ঐতিহাসিক মামলার রায় ঘোষণাকে সামনে রেখে ট্রাইব্যুনালের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিতে উদ্যোগ নিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে বহুল আলোচিত মামলার রায়কে ঘিরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আরও শক্তিশালী করতে রোববার সন্ধ্যায় সেনাবাহিনীর সহযোগিতা চেয়ে সেনাসদরে আনুষ্ঠানিক চিঠি পাঠানো হয়েছে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন।

আগামী সোমবার (১৭ নভেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এ মামলার রায় ঘোষণা করবে। শুধু বাংলাদেশ নয়, আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও রায়টি নিয়ে ব্যাপক আগ্রহ তৈরি হয়েছে। তাই বিচার প্রক্রিয়া সরাসরি সম্প্রচার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যাতে বিশ্ববাসী একই সঙ্গে রায় প্রত্যক্ষ করতে পারে। রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে বড় পর্দা স্থাপন করা হবে বলেও জানা গেছে।

সূত্র জানিয়েছে, শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে আনা মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগের রায় শোনার জন্য সারাদেশের মানুষের দৃষ্টি এখন ট্রাইব্যুনালের দিকে। বিশ্বেও আলোচনায় রয়েছে এই বিচার। আগামীর জন্য একটি মাইলফলক হিসেবে রায়টি স্মরণীয় হয়ে থাকবে এমনটাই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

১৭ নভেম্বর রায় ঘোষণার দিন ঠিক করেন ট্রাইব্যুনাল-১। গত ১৩ নভেম্বর দুপুরে চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের প্যানেল এ তারিখ নির্ধারণ করেন। প্যানেলের অন্য দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারপতি মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

মামলায় প্রসিকিউশনের পক্ষে ছিলেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলামসহ মিজানুল ইসলাম, গাজী এমএইচ তামিম, ফারুক আহাম্মদ প্রমুখ। গত ২৩ অক্টোবর সমাপনী বক্তব্যে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মামলার উদাহরণ তুলে ধরে সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি করেন শেখ হাসিনা ও কামালের বিরুদ্ধে। পরে স্টেট ডিফেন্স ও প্রসিকিউশনের পাল্টা যুক্তি উপস্থাপনের মাধ্যমে যুক্তিতর্ক শেষ হয়।

অভিযুক্ত চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন রাজসাক্ষী হিসেবে আদালতে জবানবন্দি দেওয়ায় তার বিষয়ে সিদ্ধান্ত ট্রাইব্যুনালের ওপর ছেড়ে দিয়েছে প্রসিকিউশন। মামুনের পক্ষ থেকেও খালাসের আবেদন জানানো হয়েছে। রায় ঘোষণার দিনই জানা যাবে তার পরিণতি।

মামলার ৮৪ সাক্ষীর মধ্যে ৫৪ জন আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন। চলতি বছরের ৩ আগস্ট সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়ে শেষ হয় ৮ অক্টোবর। আনুষ্ঠানিক অভিযোগের পৃষ্ঠাসংখ্যা ৮ হাজার ৭৪৭। এর মধ্যে দুই হাজার ১৮ পৃষ্ঠায় তথ্যসূত্র, চার হাজার পাঁচ পৃষ্ঠায় জব্দতালিকা ও দালিলিক প্রমাণ এবং দুই হাজার ৭২৪ পৃষ্ঠায় শহীদদের তালিকার বিবরণ যুক্ত ছিল। ১২ মে তদন্ত প্রতিবেদন চিফ প্রসিকিউটরের কাছে জমা দেয় তদন্ত সংস্থা।

এই মামলার পাঁচটি অভিযোগে রয়েছে উসকানি, মারণাস্ত্র ব্যবহার, আবু সাঈদ হত্যা, চানখারপুল হত্যাকাণ্ড এবং আশুলিয়ায় লাশ পোড়ানো। বিচারিক কার্যক্রমের সব ধাপ শেষ হওয়ায় এখন জাতি অপেক্ষায় আছে জুলাই গণহত্যার প্রথম রায় শোনার ঐতিহাসিক মুহূর্তটির।

ইএইচপি

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত