নির্বাচিত সরকার না থাকায় বিনিয়োগ থমকে গেছে: আমীর খসরু

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতির তীব্র সমালোচনা করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ব্যবসা-বাণিজ্যের অবস্থা এখন ভয়াবহ। বিনিয়োগকারীরা আস্থা হারিয়েছেন, কারণ দেশে কোনো নির্বাচিত সরকার নেই।

শনিবার (১ নভেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রাজশাহী জেলা পরিষদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনীতি বিষয়ক এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সভার আয়োজন করে রাজশাহী বিভাগীয় ব্যবসায়ী ফোরাম।

আমীর খসরু বলেন, শুধু রাজনৈতিক গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করলেই চলবে না অর্থনীতিতেও গণতন্ত্রায়ন দরকার। অতীতের অর্থনৈতিক কাঠামো সাধারণ মানুষের নয়, বরং একটি বিশেষ গোষ্ঠীর স্বার্থ রক্ষা করেছে। ব্যবসায়ীরা ব্যবসার পরিবর্তে লুটপাটে ব্যস্ত ছিলেন।

তিনি ঘোষণা দেন, বিএনপি ক্ষমতায় গেলে ‘সবার জন্য অর্থনীতি’ নামের একটি নতুন কাঠামো প্রবর্তন করা হবে, যেখানে উন্নয়নের সুফল পৌঁছাবে সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায়।

বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সমস্যা বেকারত্ব। আমরা সরকারে গেলে ১৮ মাসের মধ্যে ১ কোটি বেকারকে কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দেওয়া হবে। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের (এসএমই) মাধ্যমে ব্যাপক কর্মসংস্থান তৈরি করা হবে।

তিনি আরও বলেন, “জনগণের মতামত জনগণকেই দিতে হবে। যারা জনগণের দাবিদাওয়া পূরণ করতে চায়, তাদের জনগণের কাছে যেতে হবে। কারো মত জনগণের ওপর চাপিয়ে দেওয়া যায় না।”

আমীর খসরু অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ সরকার জনগণের ওপর জুলুম করে নিজেদের রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে চেয়েছিল। কিন্তু জনগণ তার জবাব দিয়েছে, বলেন তিনি।

তিনি প্রতিশ্রুতি দেন, বিএনপি সরকারে এলে মেগা প্রকল্পের নামে অকারণ ব্যয়ের সংস্কৃতি বন্ধ করা হবে। বরং ঘরে ঘরে ছোট শিল্প ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা হবে।

বিএনপির এই স্থায়ী কমিটির সদস্য আরও বলেন, কিছু মহল ঐকমত্যের নামে জনগণের ওপর তাদের মত চাপিয়ে দিতে চায়। এ কাজের দায়িত্ব তাদের কেউ দেয়নি। তারা মূলত নির্বাচন বিলম্বিত করার ষড়যন্ত্র করছে।

সভায় সভাপতিত্ব করেন এফবিসিসিআইর সাবেক পরিচালক ও রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সাবেক সভাপতি মো. লুৎফর রহমান, আর সঞ্চালনায় ছিলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি আব্দুল ওয়াহেদ।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিনু।

এছাড়া বক্তব্য দেন রাজশাহী চেম্বারের সিনিয়র সহসভাপতি সুলতান মাহমুদ সুমন, নাটোর চেম্বারের সভাপতি আব্দুল মান্নান, নওগাঁ চেম্বারের সাবেক সভাপতি আলহাজ জাহাঙ্গীর হোসেন, জয়পুরহাট চেম্বারের সাবেক সভাপতি আমিনুল বারি, হিলি বন্দর আমদানি-রপ্তানি গ্রুপের সভাপতি ফেরদৌস হক, এবং সোনামসজিদ স্থলবন্দর গ্রুপের সভাপতি আলহাজ একরামুল হক।

বক্তারা শিল্পে নতুন বিনিয়োগ, কুঠির শিল্পে স্বনির্ভরতা ও নিজস্ব ব্র্যান্ডিংয়ের সুযোগ তৈরির প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব দেন। তারা বলেন, বিএনপি সরকারে এলে রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা ও আমলাতান্ত্রিক নিয়ন্ত্রণ কমিয়ে ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ তৈরি করা হবে।