ঢাকা, শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৫, ১৬ কার্তিক ১৪৩২

জোটের খেলায় এনসিপি কার পাশে?

২০২৫ অক্টোবর ৩১ ১৫:১৫:৪২

জোটের খেলায় এনসিপি কার পাশে?

নিজস্ব প্রতিবেদক :ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে জোট ও আসন সমঝোতার রাজনীতি জোরদার হয়েছে। প্রতি নির্বাচনের আগে রাজনীতিতে এই ভাঙা-গড়ার খেলা সাধারণ, তবে এবার তা নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর উপস্থিতির কারণে আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল বিএনপি চাইছে নির্বাচনি মোর্চায় এনসিপিকে পাশে পেতে। অন্যদিকে, ধর্মভিত্তিক বড় দল জামায়াতে ইসলামীও এনসিপিকে নিজেদের সঙ্গে রাখতে চাইছে। এই পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক দরকষাকষিতে সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে এনসিপি।

২০১৬ সালের ৫ আগস্টের পর রাজনীতিতে নতুন মেরুকরণ দেখা গেছে। বিএনপি ও জামায়াত ইসলামীর দীর্ঘদিনের জোট দূরত্ব তৈরি হয়, জামায়াত বিএনপির সঙ্গে জোট ছিন্ন করার ঘোষণা দেয়। এর পর তারা রাষ্ট্রক্ষমতায় যাওয়ার বা অন্তত বিরোধী দলের আসনে থাকার পরিকল্পনা শুরু করে। নির্বাচনী ইস্যু যেমন—আনুপাতিক সংখ্যাগরিষ্ঠতা, জুলাই সনদ বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া, গণভোট—বিষয়েও তাদের বিএনপির সঙ্গে দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছে। পরবর্তীতে জামায়াত এনসিপির সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করেছে, যা তাদের নেতাদের বক্তব্যেও স্পষ্ট ফুটে ওঠে।

এই দূরত্বকে কাজে লাগাতে চাইছে বিএনপি। দলটি তরুণদের সঙ্গে নিয়ে নির্বাচনের আগ্রহ প্রকাশ করেছে এবং দুই দলের নেতাদের মধ্যে পর্দার আড়ালে যোগাযোগ চলছে। বিএনপি চাইছে এনসিপিকে তাদের নির্বাচনি জোটে টেনে আনতে, যেখানে ঢাকার কয়েকটি আসনসহ অন্তত ২০টির সমঝোতার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বিএনপি সরকার গঠন করলে মন্ত্রিসভায় এনসিপির প্রতিনিধি রাখার কথাও বলা হচ্ছে।

এনসিপি নিজেদের অবস্থান সম্পর্কে জানায়, আসন্ন সংসদ নির্বাচনে অন্য কোনো দলের সঙ্গে জোট না হয়ে স্বতন্ত্র অবস্থানে থাকার বিষয়ে বেশির ভাগ নেতাকর্মীর মতামত রয়েছে। তবে অভিন্ন এজেন্ডা, ঐক্য এবং রাজনৈতিক বোঝাপড়ার ভিত্তিতে প্রার্থী মনোনয়ন হতে পারে।

জামায়াতে ইসলামীও এনসিপিকে নিজেদের জোটে টানার চেষ্টা চালাচ্ছে। দলের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের এনসিপি নেতাদের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক আলোচনা করছেন। তবে এনসিপি ইতোমধ্যে স্বতন্ত্র অবস্থান ঘোষণা করেছে। জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, “আমরা কখনোই এনসিপিকে নিয়ে জোট করব, এ কথা বলিনি। তবে যোগাযোগ আছে।”

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, জোট, মহাজোট, আসন ভাগাভাগি ও প্রার্থী মনোনয়নের বিষয়ে সংশয় রয়ে গেছে। উপদেষ্টাদের কিছু আচরণও প্রশ্নবিদ্ধ। এনসিপির একজন যুগ্ম-আহ্বায়ক জানান, তারা নিশ্চিত করতে চায় এনসিপি জামায়াতের জোটে না যায়।

শেষে, বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, এনসিপি আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে স্বতন্ত্রভাবে অংশ নেবে। তবে জোট না হলেও নির্বাচনি কৌশল হিসেবে অভিন্ন এজেন্ডা ও রাজনৈতিক বোঝাপড়ার ভিত্তিতে প্রার্থী মনোনয়ন হতে পারে। এনসিপি কোন দলকে নির্বাচনে রাজনৈতিক মিত্র হিসেবে বেছে নেবে, তা নির্ধারণের জন্য কিছু সময় অপেক্ষা করতে হবে।

ডুয়া/নয়ন

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত